ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ২১:১৮:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

একটি ভেড়া বদলে দিয়েছে রেহেনার ভাগ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৬ পিএম, ৯ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সততা, আত্মবিশ্বাস ও শ্রম দিয়ে একজন মানুষ তার জীবনের চিত্র বদলাতে পারে। তারই যেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা গ্রামের রেহেনা বেগম। ভেড়া পালন করে বদলেছেন ভাগ্য। তিনি এখন এ গ্রামের উদাহরণ। 

পৃথক সংসার শুরু করার সময় শাশুড়ির কাছ থেকে পেয়েছিলেন মাত্র একটি ভেড়া। সেই একটি ভেড়া থেকে তার খামারে হয় দুই শতাধিক ভেড়া। তবে গত কোরবানির ঈদে তিনি শতাধিক ভেড়া বিক্রি করেছেন।

রেহেনা বলেন, বাবা-মায়ের সংসারে অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারিনি। এমনকি দুবেলা ঠিক মতো খাবারও থেকে পারতাম না। অল্প বয়সে একই উপজেলার হরেন্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তখন আমার স্বামী ভ্যান চালাতো। ৫ শতকের ওপর পুরানো ভাঙা একটা বাড়ি ছিলো শ্বশুরের। সেখানেই সবাই থাকতাম। স্বামীর ভ্যান চালানো টাকা দিয়ে খুব কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে সংসার চলতো। ভাতের মাড়, খুদের ভাত খেয়েও দিন পার করেছি। পরে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেছি। এর মাঝে রাশেদ ও আশিক নামে দুই ছেলে আসে আমারে ঘরে। তখন আরও খরচ বেড়ে যায়। পরে সংসার আলাদা হওয়ার সময় শাশুড়ি আমাকে একটা ভেড়া দেন। সেটা প্রথমবারে ২টি বাচ্চা জন্ম দেয়। এরপর বাড়তে থাকে। প্রথম কয়েক বছর ভেড়া বিক্রি করিনি। এরপর প্রতি বছরই ভেড়া বাড়তে থাকে। সেই থেকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। 

ভেড়া বিক্রি করে রেহেনা তার বড় ছেলে রাশেদ হোসেনকে একটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে আশিককে স্থানীয় হাকিমপুর কৈজড়ি বিএনআর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াশুনা করাচ্ছেন। এছাড়া, তিনি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে আরও ৫ শতক জায়গা, দেড় লাখ হাজার টাকা দিয়ে ২টি গাভি ক্রয় করেছেন। এখন তার খামারে ছোট বড় মিলে প্রায় ১০০টি ভেড়া আছে। 

রেহেনার স্বামী আব্দুর রহিম জানান, এক সময় টাকা পয়সার অভাবে তিনি সংসার চালাতে পারতেন না। অভাব অনটন ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী। তিনি সব সময় হতাশায় ভুগতেন। কিন্তু তার স্ত্রীর জন্য সংসারে অনেক উন্নতি হয়েছে। আগামীতে তিনি ছেলেদের নিয়ে গরুর খামার করবেন বলে জানান। 


রেহেনার ছেলে আশিক বলেন, বড় ভাই ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করছে, আর আমি স্কুলে আছি। স্কুলে যাওয়ার আগে এবং স্কুল থেকে এসে আমি ভেড়াগুলোকে ঘাস খাওয়াতে মাঠে নিয়ে আসি। অন‌্য সময় ভেড়াগুলোর পরিচর্যা করেন আমার মা। 

উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিয়ায কাজমীর বলেন, রেহেনা বেগম ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে এ উপজেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি তাকে সরকারিভাবে ভেড়া পালনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। যাতে ভেড়া পালন তার জন্য সহজ হয়। তাকে দেখে অন্যরাও ভেড়া পালন করবেন বলে আশা করছি।