ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২৪:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

শিক্ষক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৫৩ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার

অন্যায়ভাবে শিক্ষক ছাটাই এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে রাজধানীর স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকসহ ট্রাস্টি বোর্ডের সমস্যদের অন্যায় অাচরণের প্রতিবাদে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা ১১ দফা দাবি জানিয়েছে। 

রোববার সকাল থেকে কলাবাগান শাখার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘিরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাউকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। এছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারহানা শারমিনের অপসারণ দাবি করেছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, গত এক মাসে কোনো রকম কারণ ছাড়াই বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে ছাটাই করা হয়েছে।  তাছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় কথা বলেন। তারা সব সময় শিক্ষকদের গালিগালাজ করেন।

ছাত্ররা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারহানা শারমিন শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে লাগামহীনভাবে বাজে ব্যবহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকের বিশেষ স্নেহভাজন হওয়ার কারণে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

এ প্রসঙ্গে ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারহানা শারমিন উইমেননিউজ২৪.কমকে বলেন, ‘আসলে আমি শুধুই আমার কর্তব্য পালন করি। কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার কেন করব। আসলে দুয়েকটি বিভাগের কিছু ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে সেমিস্টার ফিস দেয় না। অথচ তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তাদের ফি’র জন্য চাপ দেয়া হলেই তারা এসব অভিযোগ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখানে চাকরি করি। মালিকপক্ষের স্নেহভাজন হওয়ার সুযোগ নেই। এসব অভিযোগ ঠিক নয়।’

জানা গেছে, এরই মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক এস এম ফায়েজ (সাবেক ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের উপদেষ্টা মহব্বত অালী, একই বিভাগের প্রভাষক এজাজ জামান, সহকারী প্রক্টর ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক হাবিবা কিবরিয়া, ইংরেজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শাহিন মাহবুবা কবীর, স্থাপত্য বিভাগের প্রধান সাজ্জাত কবির, একই বিভাগের প্রভাষক এস এম মিজানুর রাহমানকে জোরপূর্বক চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এই শিক্ষকরা ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাটাই করার নগ্ন পায়তারা করছে বোর্ড অব ট্রাস্টি। 

আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা ১১ দফা দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরিচ্যুত  সকল শিক্ষককে স্বপদে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা পদে অধ্যাপক এস এম ফায়েজকে ফিরিয়ে আনতে হবে, বিনা নোটিশ  বা ইউজিসির আইনের বাইরে গিয়ে কোন শিক্ষককে  অপসারণ করা যাবে না, বোর্ড অব ট্রাস্টির কেউ শিক্ষকদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় কথা বলতে পারবে না, সেমিস্টারের টিউশন ফি কমাতে হবে, সকল জরিমানা সম্পূর্ণরূপে মওকুফ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘নতুনকিছুডটকম’ অাবার চালু করতে হবে, লাইব্রেরিতে আধুনিক বইসহ সকল সুবিধা বাড়াতে হবে, ক্যান্টিনে খাবারের মান ও আইটেম বাড়াতে হবে ও দাম কমাতে হবে, আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো রকম একাডেমিক, মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা যাবে না।
চাকরিচ্যুত হওয়া স্থাপত্য বিভাগের প্রধান সাজ্জাদ কবির  বলেন,‘ইউনিভার্সিটি কোনো কারণ ছাড়াই হয়তো সাশ্রয়ের কারণে এটি করে থাকতে পারেন। তারা আসলে কোনো কারণ দেখাচ্ছেন না।’
সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে সাজ্জাদ কবির জানান,তারা আমাদের রেজিগনেশন (পদত্যাগ) করতে বলেন। সে মোতাবেক আমরা রেজিগনেশন লেটার সাবমিট করি।’
একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের উপদেষ্টা ড. মহব্বত আলী বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। অন্য কোথাও ক্লাস নিতে হলে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে অনুমতি নিতে হয়। আমাকে তিন বছরের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমার দুই বছর কমপ্লিট হলো।’
ড. মহব্বত আলী বলেন, ‘আমাকে অপসরণের কোনো কিছু লিখিত দেয়নি তারা। তবে স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যানসেলর আমাকে জানায়, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন আপনি যদি না থাকেন তাহলে ভালো হয়। আমি পরে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রেসিডেন্টকে ম্যাসেজ পাঠালে তিনি কোনো উত্তর দেননি।’