ঢাকা, বুধবার ২৪, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২৮:২৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল কুড়িগ্রামে তাপদাহ: বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৮ পিএম, ৫ জানুয়ারি ২০২০ রবিবার

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) তথা ন্যাশনালইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টার (এনআইসি)। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, কিডনি রোগ, গর্ভবতী নারী, বয়স্ক লোকজন, ২ বছরের নিচে শিশু, ৬৫+ ব্যক্তিদের সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আজ রোববার আইইডিসিআর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন আইডিসিআর-এর পরিচালক ডাক্তার মীরজাদি সাব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা (এইচওয়ানএনওয়ান) ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ভাইরাসটি সোয়াইন ফ্লু নয়। ২০১০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে ইনফ্লুয়েঞ্জা আছে সেটি সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসেবে আছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ শতাংশ মানুষ এইচওয়ান এনওয়ান ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্তের সময়কাল এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর। তবে, সারা বছরই মানুষ এ ধরণের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

তিনি জানান, ২০১৯ সালে দেশে যেসব হাসপাতালগুলোতে আইইডিসিআর তথ্য সংগ্রহ করে সেখানকার সেকেন্ডারি লেভেলের ১০টি হাসপাতালে ২০১৯ সালে ৬৩৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছে। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৯৩ জন। ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০১৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছিল ২৪০০ জন এইচথ্রি ভাইরাসে আক্রান্ত। এরমধ্যে এইচওয়ান এনওয়ান ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল ২২৬২ জন।

বছরজুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান, ডা. মীরজাদী ।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, ইদানিং সোয়াইনফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানারকম সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) তথা ন্যাশনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টার (এনআইসি) এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছে, যাতে সাধারণ জনগণ এ ব্যাপারে কোন বিভ্রান্তিতে না পড়েন।

সোয়াইনফ্লু নামে কোন ভাইরাস বর্তমান বিশ্বে মানুষকে আক্রান্ত করে না। এখানে উল্লেখ্য ২০০৯ সালে সারা পৃথিবীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী দেখা দিয়েছিল এবং তখনকার ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে সোয়াইনফ্লু নামে অনেকে আখ্যায়িত করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১০ সালে মহামারী শেষ হয়ে যাওয়ার পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসকে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে অভিহিত করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা জারী করে। ২০১১ সাল থেকে এই ভাইরাসটি মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে পরিচিত।

বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা পরিস্থতি নিয়ে আইইডিসিআর এবং এনআইসি বলছে, বাংলাদেশের মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং এভিয়ানসহ অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের নজরদারীতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে আইইডিসিআর। বাংলাদেশে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা মূলত শুরু হয় এপ্রিল মাসে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বছরের অন্যান্য সময়ে এই সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য।

মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা সাধারণত ৪-৫ দিনে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য কখনো কখনো মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, কিডনি রোগ, গর্ভবতী নারী, বয়স্ক লোকজন, ২ বছরের নিচে শিশুদের সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণদের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরী। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে (আমেরিকা, ইউরোপে) মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে এবং এই মৌসুমে প্রবাস থেকে অনেকে দেশে বেড়াতে আসেন। এই সময়ে বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

ডা. মীরজাদী বলেন, সাধারণ জনগণের জন্য আমাদের অনুরোধ, এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। কিন্তু সতর্ক থাকা জরুরী। বিশেষ করে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনসাধারণ এ রকম সম্ভাবনা দেখা দিলে জরুরীভিত্তিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আইইডিসিআর এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

রোগের লক্ষণসমূহ সম্পর্কে ডা. মীরজাদী বলেন, জ্বর, জ্বর জ্বর ভাব, কাশি, গলা ব্যথা,সর্দি, মাথাব্যথা, বডি মাশল, ফ্যাটিগ, বমি ডায়রিয়া।

তিনি জানান, এই ভাইরাস বাতাসে বাঁচতে পারেনা। তাই কারো হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে সরাসরি অন্যের দেশে সংক্রমিত হতে পারে।

যারা ঝুঁকিপূর্ণ তাদের জন্য জানুয়ারির শেষে এবং ফেব্রুয়ারির শুরুতে এই ভাইরাস সংক্রান্ত ভ্যাকসিন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দেয়া যায় এবং এটা দিলে অনেক ধরণের জটিলতা কাজ কমে আসবে বলে জানান, আইইডিসিআর এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. এ. এস. এ. আলমগীর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সারা বছর ধরেই ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়। তাই এটি নিয়ে ভয় পাবার কােন কারণ নেই। কোন রোগী ইনফ্লুয়েঞ্জায় মৃত্যু বরণ করে না। তবে তার অন্যান্য জটিল রোগ থাকলে তার জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।

ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে আইইডিসিআর’র দেয়া সতর্কতাসমূহঃ
হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় পরিষ্কার রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন।
রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার না থাকলে জামার হাতা/শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক-মুখ ঢাকুন এবং ঘরে ফিরে ঐ জামা-শাড়ি সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
যেখানে-সেখানে কফ্-থুতু ফেলবেন না।
ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যেখানে সেখানে না ফেলে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন।
হাঁচি-কাশির পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভাল করে ধুয়ে নিন।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভাল করে ধুয়ে নিন।
জ্বর-সর্দি-কাশি হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি (পাঁচ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি এবংআগে থেকেই হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট অথবা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমনঃডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্নায়ুর রোগ,ক্যান্সার ইত্যাদিতে ভুগছেন) যদি ফ্লু আক্রান্ত হন, জরুরীভিত্তিতে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।