ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৪৭:৩৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নারী প্রকৌশলীকে মারলেন যুবলীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরে (বিআইডব্লিউটিএ) এক প্রকৌশলীর কক্ষে আরেক নারী প্রকৌশলীকে মারধর করে আহত করেছেন স্থানীয় যুবলীগ নেতারা। তিনি যান্ত্রিক ও নৌ-প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নাম জরিনা খানম।

এ কাজে জড়িত থাকার দায়ে যান্ত্রিক ও নৌ-প্রকৌশল বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন) মো. নেছার উদ্দীন খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে মামলা করা হয়েছে মতিঝিল থানায়।

গতকাল বিকালে অনভিপ্রেত এ ঘটনা ঘটে। এর জেরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পরই বিআইডব্লিউটিএর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন জরুরি বৈঠক ডেকে এ ঘটনায় দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিআইডব্লিউটিএর সচিব ওয়াকিল নেওয়াজ বলেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে মারধর করেছেন ঠিকাদাররা। এ ঘটনায় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা জানান, যান্ত্রিক ও নৌ-প্রকৌশল বিভাগের টেন্ডার কার্যক্রমের বিষয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন) মো. নেছার উদ্দীন খানের সঙ্গে তার রুমে বসে আলোচনা করছিলেন জরিনা খানম।

আলোচনার একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মতদ্বৈততা দেখা দিলে হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন নেছার উদ্দীন খান। তিনি জরিনা খানমকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। এর পর জরিনা খানম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে গেলে জরিনাকে কিল-ঘুষি মারতে মারতে মেঝেতে ফেলে দেন সেখানে উপস্থিত ঠিকাদার রাকিব। এর পরও আরও কিছু কিলঘুষি মেরে বেরিয়ে যান রাকিব। তিনি আর আর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।

একটি সূত্র জানিয়েছে, রাকিব ও রায়হান দুজন স্থানীয় যুবলীগ কর্মী পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিআইডব্লিউটিএর টেন্ডারবাজি করে আসছে। তারা টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও কাজ না করেই বিল তোলার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ওই ঘটনার সময় ঢাকা দক্ষিণের ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মারুফ রেজা সাগরও সেখানে উপস্থিত ছিল। এরা সবাই স্থানীয় কাউন্সিলর ক্যাসিনো মুমিনুল হক সাঈদের অনুসারি হিসেবে পরিচিত। এর আগেও তাদের হাতে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা জানান, ওই ঘটনায় সিসি ক্যামেরার দুটি ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। একটিতে রুমের বাইরের ফুটেজ রয়েছে। আরেকটিতে রুমের ভেতরের ফুটেজ রয়েছে। দুটি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাগর, রাকিব, রায়হান, মনিরসহ স্থানীয় যুবলীগের কয়েকজন নেতা এ ভবনে টেন্ডারবাজি করে আসছে। তাদের সঙ্গে নৌপ্রকৌশল, সিভিল ও ড্রেজিং বিভাগের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সখ্যতা রয়েছে। তারা মিলেমিশে এসব টেন্ডারবাজি করে আসছে। কোনো কর্মকর্তা বাধা হলেই তাদেরও হুমকি-ধমকি ও হেনস্তা করত যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এমনকি এসব যুবলীগ নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেলেও কয়েক প্রকৌশলীকে চড়তে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর কয়েক কর্মকর্তা।