ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৮:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
চট্টগ্রামে আজ শুরু উইম্যান এসএমই এক্সপো হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি

ফেসবুকে তরুণদের প্রেমের ফাঁদে ফেলেন কাজল

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৫২ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী কলাবাগান এলাকায় অপহরণ হওয়া এক ব্যক্তিকে ছয় দিন পর সাভারের আমিন বাজার থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। অপহৃত ব্যক্তির নাম মো. রায়হান। তিনি ফেসবুকে কাজল বেগম নামে এক সুন্দরী নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। পরে প্রেমের টানে ডেটিং করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন রায়হান। তাকে উদ্ধারের সময় অপহরকারী চক্রের ৫ সদস্যকেও গ্রেফতার করে র‍্যাব।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

তিনি জানান, গতকাল বুধবার রাতে সাভারের আমিন বাজারে অভিযান চালিয়ে কথিত সেই প্রেমিকাসহ অপহরণ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় অপহৃত ব্যক্তি ও একটি প্রাইভেটকারও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা হলেন, মো. আজিজুল হাকিম (৪০), মো. লিটন মোল্লা (২৬), মোসা. কাজল বেগম (২৬), মো. নজরুল ইসলাম নবু (৪২) ও নুরু মিয়া ওরফে নুর ইসলাম ওরফে কাকা ওরফে মোল্লা (৬২)।

তিনি আরো জানান, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অনেক সুন্দরী মেয়ের দ্বারা ফেইসবুকের ফেইক আইডি খোলে। এরপর ওই ফেক আইডি থেকে নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও চাকরীজীবীদেরকে টার্গেট করে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করে। ফেসবুকে কথা বলার একপর্যায়ে ওই মেয়ে সেই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে নানা কৌশলে তার সঙ্গে ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী সর্বশেষ ভিকটিমের সঙ্গে ডেটিং করার বায়না করে তাকে ডেকে নিয়ে আপহরণ করে।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, কাজল বেগম নামের গ্রেফতারকৃত নারী রায়হানের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ডেটিংয়ের কথা বলে ১২ এপ্রিল রাতে ডেকে নেয়। সেই রাতেই তাকে কলাবাগান এলাকা থেকে একটি প্রাইভেটকারে করে নিয়ে যায় সাভারের আমীন বাজার এলাকায়। সেখানে তাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করে পরিবারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে মুক্তিপণ চাওয়া হয়।

র‍্যাব জানায়, অপহৃত রায়হানের পূর্ব পরিচিত ছিল বাহার, বাহারের প্রাইভেটকারে করেই কলাবাগান থেকে আমিন বাজার এলাকার একটি অজ্ঞাতনামা বিল্ডিংয়ে নিয়ে আটকে রাখা হয় রায়হানকে। অপহরণকারীরা ওই রাতেই রায়হানের হাত ও চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর টানা ৬ দিন ধরে আটকে অমানসিক শারীরিক নির্যাতন করে। এ সময় রায়হানকে মারধর করে তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের শব্দ ও কান্নার চিৎকার শোনাত অপহরণকারীরা। প্রথমে তার পরিবারের নিকট ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা রায়হানের বাবা ও বোনের নম্বরে যোগাযোগ করে সর্বশেষ পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে দফারফা করে। তাদের কথা মতো ১৫ এপ্রিল রাতে মিরপুর ষাটফিট ভাংগা ব্রিজ এলাকায় অপহরণকারীদের এক লাখ টাকা দেয় রায়হানের পরিবার। এরপর অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় যে, বাকি চার লাখ টাকা না দিলে রায়হানকে মুক্তি দেবে না। বেশি দেরি করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন তারা।

র‍্যাব-৪ সূত্রে জানা যায়, রায়হানের পরিবারের দেয়া অপহরণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে উদ্ধারে র‌্যাব-৪ এর একটি দল কাজ শুরু করে। এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটায় অভিযান পরিচালনা করে রায়হানকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের মধ্যে সেই কথিত প্রেমিকা কাজল বেগমও আছেন। এ সময় অপহরণকারীদের অপহরণের কাজে ব্যবহার করা প্রাইভেটকারটিও উদ্ধার করে র‍্যাব।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তার আসামিগণ গত ১০ বৎসর যাবৎ বিভিন্ন পন্থায় ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও চাকুরীজীবী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে টার্গেট অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছিল। মানুষকে ফাঁদে ফেলতে তারা বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন ও কৌশল অবলম্বন করে আসছিল।

নারী দিয়ে ফাঁদ পাতা ছাড়াও তারা, ঢাকাসহ আশপাশের বাস স্টেশন থেকে যাত্রীদের মাইক্রো বা প্রাইভেটকারে অন্যত্র নামিয়ে দেবার কথা বলে তুলে নিত। এরপর গাড়িতে ওঠানোর সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীবেশে থাকা তাদের ৩/৪ জন সঙ্গী গাড়ি চলা অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে অজ্ঞান করে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলতো। অজ্ঞান করে হাত-পা বেঁধে অপহৃত ব্যক্তিকে পহরণকারীরা তাদের পরিকল্পিত এলাকায় নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতো।

-জেডসি