ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ৮:০৭:৪১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নতুন বইয়ে সেজেছে একুশে বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলা একাডেমিতে অমর একুশের  বইমেলায় নতুন নতুন বইয়ের সমাহারে স্টলগুলো ভরে উঠেছে। নতুন বইয়ের আকর্ষণীয় অঙ্গসজ্জা এবং প্রকাশনার বাহারি সৌন্দর্য পাঠকদের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে প্রথম থেকেই।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ বইয়ের রঙের উজ্জ্বলতা এবং প্রচ্ছদশিল্পীদের ব্যাপক পরিশ্রম ফুটে উঠেছে বিভিন্ন বিষয়ের শত শত বইয়ে। পাঠকরা হাতে নিয়েই নতুন বইয়ের গন্ধে ফিরে পাচ্ছেন নতুন পাঠের প্রেরণা।

সাতক্ষীরার একটি স্কুলের শিক্ষক গৌতম রায় কয়েক ব্যাগ বই কিনে মেলা থেকে ফিরছিলেন।  তিনি বলেন, মেলায় এসেই মনটা ভরে গেছে। এতো সুন্দর পরিবেশ এই মেলায় আর কখনো দেখিনি। স্টল ও প্যাভিলিয়নের নান্দনিকতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, স্টলগুলোর মান বেড়েছে। ছোট বড় সব স্টলই দেখে আমি মুগ্ধ। তিনি জানান, তাদের স্কুলের লাইব্রেরির জন্য আজ সাড়ে নয় হাজার টাকার বই ক্রয় করেছেন।

শিশু কর্নারে ছেলের জন্য দুপুরে বই কিনছিলেন আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন। তিনি বলেন, এবারের মেলার পরিবেশসহ সব কিছু ভাল লাগছে। বাচ্চাদের জন্য নানা বিষয়ে প্রচুর নতুন বই এসেছে।

আগামী প্রকাশনীর স্বত্তাধিকারী ওসমান গণি জানান, তারা এবার আশিটি নতুন বই প্রকাশ করছেন। দুই দিনে ২৩টি নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেন, মেলায় বইয়ের দাম বাড়েনি। বিগত মেলার মতোই ২৫ ভাগ কমিশনে তারা বই বিক্রি করছেন।

এবারের অমর একুশের গ্রন্থমেলার প্রথম শিশু প্রহরেই আজ শত শত শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিতে মেলায় ভিন্ন রকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। শিশু কর্নারে তারা নানা ধরণের খেলায় মেতে উঠে। স্টলে-স্টলে ঘুরে ঘুরে বই ক্রয় করে। আজ মেলার দ্বিতীয় দিনে ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে দুপুর দুটা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু কর্নারের পাশে বটতলায় সিসিমপুর শিশু কর্নারে অসংখ্য শিশুরা সকাল থেকেই নানা খেলায় মেতে উঠে।

এবারের মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি সুযোগ হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্লাস টাওয়ার ও শিখা অনির্বাণ চত্বর। প্রথম বারের মতো মেলার সঙ্গে উদ্যানের এই চত্বর যুক্ত করা হয়েছে। ফলে শত শত দর্শনার্থীরা মেলা উপভোগের পর গ্লাস টাওয়ার ও এর পাশে পুকুরের চারপাশে সময় কাটাচ্ছেন। ঘুরে বেড়াচ্ছেন উদ্যানের নানা আঙ্গিনা।

পহেলা ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হয়েছে। এদিন বিকেলে মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইমেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এবারের বইমেলার মূল থিম ‘বিজয়: ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ নবপর্যায়’।

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মিলিয়ে এবার গ্রন্থমেলার ২৫ হাজার বর্গফুট বেড়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতবার ২ লাখ ৭৫ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে গ্রন্থমেলা আয়োজন হলেও এবার তা বিস্তৃত হয়েছে ৩ লাখ বর্গফুটে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশকে ৪টি চত্বরে ভাগ করা হয়েছে।

একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৪ প্রতিষ্ঠানকে ১৫০টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৯৫ প্রতিষ্ঠানকে ৬২০টি ইউনিট; সব মিলিয়ে ৪৯৯ প্রতিষ্ঠানকে ৭৭০টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ২৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে ১৮০টি লিটলম্যাগকে ১৫৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে। ২৫টি স্টলে ২টি করে লিটল ম্যাগাজিনকে স্থান দেওয়া হয়েছে। অন্য ১৩০টি প্রতিষ্ঠান একক স্টল বরাদ্দ পেয়েছে।

একক ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করছেন, তাদের বই বিক্রি বা প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তিন ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।

একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির ১টি প্যাভিলিয়ন, ৪ ইউনিটের ২টি, একাডেমির শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি, একাডেমির সাহিত্য উত্তরাধিকারে ১টি স্টল থাকবে।

এবারও শিশু চত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে রয়েছে। এ কর্নারকে শিশুকিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। মাসব্যাপী গ্রন্থমেলায় এবারও প্রতি শুক্র ও শনিবার ‘শিশু প্রহর’ ঘোষণা করা হয়েছে।

মেলার খুদে লেখকদের জন্য শিশু চত্বরে ‘তারুণ্যের বই’ নামে এক নতুন আয়োজন করা হয়েছে, যাতে খুদে লেখকরা তাদের বইয়ের প্রচারণাও করতে পারবেন।