ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৯:৩৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইলেন ভিপি নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:২৪ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজের উপর বারবার হামলার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া পটুয়াখালীতে নিজের উপর হামলার ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ডাকসু ভিপি।

নুর অভিযোগ করে বলেছেন, অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তিনি ও তাঁর সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রোষানলের শিকার হচ্ছেন। সরকারের বিরোধিতা করলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন ‘খালেদা জিয়ার মতো পরিণতি’ হতে পারে আওয়ামী লীগ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের এমন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

সম্প্রতি নিজ এলাকায় হামলার শিকার হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতা নুরুল হক নুর।

এ প্রসঙ্গে নুর বলেন, গত ১৪ আগস্ট চরবিশ্বাস থেকে আমার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে পটুয়াখালী-৩ এর সাংসদ এসএম শাহজাদা সাজুর নির্দেশে চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা হয়।

‘শাহিন শাহের ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্যসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, স্টিলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’

সংবাদ সম্মেলনে ডাকুস ভিপি বলেন, হামলায় প্রায় ২০-২৫ জনকে আহত, ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, দুটি ডিসএলআর ক্যামেরা ও ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। হামলায় রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজ ও আমিসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হই।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, আমাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটিস্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

বারবার হামলা প্রসঙ্গে নুর বলেন, এ পর্যন্ত আটবার ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকাল হয়েছি। ভিপি হওয়ার আগে তিনবার (৩০ জুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে, ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও ১১ মার্চ রোকেয়া হলে) হামলার শিকার হয়েছি।

‘আর ভিপি হওয়ার পর পাঁচবার (১২ মার্চ টিএসসি, ২ এপ্রিল এসএম হল, ২৫ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ২৬ মে বগুড়া ও ১৪ আগস্ট উলানিয়া) হামলার শিকার হই।’

তিনি বলেন, প্রতিবার প্রকাশ্যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটলে ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। পুলিশের নীরব ভূমিকা ছিল সন্ত্রাসীদের সহায়ক।

নুর বলেন, সর্বশেষ ১৪ আগস্টের ঘটনার দিন হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় গলাচিপা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও ওসি কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতেও সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ আমার আত্মীয় ও সমর্থকদের গ্রেফতারের হুমকিও দেয়। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নগ্ন হামলা চালালেও ওসি হামলার কথা অস্বীকার করেন।

ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর উদ্দেশে ডাকসু ভিপি বলেন, আমি আমার প্রাণনাশের শঙ্কাবোধ করছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা আমার তথা অন্যায়ের-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন।

‘আমি কোনো অন্যায়-অপরাধ করিনি। শুধু অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণেই আমি ও ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা বারবার ক্ষমতাসীন দলের রোষানলের শিকার হয়েছি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছাড়াও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি।’

অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করে তার মুখ বন্ধ রাখা যায় না উল্লেখ করে নুর বলেন, জাতির পিতাই বলে গেছেন ‘বাঙালি জাতিকে তোমরা দাবায়া রাখতে পারবা না।’

-জেডসি