ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ০:২১:৪২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা নান্দাইলে নারী শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় সুচি কৃষকরাই অর্থনীতির মূল শক্তি: স্পিকার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলা কাঠঠোকরা বাংলাদেশের পাখি

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শনিবার

বাংলা কাঠঠোকরা বাংলাদেশের পাখি।  ছবি: সোমা দেব।

বাংলা কাঠঠোকরা বাংলাদেশের পাখি। ছবি: সোমা দেব।

বাংলা কাঠঠোকরা, আমাদের দেশের শহুরে এলাকায় বসবাস করে এমন অল্পসংখ্যক কাঠঠোকরার মধ্যে এই পাখিটি অন্যতম। পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। বংলাদেশে প্রায় ৩০ প্রজাতির কাঠঠোকরা দেখা যায়।

সুদর্শন এই পাখিটির বাংলা নাম হিমালয়ী কাঠঠোকরা। কেউ কেউ বলে বাংলা কাঠঠোকরা। ইংরেজি নাম হিমালয়ান গোল্ডেনব্যাক (Himalayan Goldenback), বৈজ্ঞানিক নাম Dinopium benghalense | Picidae (পিসিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Dinopium (ডাইনোপিয়াম) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির অতি পরিচিত পাখি।

সারা পৃথিবীতে এক সীমিত এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত। প্রায় ৩০ লাখ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এদের আবাস। ওরা কখনো কখনো দলে দলে এবং কখনো একাকী বিচরণ করতে পছন্দ করে।

বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

তীক্ষ করকরে ডাক আর ঢেউয়ের মত উড্ডয়ন প্রক্রিয়া বাংলা কাঠঠোকরার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ডাইনোপিয়াম গণের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র এরই গলা ও কোমর কালো।

বাংলা কাঠঠোকরা দৈর্ঘ্যে বেশ বড়সড়; প্রায় ২৬–২৯ সেমি। ওজন ১০০ গ্রাম, ডানা ১৪.২ সেমি, ঠোঁট ৩.৭ সেমি, পা ২.৫ সেমি ও লেজ ৯ সেমি।

এরা আকৃতিতে অন্যসব সাধারণ কাঠঠোকরার মতোই, কেবল ডানা-ঢাকনি উজ্জ্বল হলদে-সোনালি। কোমর বড় কাঠঠোকরার মতো লাল নয়, কালো। দেহতল সাদা ও তাতে কালো আঁশের মত দাগ থাকে। গলা ও থুতনি কালো এবং তাতে অস্পষ্ট সাদা ডোরা দেখা যায়। যা দেখে একই অঞ্চলের পাতি কাঠঠোকরা থেকে এদের আলাদা করা যায়। ঘাড় সাদা ও পাশে কালো দাগ থাকে। বড় কাঠঠোকরার মতো এর মুখে গোঁফের মতো লম্বা দাগ থাকে না। তবে বুকে আঁশের মতো দাগ মোটা ও কালো। চোখে কালো ডোরা থাকে। ডানার গোড়া ও মধ্য পালক-ঢাকনিতে দুই সারি সাদা বা ফিকে ফুটকি স্পষ্ট। পিঠ ও ডানার শেষাংশ সোনালি। চোখ লালচে বাদামি ও চোখের চারদিকের রিং সবুজ। পা ও পায়ের পাতা ধূসরাভ সবুজ। ঠোঁটের রঙ শিং-রঙা ও কালোর মিশ্রণ।

পুরুষ ও স্ত্রী পাখির চেহারার পার্থক্য তাদের চাঁদি ও ঝুঁটির রঙে। পুরুষ কাঠঠোকরার চাঁদি ও ঝুঁটি টকটকে লাল। স্ত্রী কাঠঠোকরার ঝুঁটি লাল কিন্তু চাঁদি কালো ও সাদা ফুটকিযুক্ত। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ অনুজ্জ্বল, বাকি সব স্ত্রী পাখির মতো। তবে স্ত্রী পাখির মতো চাঁদির কালো অংশ থাকে না।

অন্যান্য কাঠঠোকরার মতো বাংলা কাঠঠোকরার ঠোঁট মজবুত ও চোখা। লেজও খাটো, দৃঢ় ও গাছের ডালে ঠেস দিয়ে রাখার উপযোগী। পা জাইগোডেক্টাইল, অর্থাৎ দু'টি আঙ্গুল সম্মুখমুখী ও দু'টি পশ্চাৎমুখী। এদের জিভ লম্বা ও গর্ত থেকে পোকামাকড় টেনে বের করার উপযোগী।

এ পাখির শ্বেতপ্রকরণ রয়েছে বলে রেকর্ড করা হয়েছে। ওয়েস্টার্ন ঘাটসে প্রাপ্ত দু'টি পুরুষ নমুনার থুতনিতে লাল ছোপ দেখা গেছে। লক্ষ্ণৌতে একটি স্ত্রী কাঠঠোকরার নমুনা পাওয়া গেছে যার ঠোঁটের মাথা মোহনচূড়ার মত বাঁকা।

এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে পোকামাকড় এবং পিঁপড়া। প্রজননকাল মার্চ থেকে মে। প্রজনন মৌসুমে ওদের হাঁকডাক বেড়ে যায়। এ সময় ‘কি-কি-কি-কি’ সুরে ডাকে ওরা। গাছের মোটাসোটা ডালে নিজেরা খোড়ল বানিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২ থেকে ৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৭-১৮ দিন। বাচ্চাদের লালন-পালন করে দুজনে মিলে।