ঢাকা, বুধবার ২৪, এপ্রিল ২০২৪ ১৩:১২:২০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা নতুন করে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

বাংলাদেশিদের পুশব্যাক বিষয়ে কিছুই জানতাম না: মমতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৩৭ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

সম্প্রতি ভারত থেকে শত শত কথিত বাংলাদেশিকে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, এই ব্যাপারে কিছুই জানতাম না।এখানে যখন ওদের পাঠিয়েছিল, আমাদের বলে-কয়ে কিছু পাঠায়নি। ওরা এখানে আসার পর আমরা দেখলাম।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই ধরনের কথিত 'পুশব্যাকে'র প্রশ্নে তার সরকার সিদ্ধান্ত নেবে মানবিকতার ভিত্তিতেই।

রাজ্যের অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা-কারণ তার সরকারের সক্রিয় সমর্থন ছাড়া সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের সীমান্তের অন্য পারে ঠেলে দেয়া কিছুতেই সম্ভব নয়।

বস্তুত ভারতের নানা প্রান্ত থেকে অবৈধ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক নারী-পুরুষদের দলে দলে কলকাতায় নিয়ে এসে গোপনে ও জোর করে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করে আসছে মাসদুয়েক আগে থেকেই।

নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ব্যাঙ্গালোর থেকে ৫৯ জনের এমনই একটি দলকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু দিনতিনেক বাদেই তারা সবাই রাতারাতি উধাও হয়ে যান।

গত সপ্তাহান্তে বিবিসি উর্দুকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তখন ওদের খাবার-দাবারও কিছু জোটেনি। এরপর দুইদিনের জন্য আমরা ওদের এখানে থাকা-খাওয়ার সব বন্দোবস্ত করেছিলাম। কিন্তু, তারপর ওদের কী হলো, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে আর কোনো খবর নেই।

কিন্তু তাহলে ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার যখন এভাবে কথিত বাংলাদেশিদের সীমান্তের অন্য পারে ঠেলে দিতে চায়, সেখানে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের কি কোনো ভূমিকাই থাকে না? এই প্রশ্নের জবাবে মমতা ব্যানার্জি বলেন, এখানে আমার কী করা উচিত, কী করব সেটা এখনই আমি বলতে চাই না। এটা আসলে পরিস্থতির ওপর নির্ভর করে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামীতে কেমন পরিস্থিতি আসে, লোকজন বিষয়টা নিয়ে কী ভাবছে, কী ঘটছে, কোনটা সঠিক বা কোনটা বেঠিক হচ্ছে, কীসে মানবিকতা আছে, কীসে ন্যায় আছে সেটাও আমাদের দেখতে হয়।তবে এটাও বলব, আমাদের ভারত এক বিরাট দেশ, আর এখানে নাগরিকত্ব একটা নিরন্তর প্রক্রিয়া। সেখানে অমুককে বের করে দাও, তমুককে বের করে দাও, এসব যা ইচ্ছে তাই বলব, এগুলো একেবারেই ঠিক নয়। মানুষের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার ক্ষমতা কারোরই নেই!

পুশব্যাকের গোটা প্রক্রিয়া থেকে মমতা ব্যানার্জি এভাবে নিজেকে দূরে রাখতে চাইলেও পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা মাসুমের কর্ণধার কীরীটি রায় কিন্তু বলেন, যেভাবে গোটা ব্যাপারটায় রাজ্য সরকার জড়িত ছিল, তাতে বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রী মোটেই সত্যি বলছেন না।

তার কথায়, এই রাজ্যেই তো ওই বাংলাদেশিদের এতদিন ধরে রাখা হলো। সরকারের বিডিও (স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা) তাদের থাকতে দিলেন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা করল, বড় বড় পুলিশ কর্মকর্তারা তদারকি করলেন, আর এখন বলা হচ্ছে কিছুই জানতাম না?এমনকি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে ওই মানুষগুলোকে তুলেও দেয়া হয়েছে। তিন দিন পর তাদের গোপনে বর্ডারও পার করিয়ে দেয়া হয়েছে।

আপনারাই বলুন, রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া এগুলো কীভাবে সম্ভব? পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।

ব্যাঙ্গালোর থেকে নিয়ে আসা কথিত বাংলাদেশিদের জোর করে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হাওড়া রেলস্টেশনে গিয়েছিলেন অ্যাক্টিভিস্ট নিশা বিশ্বাস।তিনি বিবিসিকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে দায় এড়ানোর চেষ্টা খুবই হাস্যকর। কথিত বাংলাদেশিরা তো এখানে রাজ্য সরকারের হেফাজতেই ছিল।সেই এতগুলো লোক কি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? ভোররাতে সরকার বাস পাঠিয়ে এতগুলো লোককে তুলে নিয়ে গেল, আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমি কিছুই জানতাম না? এটা কি হয় না কি?

আমরা আরও শুনেছি এই রাজ্যের উত্তরপ্রান্তের সীমান্ত দিয়েই তাদের ঠেলে দেয়া হয়েছে। কাজেই মুখ্যমন্ত্রী যে কথা বলছেন, তা কিছুতেই সম্ভব নয়।

কীরীটি রায় বলেন, প্রতি মাসে আমরা কম করে এমন অন্তত দুটো ঘটনা পাই যেখানে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোনোর জন্য বাংলাদেশি নারী-শিশুদের বিরুদ্ধেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ক্রিমিনাল কেস দিয়ে থাকে। আর রাজ্য সরকারের পুলিশই সেই মামলাগুলো দেয়, আদালতে দাঁড়িয়ে সরকারি কৌঁসুলি সেই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে সওয়াল করে যান - এ জিনিস তো চলছেই!

এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কথিত বাংলাদেশিদের ব্যাপারে মানবিক অবস্থান নিয়ে থাকে - মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিও নস্যাৎ করে দিচ্ছেন কীরীটি রায়।সূত্র: বিবিসি বাংলা

-জেডসি