ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৬:০১:৫৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

একুশ, নারী জাগরণ ও আমাদের ভাষা চর্চা       

দিল মনোয়ারা মনু

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৫৩ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

দিল মনোয়ারা মনু

দিল মনোয়ারা মনু

নিজের ভাষার প্রতি মানুষের ভালোবাসা চিরন্তন। তাই আমরা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের রক্ষণশীল সামাজিক কাঠামোর মধ্যে থেকেও নারীকে সক্রিয়ভাবে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। আরো বিস্মিত অভিভূত হয়েছি জেনে যখন বাংলার নারী সমাজ শিক্ষার আলো থেকে বহুদূরে, অশিক্ষা ও কুসংস্কারে গোটা সমাজ আচ্ছন্ন, নারী শিক্ষা ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারেও খুব সীমিত পরিসরে চর্চা হতো। যে সকল সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবারের মেয়েরা শিক্ষার অধিকার লাভ করতো তারা শুধুই উর্দ্দু ও ফার্সী ভাষায় শিক্ষা চর্চার সুযোগ পেতো। সেই উনবিংশ শতকে ইংরেজী শিক্ষার সাথে যোগাযোগ ও মেলামেশার অধিকার লাভের জন্য ইংরেজী শিক্ষাকেও একসময় উৎসাহিত করা শুরু হলো। কিন্তু বাংলা ভাষার কোন চর্চাই হতো না ঐ সব পরিবারে। পরিবারের মধ্যে ও ভাবের আদান প্রদান হতো উর্দ্দুতে। সেই সময়ে বাংলাদেশের কুমিল্লার লাকসামের একজন নারী সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় সাধারণ মানুষের ভাষা, ব্রাত্য ‘চাষাভূষাদের’ বাংলা ভাষার চর্চাই শুরু করেননি, সেই ভাষায় গ্রন্থ রচনার কথাও ভাবলেন। মাটি ও সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা থাকলে, এটা করা যায়- তা এখন অনেকে কল্পনাও করতে পারবে না। ঠিক এ রকম একজন অসাধারণ নারীই ছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা। ১৮৭৬ সালেই তিনি বাংলায় যে গ্রন্থখানি রচনা করে অসামান্য কৃতিত্বের দাবীদার হন সেই গ্রন্থটির নাম ‘রূপ জালাল’।

এই বাংলা ভাষার জন্যই পরবর্তী সময়ে আমাদের ভাষা শহীদরা জীবন দান করেছিলেন বীরের মতো। ভাষা সংগ্রামীরা অকুতোভয়, জেল-জুলুম, গুলি উপেক্ষা করে লড়ে গেছেন এই ভাষার জন্যই। আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সর্বস্ব দান করেছিলেন তারা।

এই ইতিহাসের ক্রমান্বয় পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ১৯৪৮ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি করাচীতে গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন হয়। ওই অধিবেশনে বিরোধী দলের গণপরিষদ সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দুটি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। প্রথম প্রস্তাবটিতে বছরে অন্তত একবার ঢাকায় পাকিস্তান গণ পরিষদের অধিবেশন অনষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল ভাষা সংক্রান্ত। মাত্র দু’লাইনের দ্বিতীয় ঐ সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছিলো ইংরেজীর সঙ্গে বাংলাকেও পরিষদের সরকারী ভাষা করতে হবে। ঐ প্রস্তাব উত্থাপনের সাথে সাথে পার্লামেন্টে তুমুল আলোড়ণের সৃষ্টি হয়। এর সূত্র ধরেই অঙ্কুরোদ্যম হয়েছিলো আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার বীজ।

তারই ফলাশ্রুতিতে একুশ কে কেন্দ্র করে আজ গড়ে ওঠেছে বইমেলা, নবীন ও প্রবীনদের একুশের চেতনা সমৃদ্ধ লেখা আমাদের দেশের সাহিত্য চর্চার অঙ্গনকে প্রতিনিয়তই নতুন দিগন্তের সূচনা করে চলেছে। বাংলা একাডেমী আয়োজিত এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতির সহায়তায় অনুষ্ঠিত ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে বই মেলা বাঙালীর জাতীয় জীবনে নি:সন্দেহে শুধু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই নয়, সংস্কৃতি বিকাশেরও অপরিহার্য অংশ। সারা বছর আমাদের প্রকাশনা শিল্পে যত বই প্রকাশ পায় তার ৮০ ভাগ বই’ই প্রকাশ পায় এই বইমেলায়। এর মধ্যে প্রবীন ও নবীন নারীদের বইও থাকে এক উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে। পাঠকদেরও সারা বছর প্রত্যাশা থাকে বইমেলায় তার প্রিয় লেখকের চমৎকার  এক বা একাধিক বই পাবার। তাই শুধু বাণিজ্যিক কারণে নয় এই মেলা জাতীয় চেতনার ঐক্যের এক জীবন্ত প্রকাশও বটে। নারী সংগঠন ও নারী প্রকাশকদের অংশগ্রহণ, পুরানোদের পাশাপাশি নতুন নারী লেখকদের বই বিক্রি এবং তাদের নতুন নতুন সৃজনশীল গ্রন্থের প্রচার ও প্রসারেও এই মেলা বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। 

নারী প্রকাশক ও নারী লেখকদের এই নিরন্তর চেষ্টা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের নারীর যে অবদান তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও শক্তি যোগাচ্ছে। বিশেষ করে ভাষা ও সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে তো বটেই, বৃহত্তর সংস্কৃতির নানা অঙ্গনে তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধিতে এই বই মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে। সেই সময়ের এক ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের রক্ষণশীল সামাজিক কাঠামোর ভেতরে থেকেও ভাষা আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ সংখ্যার দিক থেকে বিপুল না হলেও ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৮ সালে ২২ ফেব্রুয়ারী সিলেট জেলার নারীদের পক্ষ থেকে ১১ জন নারী পূর্ববঙ্গের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের কাছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা এবং শিক্ষার মাধ্যম বাংলা করা দাবী জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম- জোবেদা খাতুন, সৈয়দা শাহেরা বানু, সৈয়দা লুৎফুন্নেসা, রাবেয়া খাতুন, চিত্র বিবি, জাহানারা মতিন, রোকেয়া বেগম, পামসা কাইসার রশীদ, এম এ বিট্টি, নূরজাহান বেগম, সুফিয়া খাতুন, মাহমুদা খাতুন, শামসুন্নাহার খাতুন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগের ছাত্রী নাদেরা বেগম এই আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার জন্য তার বিরুদ্ধে হুলিযা জারী হয় এবং পরবর্তী সময়ে তিনি গ্রেফতার হন। কারাভ্যন্তরে বিচারের প্রহসন বসিয়ে মুসলিমলীগ সরকার তাকে সাজাও দিয়েছিল। বরিশালে  ব্রজ মোহন কলেজের ছাত্রী রওশন আরা বাচ্চু রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের দাবীতে ধর্মঘট সভা ও মিছিল করেছিলেন। বাংলার দাবিতে সবরকম সামরিক বাধাকে অতিক্রম করে রাজপথে নেমে এসেছিলেন তিনি।  যশোরের ভাষা আন্দোলনের শুরু ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকেই। বি.এ শ্রেণীর ছাত্রী হামিদা রহমান ছিলেন যশোরের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক। ধর্মঘটে নের্তৃত্ব দেওয়ার কারণে তাঁর নামেও হুলিয়া জারী হলে পুলিশের গ্রেফতার এড়ানোর জন্য তিনি পায়জামা সার্ট পরে মাথায় গামছা বেঁধে বিড়ি ফুকতে ফুকতে কলেজের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। পুলিশ তাকে না পেয়ে রুবী নামের এক ছাত্রীকে গ্রেফতার এবং গৃহবন্দী করেন। 

বাগেরহাট কলেজের ছাত্রী হালিমা খাতুন, রাবেয়া বেগম, সেলিমা খাতুন ছাত্রদের সাথে পুরো শহর ঘুরে পিকেটিং করেছেন তখন। পরবর্তী সময়ে ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে ঢাকায় পড়াকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রী নাদেরা বেগম সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনবছর এই কারণে কারাদন্ড ভোগ শেষে ফিরে এসে নাদেরা বেগম ভাষা আন্দোলনকে পুণরায় নেতৃত্ব দেন। জানা গেছে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপনে নাদেরা বেগমের সাথে দেখা করে তাকে দিয়ে একটি চিঠি লিখিয়ে আনেন হালিমা খাতুন। চিঠিতে নাদের বেগম লিখেছিলেন বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এটিকে প্রতিহত করার জন্য তোমরা আন্দোলনে যাও। সেই সময়ে তাকে আরো যারা সহযোগিতা করেন তারা হচ্ছেন হালিমা খাতুন, সুফিয়া খান, রওশন আরা বাচ্চু, রোকেয়া বেগম, গুলে ফেরদৌস নূরী, সাফিয়া খাতুন প্রমুখ। শুধু আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়াই নয় এরা আন্দোলনের খরচ চালানোর জন্য বাড়ী বাড়ী ঘুরে চাঁদা সংগ্রহ করেছেন। গৃহকত্রীরা শুধু টাকা নয় তারা এ সময়ে কেউ কেউ সোনার গহনা দিয়েও এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন। 

চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রী প্রতিভা মুৎসুদ্দী , তালেয়া রহমান, শেলী দস্তিদার, প্রণতি দস্তিদার, সুলেখা দে, জওশন আরা রহমান ঢাকায় ছাত্রদের মিছিলে গুলী বর্ষণের প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক জোহরা বেগম কাজী অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে আহতদের সেবায় অংশগ্রহণ করেন। ঠিক একই সময় গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে আয়োজিত নাটোর মহিলা ভাষা আন্দোলন সমিতির বেগম শামসুন্নাহারের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের নারী সাংগঠনিক সম্পদক রোকাইয়া আনোয়ারা জাতীয় পরিষদে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে এক জোরালো বক্তব্য রেখে আলোচিত হন। ভাষা আন্দোলনের শুরুতে ১৯৪৮ সালে অনন্য অবদান রেখেছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বেগজাদী মাহমুদা নাসির। ’৫২ আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ মর্গান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম, ইলা বখসী, মনিমালা, হাসিনা রহমান, বেলু বেগম, আয়শা বেগম, ফিরোজা বেগম, রেজিয়া খাতুন, বিজলী বেগম রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। 

ভাষার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করে তারা যে পথ তৈরী করেছিলেন সেই পথ ধরেই সাহিত্য চর্চায় নারীর অংশগ্রহণ ক্রমশ: বেড়েই চলেছে। একুশকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে প্রতিবছর পত্র পত্রিকাগুলো বিশেষ সংখ্যা বা ক্রোড়পত্র প্রকাশের আয়োজন করে থাকে। নারী পত্রিকারও থাকে বিশেষ আয়োজন। নবীন, প্রবীণ, তরুণ নারী লেখকদের একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এখানে লেখা প্রকাশের সুযোগ ঘটেছে। 

আমি দীর্ঘদিন সম্পাদনার দায়িত্বে থাকায় খুব ঘনিষ্টভাবে জানি ভাষার প্রতি তাদের ভালবাসা কতখানি। একুশের চেতনাকে ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়া, একুশের চেতনাকে ধরে সাহিত্য চর্চা প্রগতিমুখী ও বিজ্ঞানমনষ্ক এই পরম্পর চেষ্টা জাতি হিসেবে আমাদের অনেক সমৃদ্ধ করেছে। ষাটের দশকে কবি মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, সুফিয়া কামাল, কবি জাহানারা আরজু , সায়েমা চৌধুরী, জামান আরা, হোসনে আরা পরবর্তী সময়ে শহীদ কবি মেহেরুন্নসা সহ বহু কবি একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বহু কবিতা লিখেছেন। তাদের অনুসরণ করে বেগম পত্রিকায় কবিতা লেখায় নিবেদিত হয়েছেন আরো বহু নারী কবি। পরবর্তীতে অনন্যা পত্রিকার মাধ্যমে তাদের এই চর্চা আরো সমৃদ্ধ, আধুনিক এবং যুগপোযোগী হয়েছে। মোট কথা এই দুটি পত্রিকাকে কেন্দ্র করেই তাদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। শুধু কবিতাই নয় গল্প, উপন্যাস ,প্রবন্ধ নিবন্ধ অর্থাৎ সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই শক্তিশালী নারী লেখকদের পাশাপাশি অন্যরাও চর্চার মাধ্যমে এক্ষেত্রে নিজেদের স্থান করে নিতে পেরেছেন। শুধু সাহিত্য চর্চাই নয় মাতৃভাষার চর্চা ও প্রতিষ্ঠার পথ ধরে নারীর জাগরণ ঘটেছে প্রায় সকল ক্ষেত্রে। যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, প্রশাসন, সেনা, বিমান, নৌবাহিনী, কৃষি, ব্যবসা, গবেষণা, খেলাধুলা, পর্বত আরোহন কোথায় নেই তারা। সংখ্যা অনুপাতে সমান না হলেও দক্ষতা, মেধার পরিচয় দিয়ে তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয় আন্তর্জাতিক ভাবেও আজ তা স্বীকৃত। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে মাতৃভাষা মাধ্যম হিসেবে এক্ষেত্রে নি:সন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় ৫২’র পর দেশের সকল আন্দোলনে বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে তাদের অংশগ্রহণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেই চেতনাকে ধারণ করে স্বাধীনতা উত্তর সকল প্রতিবাদ, প্রতিরোধে তারা সোচ্চার। জাতীয় জীবনের সকল ক্রান্তি লগ্নে, সমস্যা সংকটে, সহিংসতার বিরুদ্ধে তাদের সাহসী ভূমিকা জাতীয় অগ্রগতিতে এক ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে। নারীর যত ক্ষমতায়ন ঘটবে উৎপাদন ও অর্থ উপার্জনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে, পুরুষের মতো বাইরের জগতকে নিজের ভাবতে পারবে, ভাষায় নারী পুরুষের বৈষম্য তত কমে যাবে। বাংলাদেশ নামক মানচিত্রে নারীর তার প্রাপ্য মর্যাদা পেলে তা সমাজ ও দেশের জন্য যেমন মঙ্গল তেমন বাংলা ভাষার জন্যও মঙ্গলজনক। আমরা বিশ্বাস করি সঠিক ভাষা ও সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা একদিন সে শক্তি অর্জন করবে। 

ভাষা আন্দোলন বই প্রকাশে ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং নিরন্তর সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার চর্চা আমাদের অহংকারের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্য দিয়েই জাতীয়তাবোধের জাগরন হয়েছে যা আমাদের উদ্বুদ্ধ করছে সকল অনিয়ম, অসত্য, অন্যায় ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে এবং প্রতিবাদী হতে। একুশ তাই আসলে কোন নির্দিষ্ট দিবস নয় এক অবিরাম সৃষ্টিশীল ধারারই নাম। 

৥ দিল মনোয়ারা মনু, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সম্পাদক, মহিলা পরিষদ