ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ৭:৫৩:৪১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল কুড়িগ্রামে তাপদাহ: বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

ভূমিকম্প হলে কি করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:২৯ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতার যে মাত্রা রয়েছে সে সূচক অনুযায়ী ঢাকা পৃথিবীর শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ শহরের অন্যতম।ঢাকায় ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির রূপ ভয়াবহ আকার নিতে পারে। ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। ফলে এখানে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও বেশি।

জলাভূমি ভরাট করে ঢাকায় অনেক আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। ভূমিকম্পের সময় এগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গাতেই জাতীয় ইমারত নির্মাণ নীতিমালা মেনে চলা হচ্ছে না। এ বিষয়ে তদারকিরও ব্যাপক অভাব রয়েছে।

ভূমিকম্প বিষয়ে অনেক সাধারণ তথ্যই সাধারণ মানুষের অজানা। ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে এবং কী করা যাবে না- এসব নিয়ে মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত ধারণা নেই বলেই অনেকের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়। ভূমিকম্প হলে অনেককেই দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। এটা মোটেও উচিৎ নয়। কারণ, এই অহেতুক ছোটাছুটি অনেক সময় আরও বেশি বিপদ হয়ে দেখা দেয়। তাই ভূমিকম্প বিষয়ে বিস্তারিত জানা জরুরী যাতে সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা যায়।

 
ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মূল কারণ : আমরা ভূমিকম্পে যে ঘরবাড়ি, অবকাঠামো ধ্বংস হতে দেখি তার জন্য মূলত দায়ী সেকেন্ডারি ওয়েভ এবং সারফেস ওয়েভগুলো। কারণ, এগুলোই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। আপনি ভূমিকম্প টের পাবার মোটামুটি ১১ সেকেন্ডের ব্যবধানে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যেই আপনাকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

পূর্ব পরিকল্পনা নেবার পূর্ব  প্রস্তুতি :

- আপনি যদি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকেন তবে খোঁজ নিন আপনার ভবনটিতে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা আছে কিনা, থাকলে তা কী মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারবে। যদি না থাকে তবে রেট্রোফিটিং-এর ব্যবস্থা নিন। কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুরনো ভবনেও রেট্রোফিটিং-এর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। জাপানে ভূমিকম্প একটি নৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু তাদের ভবনগুলিতে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকায় তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয় অতি সামান্য।

- পরিবারের সবার সাথে বসে এ ধরনের জরুরী অবস্থায় কি করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, মোট কথা আপনার পরিবারের ইমার্জেন্সি প্ল্যান ঠিক করে সব সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। ভূমিকম্পের সময় হাতে খুব সামান্যই সময় পাওয়া যাবে। এ সময় কী করবেন তা সবাইকে নিয়ে আগেই ঠিক করে রাখুন।
 
- বড় বড় এবং লম্বা ফার্নিচারগুলোকে যেমন- শেলফ ইত্যাদি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখুন যেন কম্পনের সময় গায়ের উপর পড়ে না যায়। আর টিভি, ক্যাসেট প্লেয়ার ইতাদি ভারী জিনিষগুলো মাটিতে নামিয়ে রাখুন।
 
-বিছানার পাশে সবসময় টর্চলাইট, ব্যাটারী এবং জুতো রাখুন।
 
-বছরে একবার করে হলেও ঘরের সবাই মিলে আসল ভূমিকম্পের সময় কী করবেন তার একটা ট্রায়াল দিন।
 
ভূমিকম্পের সময় করণীয় :
 
নিচের পরামর্শগুলো বেশি কার্যকরী যদি ভবনে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকে-
 
নড়াচড়া বা দৌড় দৌড়ি করবেন না :
 
ভূমিকম্পের সময় বেশি নড়াচড়া, বাইরে বের হবার চেষ্টা করা, জানালা দিয়ে লাফ দেবার চেষ্টা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা উচিত।
সাধারণ নিয়ম হল, এ সময় যত বেশি মুভমেন্ট করবেন, তত বেশি আহত হবার সম্ভাবনা থাকবে। আপনার ভবনে যদি ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকে বা রেট্রোফিটিং করা থাকে তবে ভূমিকম্পের সময় বাসায় থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ।
 
ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন :

আমেরিকান রেডক্রসের পরামর্শ অনুযায়ী- ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন বা ডাক-কাভার পদ্ধতি। অর্থাৎ কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন, তারপর কোন শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নীচে ঢুকে কাভার নিন, এমন ডেস্ক বেছে নিন বা এমনভাবে কাভার নিন যেন প্রয়োজনে আপনি কাভারসহ মুভ করতে পারেন।

কোনো ভবন ভূমিকম্পরোধক হলে তা খুব কমই ধসে পড়ে। যেটা হয় তা হল আশেপাশের বিভিন্ন জিনিস বা ফার্নিচার গায়ের উপর পড়ে আহত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এগুলো থেকে বাঁচার জন্য এ সময় কোন শক্ত ডেস্ক বা টেবিলের নিচে ঢুকে আশ্রয় নেয়া জরুরী।
 
লিফট :
 
ভূমিকম্পের সময় এলিভেটর বা লিফট ব্যবহার পরিহার করুন।
 
গাড়ি বন্ধ করে বসে থাকা :

ভূমিকম্পের সময় যদি গাড়িতে থাকেন তবে গাড়ি বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকুন। গাড়ির বাইরে থাকলে আহত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
 
আফটার শক :

মেইন শক বা মূল ভূমিকম্পের আগে এবং পরে মৃদু থেকে মাঝারি আরো কিছু ভূমিকম্প হতে পারে যেগুলো ফোরশক এবং আফটার শক নামে পরিচিত। সতর্ক না থাকলে এগুলো থেকেও বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। সাধারণত কোনো বড় ভূমিকম্পে আফটার শক প্রথম ঘণ্টার মধ্য থেকে শুরু করে কয়েক দিনের মধ্যে হতে পারে।
 
ইউটিলিটি লাইন :

প্রথম ভূমিকম্পের পর ইউটিলিটি লাইনগুলো (গ্যাস, বিদ্যুত ইত্যাদি) একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন লিক বা ড্যামেজ দেখলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন।


ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়লে করণীয়:
 
 
ধুলাবালি থেকে বাঁচার জন্য আগেই সাথে রুমাল বা তোয়ালে বা চাদরের ব্যবস্থা করে রাখুন।
 
 
আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করবেন না বা ম্যাচ জ্বালাবেন না। কারণ দালান ধ্বসে পড়লে গ্যাস পাইপ লিক হয়ে থাকতে পারে। বিশাল ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
 
শেষ চেষ্টা :

চিৎকার করে ডাকাডাকি শেষ চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করুন। কারণ, চিৎকারের সময় মুখে ক্ষতিকারক ধুলাবালি ঢুকে যেতে পারে। পাইপে বা ওয়ালে বাড়ি দিয়ে বা মুখে শিস বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন। তবে ভাল হয় সাথে যদি একটা রেফারির বাঁশি বা হুইসেল থাকে, তার প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন আগেই।