ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ১:৫৮:৩৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নরসিংদীতে স্কুলছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৩২ এএম, ১৯ জুন ২০১৯ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না হওয়ায় নরসিংদীর হাজিপুরে দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নাটোরের পুকুরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- জান্নাতির শাশুড়ি শান্তি বেগম (ফেন্সী রাণী), স্বামী শিপলু মিয়া (২৩), ননদ ফাল্গুনী বেগম (২০) ও শ্বশুর হুমায়ুন মিয়া (৫০)। এরা সবাই চর হাজিপুরের খাসেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, থানায় মামলা হওয়ার পর থেকেই পুলিশ সুপারের নিদের্শনা মোতাবেক মামলার তদন্ত ও গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অপরাধীরা খুবই চতুর। এক স্থানে বেশিক্ষণ অবস্থান করেনি তারা। তাই তাদের গ্রেপ্তার করতে বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও আমরা সফল হয়েছি। আজ পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন।

জানা গেছে, প্রায়  এক বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতি আক্তারের (১৬) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী খাসেরচর গ্রামের শিপলু মিয়ার প্রেম হয়। কিছুদিন পরই পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর জান্নাতি বুঝতে পারে পরিবারটির সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। জান্নাতিকে পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে মাদক ব্যবসায়ী শাশুড়ি শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু চাপ দিতে থাকে। কিন্তু এতে রাজি হয়নি জান্নাতি।

রাজি না হওয়ায় তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হতে থাকে। এর জেরে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শান্তি বেগম, ফাল্গুনী বেগম ও শিপলু মিলে জান্নাতির শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি তারা। পরে এলাকাবাসীর চাপে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয় জান্নাতিকে।

ঘটনার পর ২৫ এপ্রিল জান্নাতির দাদা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খান আদালতে মামলা করেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রায় দুই মাসেও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি পিবিআই। এরই মধ্যে গত ৩০ মে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাতির মৃত্যু হয়।

গত ১৫ জুন রাতে যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে শান্তি বেগম, শিপলু, ফাল্গুনী বেগম ও হুমায়ুন মিয়াকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন জান্নাতির বাবা শরীফুল ইসলাম খান। এরপরই গ্রেপ্তার অভিযানে নামে সদর থানা পুলিশ।

-জেডসি