ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪০:৪৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল

পাঁচ মাসে ৯ তারকাকে হারানোর শোক

বিনোদন প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫২ এএম, ১১ মে ২০১৯ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের বিনোদন জগতে যেন মৃত্যুর মিছিল লেগেছে। একে একে ঝরে যাচ্ছেন তারকারা। দেশের অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখগুলো জীবনের পথচলা সাঙ্গ করে পাড়ি দিয়েছেন অসীমের পথে। গত নয় মাসে দেশের সংগীত, নাটক ও চলচ্চিত্রের নয়জন তারকা চলে গেছেন না-ফেরার দেশে।

গীতিকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

দীর্ঘ দিন ধরে হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলেন কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। হৃৎপিণ্ডে ব্লক ধরা পড়ায় গত বছর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে তার অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু সেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েই চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি আফতাবনগরে নিজ বাসায় মারা যান এই মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী।

একুশে পদক ও দুটি জাতীয় চলচ্চিত্রপ্রাপ্ত এ সংগীত বিশারদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় চলতি বছরে তারকাদের মৃত্যুর মিছিল।

পরিচালক নির্মাতা সাইফুল আজম কাশেম

এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব পৃথিবী ছেড়ে যান গত ১১ মার্চ। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ১ মার্চ সাইফুল আজমকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তার অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু মৃত্যুর কাছে পরাজিত হতে হয়। অস্ত্রোপচারের ১০ দিন পর অ্যাপোলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ক্যারিয়ারে ‘হালচাল’, ‘স্বামীর আদেশ’, ‘ভরসা’, ‘ত্যাজ্যপুত্র’সহ বেশ কিছু ভালো মানের ছবি তিনি নির্মাণ করে গেছেন।

কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ

সাইফুল আজমের মৃত্যুর ঠিক ১২ দিন পর চলে যান খ্যাতিমান গায়িকা শাহনাজ রহমতুল্লাহ। গত ২৩ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বারিধারার বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ক্যারিয়ারে বহু জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক ও সিনেমার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। বিবিসির করা একটি জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের মধ্যে তার গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। তার ঝুলিতে আছে একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, শিল্পকলা একডেমি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ আরও অনেক সম্মাননা।

গীতিকার আহমেদ কায়সার

‘ও পাগল মন মন রে, মন কেন এত কথা বলে’- বিখ্যাত এই গানটি শোনেননি এমন গানপ্রেমী মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। আশরাফ উদাসের সুরে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন দিলরুবা খান। তুমুল জনপ্রিয় সে গানের রচয়িতা না-ফেরার দেশে চলে যান গত ১ এপ্রিল। এদিন পটুয়াখালীর চরখালী গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। আহমেদ কায়সার দীর্ঘ দিন হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।

রম্য অভিনেতা টেলি সামাদ

এপ্রিল মাসে মোট পাঁচজন বিনোদন তারকার মৃত্যু হয়েছে। কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ তাদের একজন। গত ৬ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অভিনেতার খাদ্যনালীতে সমস্যার পাশাপাশি বুকে ইনফেকশন ছিল। এ জন্য ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সার্জারিই ফেরাতে পারেনি চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদকে।

নির্মাতা হাছিবুল ইসলাম মিজান

‘আমার স্বপ্ন তুমি’ খ্যাত এই পরিচালক মারা যান ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। এদিন সন্ধ্যায় তিনি অচেতন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিলেন। পরে চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাছিবুল ইসলাম মিজানের মৃত্যু হয়েছে। তার কোনো অসুখবিসুখ ছিল না বলে তার মেয়ে শর্মিলা ইসলাম সুমি জানান। পরিচালনা জীবনে ‘আমার স্বপ্ন তুমি’, ‘কপাল’, ‘জন্ম’ ও ‘হৃদয়ে আছো তুমি’ ছবিগুলো বানিয়ে খ্যাতি কুড়িয়েছেন এই নির্মাতা।

অভিনেতা সালেহ আহমেদ

নাট্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সালেহ আহমেদ মারা যান ২৪ এপ্রিল। এদিন বেলা আড়াইটায় তিনি রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস নেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ২০১১ সালে স্ট্রোক করার পর থেকেই তার শরীর ভালো যাচ্ছিল না। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। অবশেষে ২৪ এপ্রিল চলে যান না-ফেরার দেশে। অভিনয়ে অসামান্য অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পদক পান সালেহ আহমেদ।

কৌতুক অভিনেতা আনিস

১৯৬০ সালে অভিনয়ে আসা কমেডি তারকা আনিস মারা যান ২৮ এপ্রিল। বার্ধক্যজনিত কারণে রাজধানীর টিকাটুলির বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। ক্যারিয়ারে আড়াইশর মতো ছবিতে তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে খ্যাতির সঙ্গে অভিনয় করেছেন। কিছু ছবিতে আবার আনিসকে খল চরিত্রেও দেখা গেছে।

গায়ক সুবীর নন্দী

আধুনিক বাংলা গানের অন্যতম পুরোধা সুবীর নন্দী মারা যান ৭ মে। বহুদিন ধরে তিনি দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছিলেন। এ জন্য নিয়মিত ডায়ালাইসিস নিচ্ছিলেন। গত ১৪ এপ্রিল সিলেট থেকে ট্রেনযোগে ঢাকায় ফেরার পথে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে শিল্পীর হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

১৬ দিন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩০ এপ্রিল উন্নত চিকিৎসার জন্য সুবীর নন্দীকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত শনি ও রবিবার দুই দফায় তার হার্ট অ্যাটাক হয়। তার এক দিন বাদে ৭ মে ভোরে না ফেরার দেশে চলে যান সুবীর নন্দী। সংগীতে বিশেষ অবদান রাখায় একুশে পদক ও দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন কিংবদন্তি এই গায়ক।

-জেডসি