ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ৪:২০:০১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

প্রধানমন্ত্রীর নজরদারিতে নৌকার বিরোধিতাকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪৮ পিএম, ২ এপ্রিল ২০১৯ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

এবারের উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলে নিজেদের মধ্যে কোন্দল বেড়েছে। বিভক্ত হয়ে পড়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কাদা ছোড়াছুড়িতে সাংগঠনিক ভিতও দুর্বল হয়েছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক উপজেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। এতে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

উপজেলা নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন এবং তাদের বিরোধিতার কারণে রেকর্ডসংখ্যক উপজেলায় এবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হেরেছে। এতে দলের আবেগের প্রতীক ‘নৌকার’ ইমেজই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। একারণে নৌকার বিরোধিতাকারীদের উপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে এসব মন্ত্রী-এমপি প্রধানমন্ত্রীর কড়া নজরদারিতে থাকবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, দলের এ অবস্থার জন্য অনেক মন্ত্রী-এমপিকে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। দলের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সারা দেশে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে অবিলম্বে এসব মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে দলের বিভিন্ন ফোরামে। গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকেও অনির্ধারিত আলোচনায় উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গ এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রিসভার কোনো কোনো সদস্যও নৌকার বিরোধিতা করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

সূত্রগুলো জানায়, বিএনপির বর্জনের কারণে উপজেলা নির্বাচনকে জমজমাট করতে এবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের অন্যদেরও প্রার্থিতার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়। তবে এমপি-মন্ত্রীদের সব পক্ষ থেকে নিবৃত থাকার মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু অজানা আতঙ্কে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে যান মন্ত্রী-এমপিরা। উন্মুক্ত নির্বাচনে যেখানে তাদের চুপ থাকার নির্দেশনা রয়েছে সেখানে অনেক এমপি-মন্ত্রী অন্তরালে নৌকার বিরোধিতা করেন। শুধু বিরোধিতাই নয়, কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি নৌকার বিরোধিতা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি প্রচারণায় শামিল হন। অনেকে আবার নৌকার প্রার্থী ও প্রশাসনকেও নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করেন। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি আওয়ামী লীগ ও সরকারের শীর্ষ কর্তারা।

দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, নৌকার বিরোধিতাকারী এসব মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এসব অভিযোগ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত মন্ত্রী-এমপির তালিকা করে কেন্দ্র। সেই রিপোর্ট দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, যারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করে তারা কখনো বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত। তবে আপাতত তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নজরদারিতে থাকবেন অভিযুক্তরা। ভবিষ্যতে তাদের আমলনামা যাচাই করে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যেহেতু বিএনপি নেই তাই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রভাব বিস্তার না করার নির্দেশনা ছিল। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও উদারনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় এ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের নিবৃত থাকতে বলা হয়েছে। যোগ্য ও জনপ্রিয়রা নির্বাচিত হয়ে আসুক এটা আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দলের সেই নির্দেশনা অমান্য করে অনেকে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা চলছে। আগামী শুক্রবার দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।

-জেডসি