কুটিরশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সুকান্তর সংগ্রাম
আশিকুর রহমান সরকার (নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর)
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০২:১০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
সুকান্ত দাস পরিবার নিয়ে কাজ করছেন, ছবি: উইমেননিউজ২৪.কম
গ্রামবাংলার ঐতিহ্য কুটিরশিল্প। আবহমান কালের এই ঐতিহ্য টিকে আছে আজও বংশীয় ঐতিহ্যকে বুকে লালন করে। বাংলাদেশের অন্যান এলাকার মত রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় প্রাচীনকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসাবে পরিচিত কুটিরশিল্পী।
শিল্পীর হাতের কারুকাজ আর পাকা-কাঁচা বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রি।
আধুনিক যান্ত্রিক যুগেও এ শিল্প টিকে আছে শিল্পীদের নিরলস পরিশ্রম আর বংশীয় ঐতিহ্যকে বুকে লালন করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেকেই আজও সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে। এমনই একজন সংগ্রামী মানুষ সুকান্ত দাস। কুটিরশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে চান তিনি। তার সঙ্গে কথা হয় উইমেননিউজ২৪.কম-এর।
সুকান্ত দাস জানান, দুই ছেলে তিন মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে তার পরিবার। জীবিকার তাগিদে এক সময় তিনি বেছে নেন এই পেশা। দেখতে দেখতে চলে গেল ৫৪টি বছর। আগের মত এখন আর ব্যবসা হয় না। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না।
তিনি বলেন, অভাবের কারণে একসময় প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয় আমার ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া। তাই উপার্জন বাড়াতে ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে যুক্ত করেছি এ কাজে। সকলে মিলে আমরা বাঁশ দিয়ে নানা পণ্য তৈরি করি আমরা।
ঘুটনি, হাতপাখা, ঘোরপা, কৃষকের ঝাপি,খলাই, ঠুসি,কুলা, ডালি, ডুলি, ঝাড়–, শিঁকে, পিটুয়া, ধারাই, সেমতি, কবুতরের খোপ, হাঁস মুরগীর খোয়ারা, জেলেদের মাছ ধরার টেপাই, ডারকি, চ্যাচলা, শিতল পাটি প্রভৃতি তৈরি করেন তারা। এগুলো বিক্রি করেন স্থানীয় খালাশপির হাঁটসহ আশেপাশের হাঁটে।
সুকান্ত দাস বলেন, প্রতি হাঁটে আগে ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হত। কিন্তু বর্তমানে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বিক্রি করতেই খুব কষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, পাইকারি বিক্রি হয় ঘোড়াঘাট, ধাপের হাঁট, পীরগঞ্জসহ বিভিন্ন হাঁটে।
এসব হাঁটের ব্যবসায়িরা জানান, পাইকারদের চাহিদা পূরণের জন্য নিজেদের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি গাইবান্ধার মহাজনদের তৈরি পণ্য কেনেন তারা। সে কারণে স্থানীয়রা খুব লাভবান হতে পারছে না।
এদিকে সুকান্ত বাবুর দাবি, এখন মাস শেষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা রোজগার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই রোজগারে সংসারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।