ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১০:১৭:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে

ছেলে না হওয়ায় ৪০ দিনের কন্যাশিশুকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৩৬ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২০ শনিবার

বরগুনায় ছেলে না হওয়ায় ৪০ দিনের কন্যাশিশুকে হত্যা

বরগুনায় ছেলে না হওয়ায় ৪০ দিনের কন্যাশিশুকে হত্যা

ছেলে না হওয়ায় ৪০ দিনের কন্যাশিশুকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেছেন পাষন্ড বাবা।  বরগুনার আমতলী থানার গোজখালী গ্রামে এই নির্মম ঝটনা ঘটে।

জানা গেছে, পরপর দুটি মেয়ের বাবা হন গোজখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদার। তৃতীয়বার আশায় ছিলেন ছেলে হবে। কিন্তু এবারও মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একটি জামাও কিনে দেননি ছোট্ট মেয়েটিকে। এছাড়াও নানা আচরণের মধ্য দিয়ে প্রায়ই রাগ প্রকাশ করতেন। বিষয়টি টের পান প্রতিবেশীরাও। দিন দিন বাড়তে থাকে তার ক্ষোভ ও হতাশা। অবশেষে ৪০ দিন বয়সী জিদনী নামের ওই শিশুকন্যাকে পানিতে ফেলে হত্যা করেন ‘পাষ- বাবা’!

প্রতিবেশী ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা- ছেলে না হওয়ার ক্ষোভে জাহাঙ্গীরই মেয়েকে হত্যা করেছেন।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনার হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।  গতকাল শুক্রবার দুপুরে শিশুর মা সীমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওসি আরও বলেন, শিশুটির মা জানিয়েছেন- ঘটনার সময় জাহাঙ্গীর সিকদার ঘরে একাই ছিলেন। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তিনি এখনো হত্যার কথা স্বীকার করেননি। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাবাই মেয়েকে হত্যা করেছেন।

শিশুটির মা সীমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার গর্ভে তৃতীয় মেয়ে জন্ম হওয়ায় স্বামী খুশি হতে পারেননি। আমার ৪০ দিন বয়সী মেয়ে জিদনীকে এভাবে মেরে ফেলল।’

পানিতে ফেলে শিশু হত্যার খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মহরম আলী, সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী- তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম ও আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোজখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদার ও সীমা দম্পতির সোহাগী (৯) ও জান্নাতী (৩) নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর গত ৮ ডিসেম্বর ওই দম্পতির জিদনী নামে আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জাহাঙ্গীর সিকদার জিদনীকে নিয়ে ঘরের মধ্যে শুয়ে ছিলেন। এ সময় তার স্ত্রী সীমা বেগম ও শাশুড়ি পারুল বেগম বসতঘরের বাইরে বসে চাল ঝাড়ছিলেন। কাজ শেষে রাত ১১টায় শিশুটির মা সীমা বেগম ও নানি পারুল ঘরে গিয়ে জিদনীকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। প্রতিবেশীসহ বাড়ির অন্য লোকজন ছুটে আসেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘরের পেছনের ডোবায় পানিতে জিদনীর কাঁথা-বালিশ ও বিছানাপত্রসহ মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে আমতলী থানাপুলিশ রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, আবারো কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় স্ত্রী সীমা বেগমের সঙ্গে রাগ করে কথা বলতেন না জাহাঙ্গীর সিকদার। জন্মের পর জিদনীকে নতুন কোনো কাপড়ও কিনে দেননি তিনি।