ফাস্টফুডে বাড়ছে শিশুর স্থূলতা, কেড়ে নিচ্ছে শৈশব
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০১৯ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেশি হলে আমরা একে বলি অবেসিটি বা স্থূলতা। শিশু ও কিশোরদের মধ্যে স্থূলতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নাগরিক জীবনযাত্রা আর খেলাধুলার অভাবে শিশুদের অনেকেই এখন মুটিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মানসিক সমস্যাসহ ডায়াবেটিস, কিডনিসহ নানা অসুখে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে।
অবশ্য এই স্থূলতার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বংশগত। বাবা-মা যদি পারিবারিকভাবে স্থূল হন, শিশু একটু স্থূল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আগে শিশুদের স্কুলের পর বাইরে খেলার যথেষ্ট সুবিধা ছিল। এখন খেলার মাঠ তেমন নেই। আর ভুল স্কুল ব্যবস্থাপনাও ক্ষতির কারণ।
৫ থেকে ৬ বছরের একটি শিশু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোচিং ও পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকে। এতে করে তার সামাজিক বন্ধন গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। সে শারীরিক কার্যক্রমও করছে না। এর কারণে স্থূল হয়। আবার অতিরিক্ত স্নেহের কারণে শিশু ফাস্টফুড খাচ্ছে। এতে শিশু স্থূল হচ্ছে।
বড় বড় শপিং মলে, ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁয়, স্কুলগুলোর সামনে এমনকি রাস্তায় নামলেই ইদানিং এরকম অতিরিক্ত ওজনের শিশু চোখে পড়ে। বিশেষ করে শহর এলাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থূলতায় আক্রান্ত শিশু কিশোর চোখে পড়ে অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স ও শারীরিক কাঠামোর তুলনায় অতিমাত্রায় ওজনের (যা ওবেসিটি নামে পরিচিত) কারণে শিশুরা যেমন শৈশবের চঞ্চলতা হারাচ্ছে তেমনি শিশু বয়সেই ভুগছে এ সংক্রান্ত নানারকম অসুখে। তাদের ভবিষ্যত জীবন দাঁড়াচ্ছে মারাত্মক হুমকির মুখে।
আর অস্বাভাবিক এই শারীরিক অবস্থার জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন বাবা-মায়ের অসচেতনতা, শিশু খাবারে জাংক ফুডের আধিক্য, ভিডিও গেমস-কম্পিউটার বা টিভি দেখার মতো কায়িক পরিশ্রমবিহীন কাজে মগ্ন থাকা এবং শরীরচর্চার অভাবকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওবেসিটি বা স্থুলতা শিশুদের ভয়াবহভবে ঠেলে দিচ্ছে আজীবনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা, চোখের সমস্যা, বাত ও হেপাটাইসিসসহ নানা ঝুঁকিতে পরছে শিশুরা। ইতোমধ্যেই বিষয়টিকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন তারা।
তাই শিশু বয়স থেকেই মায়েদের সচেতন হতে হবে। শিশু বয়সে খাবারের জন্য এত পীড়াপীড়ি করার দরকার নেই। ডিম, দুধ, মাছ, মাংস বেশি খাওয়াতে হবে। আর এর সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, মানে ভাত, রুটি, চিনি— এগুলো প্রয়োজনীয় পরিমাণে খেতে হবে। এ ছাড়া শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার জন্য বেশি বেশি তাগিদ দিতে হবে।
সফট ড্রিংকস একেবারেই নিষিদ্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে পানি পানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এসব অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই তৈরি করতে হবে। অন্যথায় খুবই অসুবিধা হবে।
খেলাধুলার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিতে হবে। শিশুরা যেন অবশ্যই খেলাধুলায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ব্যয় করে। কেবল কম্পিউটারে বসে থাকার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।
-জেডসি