ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৫:৩১:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৯ সোমবার

রাজধানীর পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী।  ফাইল ছবি

রাজধানীর পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী। ফাইল ছবি

সকল ধর্মাবলম্বীর জন্য যথাযথ মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিয়ে দেশে উৎসব উদযাপনের সহনীয় পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার সমর্থ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমাদের উৎসবগুলোতে সবাই আমরা এক হয়ে উদযাপন করি। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার বিকেলে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহা নবমীর দিনে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনের পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।

তিনি এ সময় দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানকারী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে আমরা এক এক হয়ে পথ চলি।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকের ধর্মকে আমরা সম্মান করি এবং আমরা চাই আমাদের দেশে শান্তি বজায় থাকুক। এদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি-এ ধরনের যেসব ব্যাধি সমাজকে নষ্ট করে, দেশকে নষ্ট করে, পরিবারকে নষ্ট করে, পরিবারির জীবনকে অতিষ্ঠ করে, তা যেন না থাকে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শান্তি বজায় থাকবে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধি হবে। বাংলাদেশের উন্নতি হবে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যহত থাকবে এটাই আমরা চাই।

বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে চমৎকার একটা পরিবেশ যে-আমাদের ঈদের জামাত যখন অনুষ্ঠিত হয়, তখন আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের যুব সমাজ সেখানে কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। আবার যখন পূজা-পার্বন হয়, আমাদের মুসলমান সমাজের যুবকরা সেখানে উপস্থিত থাকে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে।

তিনি আরও বলেন, একটা সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ যে আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি। এটাই হচ্ছে সব ধর্মের মূলকথা- শান্তি ও মানবতা। এই শান্তি এবং মানবতার লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি।

মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের সব ধর্মের মানুষ-হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে।

দিল্লী সফরে থাকার সময় সেখান থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ যৌথভাবে রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রাবাস এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী এবং রামকৃষ্ণ মিশন মঠ ও হেড অব মিশন স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

এরআগে রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকার প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ। তিনি সেখানে পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে যান এবং সেখানে বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক মানুষের মধ্যে যদি সহনশীলতা থাকে এবং একে অপরের প্রতি সম্মান এবং সহানুভূতি থাকে সেটাই একটি দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে এবং একটি দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হতে পারে।

তিনি বলেন, বাবা-মা, আপনজন হারানোর শোক ব্যথা বুকে নিয়েও দিন-রাত পরিশ্রম করেছি-শুধু একটা কথা চিন্তা করেছি, এই দেশকে গড়ে তুলতে হবে, দেশের মানুষের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে হবে।

যে মানুষগুলোর কথা চিরদিন আমার বাবা চিন্তা করেছেন। আমার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা যে জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং চেয়েছেন এই দেশের মানুষ যেন একটা সুন্দর জীবন পায়, বলেন তিনি।

সরকার এই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত এবং উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যার সুফলটা আজকে সারাদেশের মানুষ পাচ্ছে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একেবারে গ্রামের মানুষ থেকে নিয়ে শুরু করে রাজধানীর মানুষ পর্যন্ত তার সুফলটা ভোগ করতে শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মানুষের মাঝে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ এসেছে বলেই আপনারা দেখছেন প্রতিনিয়ত পূজা মন্ডপের সংখ্যা কেবল বেড়েই চলেছে।

তিনি এসময় পূজায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশসহ সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালনের প্রশংসা করেন। তিনি কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে পূজার আয়োজন না করে প্রতিষ্ঠিত পূজা মন্ডপগুলোতেই পূজা অনুষ্ঠানের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, যেখানে পূজা মন্ডপগুলো রয়েছে সেখানেই সবাই যদি সম্মিলিতভাব পূজাগুলো করে তাহলে এর নিরপত্তা দেওয়াটা আরো সহজ হয়ে যায়। আর সুন্দর পরিবেশটাও আমরা সৃষ্টি করতে পারি। যেটা আমি পূজা কমিটিকে সবসময়ই বলি।

‘আজকে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে, মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের মনে একটা আনন্দ উৎসব আছে বলেই আজকে কিন্তু পূজার সংখ্যা বেড়েছে। তাতে কোন সন্দেহ নাই। যেভাবে আমরা সকল ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে উৎসবটা পালন করছি সেই পরিবেশটা যেন বজায় থাকে, সেটাই আমরা চাই, ’যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত যে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন ইনশাল্লাহ সেই বাংলাদেশই আমরা গড়ে তুলতে সক্ষম হব।

তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যখন পূজা করেন তখন বাংলাদেশের জন্যও দোয়া করবেন যাতে দেশের সকল মানুষ সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে থাকতে পারে। সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেরই যেন মঙ্গল হয়, উন্নত জীবন হয়, দারিদ্রের হাত থেকে সকলেই যেন মুক্তি পেয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন যাপন করতে পারে। আমাদের দেশ নিয়ে বিশ্বে আজকে আমরা যে গর্ব করে যাচ্ছি সে গর্ব যেন করে যেতে পারি।

মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।