ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ৬:৩৬:৫৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৪ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ভালোবাসার নেই কোন রঙ বা রূপ। হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয় ভালোবাসা। প্রিয়জনকে ভালোবাসতে বা তা প্রকাশ করতেও প্রয়োজন নেই কোনো নির্দিষ্ট ক্ষণ, দিন, মাস বা বছরের। এই কথাগুলো জানা আমাদের সবারই। সব কথার পরও গুরুত্ব বলে একটা কথা থেকে যায়। আর এই ভালোবাসার গুরুত্ব বা তাৎপর্যকে তুলে ধরতেই জন্ম হয় বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের।

প্রতি বছর এই দিনটাতে অনেকেই তাদের প্রিয়জনদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে একটু অন্যভাবে। ফুল, কার্ড আর নানান উপহার সামগ্রীতে ভরিয়ে দেয় তারা প্রিয় মানুষটিকে। অনেকের কাছেই তাই বহুল আকাঙ্ক্ষিত দিন এটি।

আজ  ১৪ ফেব্রুয়ারি, সেই বহুল আকাঙ্ক্ষিত দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইস ডে। নানা আয়োজনে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয় দিনটি। দিবসটি বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে ১৯৯৫ সাল থেকে। এই দিনটিকে ঘিরে প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে থাকে নানান আয়োজন। 

পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুকরুণে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের সব দেশেই বাড়ছে দিনটির কদর। বিশেষত তরুণ সমাজে দিনটির মূল্য রীতিমত চোখে পড়ার মত।

প্রথমদিকে ভালোবাসা উদযাপনের দিনটি সীমাবদ্ধ ছিল ইংল্যান্ডের রাজকীয় পরিবার এবং অভিজাত সমাজে। উনবিংশ শতাব্দীতে এই দিনটি সার্বজনীন উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শুরু হয় ভালোবাসার মানুষকে ফুল, গ্রিটিংস কার্ড, চকলেট, অলংকারসহ নানা উপহার দেয়া ও একান্তে সময় কাটানোর রীতি।

বিংশ শতাব্দীতে ভালোবাসা দিবস পৌঁছে যায় মানুষের হৃদয়ে গভীরে, ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে নানা বৈচিত্র লক্ষণীয়।

চীনে ভালোবাসা দিবসকে বলা হয় ‘কিক্সি ফেস্টিভাল’ যেটি উদযাপিত হয় চন্দ্রপঞ্জিকার সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে, ফিনল্যান্ডে এর নাম ‘ইস্তাভানপাইভা’ যার অর্থ ‘বন্ধুত্বের দিন’, ল্যাটিন আমেরিকাতেও এই দিবস উদযাপিত হয় বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার দিন হিসেবে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রীস, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে ভিন্ন নামে দিনটি উদযাপিত হয়।

তবে এই ভালোবাসা দিবস নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এই দিবসটি পালনে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। যুব সমাজকে পশ্চিমা সংস্কৃতির কু-প্রভাব থেকে রক্ষার্থে ২০০৮ সালে ভালোবাসা দিবস নিষিদ্ধ করে ইরান। ২০১৭ সালে এই দিবসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় পাকিস্তানে। এছাড়াও এই দিবসটি পালনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও কাতারে। 

দিনটি পালন করলেও আমরা অনেকেই জানিনা এর গোড়াপত্তনের ইতিহাস। যদিও এই দিবসের শুরুটা নিয়ে প্রচলিত আছে নানান কাহিনী। তবে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত কাহিনীটি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের একজন পাদ্রী ও চিকিৎসককে নিয়ে।

২৬৯ খৃষ্টাব্দের কথা। ওই সময় ইতালির রোম শহরে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন পাদ্রীর বাস ছিলো। তিনি আবার একই সাথে চিকিৎসকও ছিলেন। তৎকালীন রোমান সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস। তিনি রাজ্যে সুশাসন বজায় রাখতে তরুণ-যুবকদের নিয়োগ দেন। দায়িত্ববান ও সাহসী করে গড়ে তুলতে রাজ্যে তিনি যুবকদের বিয়ে নিষিদ্ধ করেন। বিয়ে নিষিদ্ধ করায় রাজ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। সকল নিষেধ অমান্য করে পাদ্রী সেন্ট ভ্যালেন্টাইন গোপনে তরুণ-তরুণী যুগলদের বিয়ের আয়োজন করেন। এর ফলে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। বন্দী অবস্থায় তিনি এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলে তাঁর জনপ্রিয়তা আরো বেড়ে যায়। এতে সম্রাট ক্রাডিয়াস ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। এরই মধ্যে দৃষ্টি ফিরে পাওয়া মেয়েটির সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায় ভ্যালেন্টাইনের। মৃত্যুদণ্ডের ঠিক আগের মূহুর্তে ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীদের মাধ্যমে একটি গোপন চিঠি লিখে পাঠান সেই মেয়েটিকে। ওই চিঠির বিদায় সম্ভাষণে লেখা ছিলো, From your valentine। এই বিদায় সম্ভাষণটি সবার হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায়।  আর সেই দিনটিও ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি৷

জানা যায়, পরে ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ গেলাসিয়াস প্রথম এই দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন৷ ১৭০০ শতাব্দীতে দিনটিকে জনপ্রিয়ভাবে পালন শুরু করে ব্রিটেন৷ শুরু হয় হাতে লেখা কার্ড অথবা উপহার বিনিময়৷ এরপর ১৮৪০ সালে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ‘ভালবাসা দিবস’-এর উপহার তৈরি শুরু করেন এস্থার এ হাওল্যান্ড৷ পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ‘ভ্যালেন্টাইন কার্ড’-টি সংরক্ষিত আছে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে৷

যদিও ভালবাসা নিয়ে মানব মস্তিষ্কে কিছু সমীকরুণ আর হৃদয়ের গহনে কিভাবে তার উৎপত্তি হয় তা এখনো নির্ণয় করা বিজ্ঞানীদের জন্য সম্ভব হয়নি।

শোনা যায়, পৃথিবী থেকে যত সত্যিকারের প্রেমিক প্রেমিকা মারা যায় তাদের ভালোবাসা নাকি জমা থাকে সূর্যের কাছে, তাইতো সূর্যের রং লাল। ভোরের সূর্যোদয় ভালোবাসার মানুষের মনে রং ছড়ায়। তাইতো বিশ্বের সব প্রেমিক ভোরের সূর্যের ছড়িয়ে দেয়া আলোর কাছ থেকে দীর্ঘ নিশ্বাসে ভালোবাসা সংগ্রহ করে। প্রকৃতি থেকে নেয়া এ ভালোবাসা বিলিয়ে দেয় সারাদিন একে অন্যের মাঝে। যদিও এই মিথের উৎপত্তি কোথা থেকে তা অজানা আজও। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।