ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১১:০৯:১৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের

সজীব সরকারের ‘সাংবাদিকতা সহজ পাঠ’

আসমা জেরিন | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

একুশে বইমেলাকে সামনে রেখে জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছে সাংবাদিকতা বিষয়ে সজীব সরকারের বই ‘সাংবাদিকতা: সহজ পাঠ’। সাংবাদিকতা যারা করবেন বা করছেন এবং সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের জন্য এ বইটি খুবই সহায়ক হবে।
 
সাংবাদিকতা বিষয়ের শিক্ষার্থী, প্রশিক্ষণার্থী, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, সাংবাদিক ও নিছকই এ বিষয়ে আগ্রহী পাঠক-সবার কাজে আসবে-অপরিহার্য এমন অসংখ্য বিষয় বইটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। সংবাদ ও সাংবাদিকতা কী, কেন ও কিভাবে এবং সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকের দায়িত্ব ও নীতিমালার ওপর মূল ফোকাস রেখে লেখা হয়েছে এই বই। 

বইটিতে বিস্তর বিষয়ে আলোচনার মধ্যে রয়েছে : হার্ড নিউজ ও সফট নিউজ; মানবিক আবেদন সমৃদ্ধ সংবাদ; বক্স স্টোরি; প্যাকেজ; ধারবাহিক প্রতিবেদন; বিশেষ প্রতিবেদন; সারফেস রিপোর্টিং ও ডেপথ রিপোর্টিং; ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন; অনুসন্ধানী প্রতিবেদন; সংবাদ লেখার উল্টো পিরামিড কাঠামো, পিরামিড কাঠামো, সময়ানুক্রমিক কাঠামো, ফিচার কাঠামো, নাট গ্রাফ কাঠামো, মর্টিনি গ্লাস কাঠামো ও কাবাব কাঠামো; সংবাদ সম্পাদনা; ফিচার; সম্পাদকীয়; উপ-সম্পাদকীয়; গণমাধ্যমের স্বাধীনতা; মানহানি; সংবাদ ও সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালা ইত্যাদি। 

সজীব সরকারের স্বাতন্ত্র্য এইখানে যে, তিনি নিজেই বই লিখেছেন এবং সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পড়ানোর চেষ্টা করছেন। এর দুটি সুবিধা আছে : একটি দিক হচ্ছে, পাশ্চাত্য দেশগুলোতে সাংবাদিকতার পঠন-পাঠনের যে প্রক্রিয়া, তাঁদের যে চিন্তার আদল  তথা জ্ঞানকাণ্ডের ধারা, তার সাথে আসলে বাংলাদেশের সংবাদ-সাংবাদিকতার ধরণ-ধারণ ঠিক মেলে না। তাদের সেই বইগুলো আসলে তাদের সমাজে যে ধরণের সাংবাদিকতার চর্চাগুলো চলে, তার প্রেক্ষাপটে লেখা। আর আমরা অন্ধভাবে তাদের সেই বইগুলোকেই অনুসরণ করে চলছি; কিন্তু এটিকে আমাদের সমাজের সাথে মেলানো, উপযোগী বা লাগসই করা-সেটি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সাংবাদিকতা সবসময়ই একটি দেশের ইতিহাস-সমাজ-সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের শেকড়ে প্রোথিত। সাংবাদিকতা সবসময়ই নির্দিষ্ট সমাজের রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায় আবর্তিত হয়। এর সহজ মানে হলো, বাংলাদেশে সাংবাদিকতার যে চর্চা হবে, তা হবে লোকজ, দেশীয়; এই দেশের মানুষের মন, মনের চাহিদা, মনের মানচিত্র, সমাজব্যবস্থা, ইতিহাস সবকিছুকে মাথায় রেখেই এখানে সাংবাদিকতা করতে হবে। পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ আর অনুসরণ আমাদের ঠিক কোথাও নিয়ে যাবে না। আমাদের সংবাদ উপাদান, সংবাদ রসায়ন কিংবা সংবাদ কাঠামো সব যে পাশ্চাত্যের মতো হবে এটা ধরে নেওয়ার কোন কারণ নেই।দ্বিতীয় সুবিধা হচ্ছে, শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করবার আগে সজীব একসময় পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন।সাংবাদিকতার প্রায়োগিক চর্চার সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন।ফলে সজীবের পক্ষেই কেবল সম্ভব সাংবাদিকতার তত্ত্ব আর ব্যবহারিক সাংবাদিকতাকে মিলিয়ে এক মলাটে তা উপস্থাপন করা।

বইটিতে আমরা অনেকগুলো বিষয়ের উপর আলোচনা দেখি যেখানে তিনি সংবাদের সংজ্ঞা এবং সংবাদের বিভিন্ন অংশ নিয়ে কথা বলেছেন; হেডলাইন, সাবহেড-এইসব নিয়ে কথা আছে বইটিতে। আবার বর্তমানে যেহেতু নিউজের পাশাপাশি মিথ্যা বা বিকৃত নিউজের ছড়াছড়ি বেশি, সেই কারণে আমরা দেখছি তিনি ‘নিউজ বনাম ফেক নিউজ’ নামে একটি অংশে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছেন এবং সংবাদের যতোগুলো বুনিয়াদি ব্যাপার যা আমাদের শিক্ষার্থীদের জানা অত্যাবশ্যক, যেমন:সংবাদের উপাদান,সংবাদ যোগ্যতা,সংবাদ মূল্য, নিউজ সেন্স বা সংবাদ চেতনা, সংবাদ রসায়ন কিংবা সংবাদের চরিত্র বা বৈশিষ্ট্য-এই সবকিছু নিয়েই তিনি কথা বলেছেন।                                                                                                                                                                  
সাংবাদিকতায় বাকস্বাধীনতার ইস্যুটি খুবই গুরুত্ববহ, তাঁর বইটিতে আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা দেখতে পাই। বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় ঘাটতি বা দুর্বলতা হলো সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা না মানা। ফলে অনেকেই আইনগত ঝামেলায় পড়েন, অনেক সময় ক্ষতি-শাস্তির মুখোমুখিও হতে হয়। সজীব তাঁর বইয়ে এসব নিয়ে কথা বলেছেন।

সজীব সরকার বর্তমানে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক। শিক্ষকতার শুরু ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক হিসেবে।সাংবাদিকতা করেছেন দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক সমকালসহ আরও অনেক গণমাধ্যমে।শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিক প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজ ও জিলা স্কুল থেকে যথাক্রমে এইসএসসি ও এসএসসি।

তাঁর লেখা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে: সংবাদ লেখা ও সম্পাদনা (গতিধারা-২০১২); News Reporting and writing and editing(Gatidhara-2012); শিশু সাংবাদিকতার নীতিমালা (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস,২০১৬) এবং জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও প্রজননস্বাস্থ্য (বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ,২০১৩)।
দেশ ও দেশের বাইরে থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক জার্নালে প্রায় ৩০টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন এবং নিয়মিত লিখছেন।

শ্রাবণ প্রকাশনীতে থেকে প্রকাশিত ‘সাংবাদিকতা: সহজ পাঠ’ বইটির মূল্য ২৭৫ টাকা। ১৭৬ পৃষ্ঠার বইটির আকর্ষনীয় প্রচ্ছদ করেছেন মনিরুল ইসলাম। বাংলা একাডেমীর মেলা প্রাঙ্গণে শ্রাবণ প্রকাশনীর স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। বইমেলাকে সামনে রেখে অফসেটে পেপারে মুদ্রিত বইটি অনলাইনেও কিনতে পারা যাচ্ছে। অনলাইনে বইটি কিনত ক্লিক করুন www.rokomari.com.