ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ২০:১১:৪১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ধানমন্ডিতে দুই নারী খুন : গৃহকর্মী সুরভীসহ ৫ জন রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

রাজধানীর ধানমন্ডিতে দুই নারী খুনের মামলায় গৃহকর্মী সুরভী আক্তারসহ পাঁচ সন্দেহজনক আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল আলম আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড দেওয়া অপর আসামিরা হলেন- ঘটনাস্থলে বাড়ির কেয়ারটেকার গাউসুল আযম প্রিন্স, বেলায়েত হোসেন, নুরুজ্জামান ও মো. বাচ্চু।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ১ নভেম্বর ধানমন্ডির ২৮ নম্বর সড়কের বাসায় পুরনো কাজের লোক আতিকুল হক বাচ্চু একজন নতুন কাজের মেয়েকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার সময় আফরোজা বেগমের মেয়ের ফ্ল্যাটে আসেন। এরপর তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আফরোজা বেগম এবং তার মেয়ে রুবি পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন।

বিকেল সাড়ে চার থেকে ৫ টার মধ্যে দিলরুবা ওই কাজের মেয়েকে তার মায়ের ফ্ল্যাটে কাজের জন্য পাঠান। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দিলরুবা তার মাকে ফোন দিলে তার মা ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য দিলরুবা তার বাসার কাজের ছেলে রিয়াজকে মায়ের ফ্ল্যাটে পাঠান। রিয়াজ সেখানে গিয়ে কলিং বেল দেয় এবং ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিলে তা খোলা পায়।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, রিয়াজ আফরোজা বেগমকে ডাইনিং রুমের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে দৌঁড়ে এসে দিলরুবাকে জানান। দিলরুবা দৌঁড়ে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান, ডাইনিং রুমের মেঝেতে আফরোজা বেগম পড়ে আছেন এবং পাশের গেস্ট রুমে পুরনো কাজের মেয়ে দিতির রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে।

দিলরুবা তার স্বামীকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি বাসায় ফিরে সিকিউরিটি গার্ডদের জিজ্ঞাসা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সিকিউরিটি গার্ড নুরুজ্জামান জানান, নতুন কাজের মেয়েটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ১০মিনিটের দিকে গেট দিয়ে বের হয়ে চলে গেছে। সুরভী আক্তার নাহিদা এবং অন্য আসামিরা যোগসাজসে লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা খুনসহ লুন্ঠনের বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব দেয়নি। তাই তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। জোড়া খুনের সঙ্গে আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মর্মে মামলার তদন্তে, সাক্ষ্য, প্রমাণসহ তথ্য-প্রযুক্তিগত প্রমাণাদি পাওয়া যাচ্ছে। এই জোড়া খুনসহ লুণ্ঠন কার নির্দেশে, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহায়তায় ও মদদে আসামিরা এ ঘটনা সংগঠিত করেছে তাদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারসহ মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

রিমান্ড শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।

অন্যদিকে আসামি নুরুজ্জামানের পক্ষে তার আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, ‘আসামি পরিস্থিতির শিকার। পুলিশ ষড়যন্ত্র করে এজাহারে তার নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে।’

অপর আসামি গাউসুল আযম প্রিন্সের পক্ষে তার আইনজীবী এ এইচ এম রিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘প্রিন্স বাড়ির কেয়ারটেকার। তার দায়িত্ব বাড়ির খবর রাখা। কারো রুমে গিয়ে খোঁজ-খবর রাখার দায়িত্ব তার না। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত নন। অপর তিন আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) এবং তার গৃহকর্মী দিতিকে হত্যার অভিযোগে আফরোজা বেগমের মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবি গত ৩ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।