ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৫:৪৯:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

ঢাকায় পানি ফোটাতে অপচয় ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:১৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ওয়াসার পানি নিম্নমানের হওয়ায় ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। এই পানি ফোটাতে গিয়ে বছরে বাসাবাড়িতে ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস পুড়ছে। আর এতে জ্বালানি বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

বুধবার রাজধানীতে দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি উম্মুক্ত করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদন তৈরিতে টিআইবি ১০টি জোনের দুই হাজার ৭৬৮ জন ওয়াসার সংযোগ গ্রহণকারীর কাছ তথ্য সংগ্রহ করে। সেখানে ২০ দশমিক ৬ শতাংশ গ্রাহক বছরে সবসময় পানি সরবরাহে ঘাটতির কথা বলেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক শহিদুল ইসলাম ও শাহনূর রহমান। এই গবেষণার জন্য টিআইবি একটি জরিপ করে। এতে সেবার মান, দুর্নীতি, গ্রাহক সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি, অনিয়ম, সীমাবদ্ধতাসহ চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এশিয়ার কোনও দেশে পানি ফুটিয়ে পান করে না। ঢাকা ওয়াসাকে এই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখা দরকার।

চাহিদা অনুযায়ী পানি পায় না এমন হার বস্তি এলাকায় সবচেয়ে বেশি। সেখানে ৭১ দশমিক ৯ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পায় না। আবাসিক এলাকায় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ, বাণিজ্যিক এলাকায় ৩৪দশমিক ৯ শতাংশ ও শিল্প এলাকায় ১৯ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না। সার্বিক সেবাগ্রহীতাদের ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পায় না বলে টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবাগ্রহীতাদের ৮৬ দশমিক ২ ভাগ ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫ দশমিক ৮ ভাগ দালালকে ঘুষ দিয়ে থাকে। এর মধ্যে পানির সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে ২০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা, পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করার জন্য ৩০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহ করতে ২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা, মিটার ক্রয় বা পরিবর্তন করার জন্য ১,০০০ থেকে ১,৫০০০ টাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ৫০ থেকে ৩,০০০ টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপন করতে এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াসার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ করা হয়। এছাড়া বিশেষ সময়ে বোর্ডের সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে পদায়ন ও বদলিতে সংস্থাটির অনিয়ম আছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এছাড়া প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে সিবিএ’র অযাচিত হস্তক্ষেপ আছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গ্রাহক সেবায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করে টিআইবি জানিয়েছে, সেবাগ্রহীতাদের (জুলাই-২০১৭-জুন ২০১৮ সময়কালে) ২৬ দশমিক ৯ ভাগ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবায় ঢাকায় ওয়াসার সাথে সরাসরি করলেও ৬১ দশমিক ৯ ভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার।

প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ভিশন ও মিশন অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিতে ওয়াসার সক্ষমতা ও উদ্যোগের ঘাটতি আছে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার নিম্নমান এবং সেবা সম্পর্কে প্রায় এক থেকে তৃতীয়াংশের বেশি সেবাগ্রহীতা অসন্তুষ্ট।

এই সময়ে অনুষ্ঠানে টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বক্তব্য দেন।

-জেডসি