ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ২৩:২৪:৩১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

দিনটি আনন্দের না হয়ে কান্নাভেজা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:৫৫ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৯ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজীর কিশোরী নুসরাত জাহান রাফির মা আজ আবার কেঁদেছেন। হওয়ারই কথা। তার কন্যা যে দুটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তার দুটিতেই তিনি ভালো ফল করেছেন। ‘এ’ পেয়েছেন।

ফেনীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিমের দুটি পরীক্ষা দেওয়ার পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয় মেয়েটিকে। আর বুধবার সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন নুসরাতের দুটি বিষয়ের ফলাফলও জানা যায়।

কুরআন ও হাদিস পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পাওয়া নুসরাতের সার্বিক ফলাফল অবশ্য ‘অকৃতকার্য’। কারণ, আর কোনো পরীক্ষা তার দেওয়া হয়নি।

মেয়েটির কলেজে বহুজনের আজ হাসার, উৎফুল্ল হওয়ার কথা। কিন্তু কেউ হাসেনি। উল্টোটা হয়েছে, তারা কেঁদেছে। মেয়েটির জন্য শূন্যতার কারণ যতটুকু, তার চেয়ে তার দুটি বিষয়ে ফলাফলের পর আফসোসের কারণে। হতাশ শিক্ষকরাও ধরে রাখতে পারেননি আবেগ।

নুসরাতের প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। নুসরাতসহ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ২৭ জন।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হুসাইন বলেন, “নুসরাত কোরআন মাজিদ, হাদিস ও উসুলে হাদিস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সে এতে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে।”

নুসরাতের সহপাঠিরা বলেন, সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারলে ও  ভালো ফলাফল করতো। লেখাপড়ার প্রতি তার ভীষণ আগ্রহ ছিল। যে কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

ফলাফল জানতে আসা নুসরাতের সহপাঠী তামান্না বলেন, “আজ  নুসরাতেরও পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে আনন্দে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সে আমাদের মাঝে নেই। দুটি পরীক্ষায় সে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। বাকি পরীক্ষা দিতে পারলে নুসরাত ভালো ফলাফল করত বলে আমার বিশ্বাস।”

আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর থেকে বিলাপ করছিলেন নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে দুনিয়ার পরীক্ষায় পাস করতে না পারলেও আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করবে।’

কাঁদতে কাঁদতে নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘সকালে নুসরাতের বেশ কয়েকজন সহপাঠী ফোন দিয়ে রেজাল্টের খবর জানায়। ওরা নুসরাতের কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে। নুসরাত পরীক্ষা দিতে পারলে সেও ভালো রেজাল্ট করত।’

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় একইদিন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনার পর থেকে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নানাভাবে নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু মামলা তোলেনি পরিবার। ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

এই ঘটনায় নতুন করে হওয়া হত্যা মামলায় বরখাস্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিচার চলছে আদালতে।

-জেডসি