ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৪:৩২:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ভোটের মাঠে নুসরাতকে নিয়ে ছক্কা মেরেছেন মমতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

ভারতের জাতীয় নির্বাচনের শেষ ধাপে সব ধরনের প্রচারণা শেষ হলেও ভিন্নভাবে ঘরে ঘরে প্রচারণা চলছে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নুসরাত জাহানের।

‘লাভ এক্সপ্রেস’ নামের ব্যবসা সফল টালি ছবির একটি গান বাজছে পাড়ায়, মহল্লায় ও সমর্থকদের ঘরে ঘরে।

নুসরাতের সমর্থকরা গাইছেন - ‘মন বলেছে আমার, আজ সঙ্গে যাবে তোর’

ছবিতে এই গানে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন নুসরাত। তিনি চাইছেন ভোটের দিনেও বসিরহাটের জনগণকে তৃণমূলের সঙ্গে পেতে।

বসিরহাট আসনে নুসরাতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির সায়ান্ত বসু ও সিপিআইয়ের পল্লব সেনগুপ্ত।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, জনপ্রিয়তায় এ দুজনের থেকে বেশ এগিয়ে নুসরাত।

কারণ হিসাবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘বসিরহাটের মেয়ে নুসরাত। যে কারণে স্থানীয়দের সঙ্গে তার অন্যরকম বন্ধন রয়েছে। তার ওপর তিনি পরিচিত মুখ, সেলিব্রেটি। অভিনেত্রী হিসাবে বেশ জনপ্রিয়। প্রচারণায় শুধু তাকে দেখতেই জড়ো হয়েছে লাখ জনতা।’

তার সঙ্গে সেলফি তুলতে মঞ্চ ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এছাড়া বসিরহাটে তৃণমূলের কংগ্রেসের সমর্থন বেশ জোড়াল বলে দাবি ভারতীয় রাজনীতি বিশ্লেষকদের।

সব মিলিয়ে অনেক ভোটারদের মতে, বসিরহাটে নুসরাতকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়ে মমতা এক রকম ‘ছক্কাই’ মেরে দিয়েছেন।

অথচ মনোনয়নের সময় নুসরাতকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেয়ায় নানা নেতিবাচক মন্তব্য ছোঁড়া হয়েছিল।

রাজনীতি আর অভিনয় একসঙ্গে পেরে উঠবেন কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় অনেক।

রাজনীতি কতটুকুই বা বোঝেন নুসরাত, তার কি সিনেমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে? এমন কথা চর্চা হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

অবশ্য সে সময় মুসলিম পরিবারের মেয়ে নুসরাত রাজনীতিতে একেবারেই আনকোড়া স্বীকার করে জানিয়েছিলেন, ‘এতোদিন বাড়ি সামলানো ও সিনেমার শুটিং এই দুটো কাজ নিয়েই দিন পার করতাম। এখন সঙ্গে রাজনীতি যোগ হলো আর কী। ’

আর সেই নুসরাতকে এখন রাজনীতিতে বেশ পরিপক্ক বলেই মনে করছেন বসিরহাটসহ ২৪ পরগনার ভোটাররা।

বসিরহাটের সন্দেশখালীর একটি স্কুলের শিক্ষক সুশান্ত বসু বলেন, ‘নুসরাত স্থানীয়। সভা সমাবেশে জনতার মন কেড়ে নিতে পারেন তিনি। তাছাড়া তিনি একজন নারী। আর বসিরহাটে নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫০ ভাগ। এসব নারী ভোটারদের বেশিরভাগই নুসরাতকে ভোট দেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

এসব দিক খেয়াল করেই নুসরাতকে এখানকার প্রার্থী করেছেন মমতা বলে মত দেন তিনি।

স্থানীয় মুদির দোকানদার বিমল বিশ্বাস বলেন, ‘নুসরাত আমাদের মেয়ে। তাই তাকেই ভোট দেব। এটা শুধু আমি বলছি না, এই পাড়ার যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন সেও নুসরাতের পক্ষেই কথা বলবে।’

বসিরহাটের সুন্দরবনের মিনাখাঁওয়ের বাসিন্দা মুহাম্মদ আবিদ খান বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী শুধু অভিনেত্রীই নন, কন্ঠশিল্পীও। বিভিন্ন প্রচারের সময়ে নুসরাতকে বলা হয়েছিল, ‘লাভ এক্সপ্রেস’ ছবির গানটি গেয়ে শোনাতে। মিষ্টি গলায় গানটি গাইতে গাইতে তিনি ভোটও চেয়েছেন বিনীতভাবে- ‘মমতা দিদির সালাম নিন, আমাকে শুধু একটা ভোট দিন।’

এভাবেই ভোটের মাঠে নুসরাতের প্রশংসায় মেতেছেন বসিরহাটের গ্রামের গৃহবধূ থেকে শুরু করে শহরের ধনীরা।

গত কয়েকদিনের প্রচারণায় নুসরাত মানুষের সঙ্গে আন্তরিকভাবে মিশতে পেরেছেন বলেই নুসরাতকে মমতা ব্যানার্জির সঠিক বাছাই বলে বিবেচনা করছেন তারা।

জানা গেছে, শুধু বসিরহাটেই নয় সুন্দরবনের মিনাখাঁও, হাড়োয়া, সরবেডিয়া প্রভৃতি এলাকায় নুসরাতের জনপ্রিয়তা দেখা গেছে।

প্রসঙ্গত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বে রোববার ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যে ১৫টি আসনে ভোট হবে, তার একটি বসিরহাট।

এই আসনে ২০১৪ সালে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন ইদ্রিস আলী, লোকসভার সদস্যও হয়েছিলেন তিনি।

এবার মমতার হাত ধরে জনপ্রতিনিধি হতে পারেন এই টালি সেলিব্রেটি, এমনটাই আশা করছেন স্থানীয়রা।

-জেডসি