ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৯:১৮:৫৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সিতারা: রণাঙ্গনের সাহসী ডাক্তার

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:২৮ পিএম, ৯ মার্চ ২০২১ মঙ্গলবার

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সিতারা বেগম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সিতারা বেগম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম (বীর প্রতীক)। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন : ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জে জন্ম সিতারা বেগমের৷ বাবা মোহাম্মদ ইসরাইল এবং মা হাকিমুন নেসা৷ তবে বৈবাহিক সূত্রে তিনি সিতারা রহমান নামে পরিচিত৷

তার বড় ভাই এটিএম হায়দারও সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন৷ স্বাধিকার আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে কুমিল্লা সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন সিতারা৷।

তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সিতারা তৃতীয়। তার বাবা ইসরাইল মিয়া পেশায় ছিলেন আইনজীবী। কিশোরগঞ্জে সিতারা বেগম শৈশব কাটান। সেখান থেকে মেট্রিক পাশ করেন তিনি। হলিক্রস কলেজে থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।

ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর সিতারা বেগম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনামেডিকেলে লেফটেন্যান্ট হিসাবে যোগ দেন। ১৯৭০ সালের উত্তাল দিনগুলোতে সিতারা বেগম কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে নিয়োজিত ছিলেন। সেই সময় তার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা মেজর এ.টি. এম.হায়দার পাকিস্তান থেকে কুমিল্লায় বদলি হয়ে আসেন। তিনি কুমিল্লার তৃতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়নে যোগ দেন।

১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিতারা ও তার ভাই হায়দার ঈদের ছুটি কাটাতে তাদের কিশোরগঞ্জের বাড়িতে যান।কিন্তু সেই সময়ে দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। হায়দার তার বোন সিতারাকে ক্যান্টনমেন্টে আর ফিরে না যাবার পরামর্শ দেন। পরে তিনি তার বোন সিতারা, বাবা-মা ও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে ভারতে পাঠিয়ে দেন। জুলাই মাসে ভাই মেজর এটিএম হায়দার আগরতলা যাওয়ার জন্য তার কাছে একটি চিঠি পাঠান৷ চিঠির সঙ্গে ছিল একটি পিস্তল৷ পথে কোথাও পাক সেনাদের হাতে ধরা পড়লে আত্মহত্যা করার জন্য সে পিস্তল পাঠিয়েছিলেন সিতারা রহমানের ভাই৷ তাদের কিশোরগঞ্জ থেকে মেঘালয়ে পৌছাতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লেগে যায়।  সেখানে পৌছে মাতৃভূমির মুক্তির জন্য সামরিক চাকরি উপেক্ষা করে রণাঙ্গনে হাজির হন ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা রহমান৷ আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নেতৃত্ব দেন এই বীর নারী৷

কর্মজীবন ও মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা : যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য মেলাঘরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল নামে ৪৮০ শয্যার একটি হাসপাতাল ছিলো। সেখানে চিকিৎসা সেবা শুরু করেন ডা. সিতারা রহমান৷ তার সাথে যোগ দেন আরো বেশ কিছু সাহসী নারী৷ তবে বিজয় পর্যন্ত বাংলাদেশ হাসপাতালের সবকিছু দেখাশোনা ও পরিচালনার দায়িত্ব ছিল ডা. সিতারার ওপর৷

ঢাকা মেডিকেলের শেষ বর্ষের অনেক ছাত্র সেখানে ছিলো। ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা সেক্টর-২ এর অধীনে সেখানের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। তাকে নিয়মিত আগরতলা থেকে ঔষধ আনার কাজ করতে হতো। হাসপাতালে একটি অপারেশন থিয়েটার ছিলো। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বাঙালি ছাড়াও সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লোকজন চিকিৎসাসেবা নিত।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ডঃ সিতারা রেডিওতে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার সংবাদ শুনে ঢাকা চলে আসেন। পরে ১৯৭৫ সালে তার ভাই মেজর হায়দার নিহত হলে ডা. সিতারা ও তার পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী ভাবে থাকা শুরু করেন।

পুরস্কার ও সম্মননা : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্যাপ্টেন ডা: সিতারা বেগমের অবদানের জন্য তৎকালীন সরকার তাকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে।