ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৯:১৯:২১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

এই বসন্তে ঘুরে আসুন তাহিরপুরের শিমুল বাগান

শারমিন সুলতানা | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫৮ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগান

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগান

রঙ বেরঙের নানা রকমের ফুলে ভরা থাকে বসন্ত ঋতু। তবে পাতাবিহীন শিমুলের গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরা থাকে বসন্তের প্রথম মাস ফাল্গুনেই। বসন্তে রঙিন হয়ে ওঠা শিমুল বাগান দেখতে চাইলে তাই এ সময়টাতেই যেতে হবে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান এটি। তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রামের প্রায় ১০০ বিঘারও বেশি জায়গা জুড়ে এই শিমুল বাগানের অবস্থান।

২০০২ সালে তাহিরপুরের বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন পার্শ্ববর্তী বড়দল উওর ইউনিয়নের মাণিগাঁও গ্রামে মরুময় বালু চরে শতবিঘা পতিত জমিতে ১ হাজার শিমুল তুলোর গাছ রোপনের মধ্য দিয়ে ওই বাগান গড়ে তোলেন। পরে তিনি মৃত্যু বরণ করলেও ওই দৃষ্টি নন্দন বাগানের কারণেই আজো দেশী-বিদেশী লাখো পর্যটন ভ্রমণ পিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমিরা এ বাগানে বেড়াতে এসে বৃক্ষপ্রেমি প্রয়াত জয়নাল আবেদীনের কথা স্মরণ করেন শ্রদ্ধার সাথে।

প্রয়াত জয়নাল আবেদীনের ওই বাগান তৈরীতে কয়েকটি লক্ষ ও উদ্দেশ্য ছিল। এর একটি হল নদী তীরবর্তী ওই পতিত মরুময় বালু ভূমিকে খর রাতা সীমান্ত নদী জাদুকাটা মাহারামের আগ্রাসী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করা, বাগানের গাছের পাতা –ঢালপালা থেকে লাকড়ি, দেশীয় তুলা, গবাধি পশুর জন্য সবুজ ঘাঁস সংগ্রহ করা। এছাড়া প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পর্যটক আকৃষ্ট করা এবং এলাকার লোকজনকে বাগান সৃজনে উৎসাহী করা।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীর ধুলোময় পথ পেরিয়ে খানিকটা যেতেই চোখে পড়বে শিমুলের অপরূপ রূপ। মেঘালয়ের দূর পাহাড়টাকেও মনে হবে যেন শিমুল বাগানের গা ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে। মনে হবে যেন শিমুল ফুলের লাল রঙের ছোঁয়া লেগেছে ঔ দূর পাহাড় আর আকাশের গায়েও। এই রঙের ঘোর কাটতে না কাটতেই দেখা মিলবে মূল বাগানটির। সেখানে সারি সারি শিমুল গাছগুলো এই বসন্তে পাতা হারিয়ে সেজেছে ফুলের সাজে। তাদের রঙে নিজেকেও মনে হবে রঙিন। সব ক্লান্তিকে ছুটি দিয়ে কেবল যেন স্নিগ্ধ, সতেজ অনুভূতির জয়জয়কার এখানে।

শহরের ক্লান্তিময় কর্মব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে খুব সহজেই একদিনের জন্য ঘুরে আসা যায় এ জায়গাটা থেকে। চাইলে অফিস ছুটি না নিয়েও সম্ভব ঘুরে আসা। সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতের বাসে উঠে পরদিন ভোরবেলা পৌঁছতে হবে সুনামগঞ্জ। সেখান থেকে বাইক রিজার্ভ করে যেতে হবে শিমুল বাগান। সারাদিন ঘুরে একইভাবে আবার রাতের বাসে চেপে শনিবার ভোরবেলাতেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকাতে।

যাদুকাটা নদী পার হয়ে যেতে হয় শিমুল বাগান। তাই দেখা হয়ে যাবে নদীটিও। আবার শিমুল বাগানের খুব কাছেই বারেক টিলার অবস্থান। পাশাপাশি নীলাদ্রি লেকটিও দূরে নয় খুব একটা। কাজেই ইচ্ছে থাকলে শিমুল বাগানের পাশাপাশি ঘোরা যাবে আরো তিনটি স্থানে।

এসে গেছে বসন্তকাল আর কিছুদিন পরেই বাজারে উঠবে তরমুজ। এই তরমুজ বাগান দেখা হয়ে যাবে শিমুল বাগান যাওয়ার পথেই। রাস্তার দু’ধার দিয়ে তরমুজ ক্ষেতে হয়ে থাকা তরমুজগুলো দৃষ্টি কাড়বে যে কারোরই। বাইক থামিয়ে তরমুজ বাগান উপভোগ করা যাবে। পাশাপাশি ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে দু একটা পাক তরমুজ কিনেও খাওয়া যাবে।

সুনামগঞ্জের যে জায়গাটিতে বাস থামবে সেখানটাতেই পানসি হোটেলের অবস্থান। সকালের নাস্তার পাশাপাশি রাতের খাবারের অর্ডার দিয়ে যাওয়া যাবে ওখানেই। পানসি হোটেলের খাবারের মান খুব ভালো। দুপুরের খাবারের জন্যও চিন্তার কোন কারণ নেই। বারেক টিলার পাশেই রয়েছে খাবারের হোটেল। চাইলে আরেকটু দূরে গিয়ে খাওয়া যাবে বড়ছড়া বাজারেও। 

যাদুকাটার পাশের টেকেরঘাটের বড় বাজারেও মিলবে মোটামুটি মানের খাবার। খাওয়া ও ঘোরাসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়বে জনপ্রতি সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা।