ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৩:৫৪:৩৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

ইতিহাসের সাহসী নারী নীরজা ভানোট

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:৩৩ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সারা পৃথিবীতে কোন নারীর সবচেয়ে সাহসী কাজ কোনটি সেটা খুঁজে বের করা কষ্টসাধ্যই। তবে ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর বিমান অপহরণের ঘটনায় যে সাহসী নারী নিজের জীবন দিয়ে যাত্রীদের রক্ষা করেছিলেন সেই নীরজা ভানোট এর সাহসিকতার গল্প ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে নিশ্চয়ই। একজন সফল মডেল থেকে পরবর্তী জীবনে এয়ার হোস্টেস হয়ে উঠা এই নারী নিজের আত্মদান এর মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার উৎস।

৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬, আমেরিকার উদ্দেশ্যে মুম্বাই থেকে ছেড়ে আসা প্যান আমেরিকান ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজ সংক্ষেপে প্যান আম এর ৭৩ নম্বর ফ্লাইটটি পাকিস্তানের জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিরতি নিচ্ছিল। বিরতি শেষে বিমানটি পুনরায় আমেরিকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময়ই সন্ত্রাসীরা বিমানটি আক্রমন করে।

সন্ত্রাসীদের আক্রমনের সাথে সাথে নীরজা ককপিটে সতর্ক বার্তা পাঠান। কিন্তু হাইজ্যাক এর খবর শুনেই পাইলট, কো-পাইলট আর ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার এর সমন্বয়ে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট ককপিট এর সবাই পালিয়ে যায়। আর এর ফলে পুরো বিমানে নীরজাই হয়ে উঠেন বয়োজ্যেষ্ঠ কেবিন ক্রু।

লিবিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠা এই সন্ত্রাসীরা ছিল আবু নিদাল নামে এক সংগঠনের সদস্য। অপহরণকারীরা নীরজাকে সব যাত্রীর পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিয়ে আসার আদেশ দেয় যেন তারা এদের মধ্যে আমেরিকানদের চিহ্নিত করতে পারে। কিন্তু সাহসী নারী নীরজা ৪১ জন আমেরিকান যাত্রীর প্রাণ রক্ষার্থে তাদের অনেকের পাসপোর্ট বিমানের সিটের নিচে লুকিয়ে রাখেন এবং কিছু ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেন।

১৭ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর সময় শেষে শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীরা বিমানে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। নীরজা এসময় বুদ্ধিমত্তার সাথে জরুরী নির্গমন এর দরজা খুলে দিয়ে বেশ কিছু সংখ্যক যাত্রীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন।

অপহরণ এর শেষ সময়ে এসে যখন অপহরণকারীরা শেষ রক্তপাতে মেতে উঠে নীরজা তখন ৩ জন শিশুকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজে গুলিবিদ্ধ হন এবং মাত্র ২২ বছর বয়সে। নিজের ২৩ তম জন্মদিন এর দুইদিন আগে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

মানবতার জন্য তার এই আত্মত্যাগ তাকে পুরো বিশ্বের কাছে এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপন করে। নিজের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি প্রথম নারী হিসেবে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার অশোক চক্রে ভূষিত হন। এছাড়াও পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র এর সরকার পক্ষ থেকে এবং ভারতের বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয় এর পক্ষ থেকে তাকে তার সাহসিকতার জন্য মরণোত্তর পুরস্কার দেয়া হয়।