ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৩:৩০:৩৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

যশোরে ৬৮ হাজার পশু প্রস্তুত, বিক্রি নিয়ে চিন্তিত খামারিরা

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:০৯ পিএম, ৯ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার

যশোরে ৬৮ হাজার পশু প্রস্তুত, বিক্রি নিয়ে চিন্তিত খামারিরা

যশোরে ৬৮ হাজার পশু প্রস্তুত, বিক্রি নিয়ে চিন্তিত খামারিরা

প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পশু মোটাতাজা করেছেন যশোরের ১০ হাজারের বেশি খামারি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে খামারিদের।

তারা বলছেন, ঈদের আগে খামারগুলো পাইকারদের ভিড়ে মুখরিত থাকলেও এবার তাদের আনাগোনা অনেক কম। এছাড়া পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা বা  সঠিক দাম পাবেন কিনা এসব নিয়েও আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন খামারিরা।

যশোর জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবছর কোরবানির জন্য যশোরে পশুর চাহিদা রয়েছে ৬০ হাজারের বেশি। এর বিপরীতে জেলার ১০ হাজার ২৮২টি খামারে কোরবানির জন্য প্রায় ৬৮ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে।

সেই হিসাবে কোরবানির পশুর কোনো ঘাটতি থাকবে না উল্লেখ করে তা বিক্রির জন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনেই জেলায় ২৪টি পশুর হাট বসবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

জেলার বেশ কয়েকজন খামার মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা সারা বছর গরু-ছাগল লালন পালনে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে এখন পর্যন্ত খামারে কোনো পাইকারের পদধূলি পড়েনি। কিন্তু আগের বছরগুলোতে কোরবানির ঈদের দুই মাস আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে গবাদিপশুর পাইকাররা যশোরের খামারিদের কাছে এসে চুক্তিবদ্ধ হয়ে টাকা বায়না দিয়ে যেতেন।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর এলাকার খামারি মহাব্বত হোসেন জানান, তার খামারে ১২০টি গরু থাকলেও এবারের কোরবানি ঈদে ৮০টি বিক্রি হতে পারে। করোনার কারণে হাটে ব্যাপারিরা না আসায় দামও অনেকটা কম। বাইরের ক্রেতা আসলে দাম বেশি পাওয়া যায়।

সদর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকার খামারি জহিরুল ইসলাম জানান, দেশে এখনও করোনা পরিস্থিতি ভালো হয়নি। এতো টাকা বিনিয়োগ করে গরুর ভালো দাম না পাওয়া গেলে খামারিদের দু:খের সীমা থাকবে না। দুই একজন ব্যাপারি আসলেও তারা দাম কম বলছেন। হাটেও ক্রেতা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

একই এলাকার আরেক খামারি রাজু বলেন, প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০টি গরু পালন করি। কিন্তু এবার গরুর খাবারের দাম এবং করোনার কারণে ঈদে বিক্রির আশায় মাত্র ৮টি গরু লালন পালন করেছি।

মণিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নের দফাদার ডেইরি ফার্মের মালিক শাহীন আলম জানান, এবার তার খামারে কোরবানির জন্য অর্ধশতাধিক ষাঁড় প্রস্তুত করা হয়েছে। গরুর গঠন অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিবছর রোজার ঈদের পরই বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা খামারে এসে গরু কিনলেও, এবছর এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানান তিনি।

মণিরামপুরের আলোচিত সেই ‘বাংলার বস’ ও ‘বাংলার সম্রাট’ নামের দুটি গরুর মালিক ও খামারি আসমত আলী গাইন বলেন, আমার গরু দুটি ৮০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এছাড়া আমার খামারে এই কোরবানিতে বিক্রির জন্য আরও ৮টি গরু প্রস্তুত করেছি।

এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল আলম বলেন, এবার কোরবানির জন্য জেলায় সাড়ে ৬০ হাজার গবাদি পশুর চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খামারিদের তথ্য অনুযায়ী গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে ৬৭ হাজারের বেশি। তবে করোনার কারণে পশু বেচাকেনায় কতটা প্রভাব পড়বে সেটি আগেই বলা যাচ্ছে না।

তিনি জানান, ঈদুল আজহার ১০ থেকে ১২ দিন আগে পশু বেচাকেনার তোড়জোড় শুরু হয়। এবার করোনার কারণে খামারিদের মাঝে কিছুটা হলেও ভীতি রয়েছে। তবে এখনো পশু বিক্রির জন্য অনেক সময় হাতে রয়েছে।

খামারিরা যাতে হাটে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারে এবং হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য প্রশাসনের সাথে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালানোর কথাও জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

এদিকে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বৃহস্পতিবার বলেছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবছর বিদেশ থেকে কোনো কোরবানির পশু আমদানির অনুমতি দেবে না সরকার।

হাটে স্বাস্থ্যকর গবাদিপশু সরবরাহ ও বিক্রয় নিশ্চিতকরণ সম্পর্কিত এক অনলাইন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই এ বছর বিদেশ থেকে গবাদিপশু আনতে দেয়া হবে না।’

সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর উপায়ে পশু কোরবানি করতে সরকার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

সূত্র : ইউএনবি