ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, এপ্রিল ২০২৪ ১০:২৬:৪৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় সুচি কৃষকরাই অর্থনীতির মূল শক্তি: স্পিকার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস অাজ, বন্ধ হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১১:৪৫ পিএম, ২০ জুন ২০১৮ বুধবার

আজ মঙ্গলবার ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। ‘প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কাল পালিত হচ্ছে দিবসটি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশে এ দিবস পালিত হয়।


দিবসটির গুরুত্ব বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। 


সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের প্রত্যাহারের লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ২৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প এবং চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকে শতভাগ শিশুশ্রম মুক্ত করা হয়েছে।


২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে শ্রম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরাসনে সম্প্রতি নতুন করে কর্মপরিকল্পানা প্রণয়ন করেছে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে কমিটি কাজ করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত।

 

এদিকে আইএলওর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিশু নানাভাবে শ্রম বিক্রি করছে। তাদের অর্ধেক প্রায় সাড়ে ৮ কোটি শিশু নানা রকম ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত। ‘জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০১৩’ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ৩৪ লাখ ৫০ হাজার শিশু কোনো না কোনো শ্রমে নিয়োজিত।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’র এক তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকরা প্রায় ৩৪৭ ধরণের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ৪৭ ধরণের কাজকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে ব্যাটারিসহ বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক কারখানায় শিশুশ্রম, ট্যানারি শিল্প, যৌনকর্ম, বিড়ি ও তামাক ফ্যাক্টরি, পরিবহন খাত, ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করা, গ্যাস ফ্যাক্টরি, লেদ মেশিন ও ওয়েল্ডিংয়ের কাজ, অটোমোবাইল কারখানা, লবণ কারখানা, রিকশা ও ভ্যানচালনা, কাঠমিস্ত্রির কাজ, জুয়েলারি শিল্পে কারিগরের কাজ, চাল ও মসলার কারখানায় কাজ, ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানার কাজ, মাদকদ্রব্য বিক্রি।

এসব কাজে নিয়োজিতদের অধিকাংশই পথশিশু। শুধুমাত্র একবেলা খাবার যোগাড় করতে এ পথশিশুরা দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে। পথশিশুদের ৬৯ শতাংশই কোন না কোন শিশুশ্রমে নিয়োজিত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পারিবারিক ও আর্থ-সামাজিক কারণে ৬ থেকে ৭ বছর বয়সেই বাংলাদেশের শিশুরা জীবন ধারণের জন্য শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৩৫ লক্ষ শিশু শ্রমিকদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে ১৩ লক্ষ শিশু, যা মোট শিশু শ্রমিকের ৪১ শতাংশ।

বছর ঘুরে বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধ দিবস আসে, চলেও যায়। শিশুশ্রম বন্ধ হয় না। বরং দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে শিশুদের ব্যবহার বেড়েই চলেছে।

রাষ্ট্রে যদি শিশুদের ন্যায্য অধিকার রক্ষা করতে না পারা যায় তাহলে তার প্রভাব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর পড়বে। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম রোধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা প্রয়োজন ঠিক এমনটা বারবার বলে আসছেন শিশু শ্রম বিরোধী সংগঠনগুলো।


শিশুর অধিকার সুরক্ষা ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইএলও ২০০২ সাল থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও, সেইভ দ্যা চিলড্রেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর সহযোগিতায় শিশুশ্রম প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনাসভা, সারা দেশে পোস্টারিং এবং লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।