যশোরের মনকাড়া পাটালি গুড়ের নাম ছড়িয়েছে দেশজুড়ে
ফিচার ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০২:১৭ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার
যশোরের মনকাড়া পাটালি গুড় নাম ছড়িয়েছে দেশজুড়ে
মনকাড়া ও সুস্বাদু পাটালি গুড়ের জন্য যশোরের খাজুরা বাজারের নামটি বিখ্যাত। এই এলাকাতেই পাওয়া যায় দেশসেরা নলেন গুড় ও পাটালি গুড়।
এ জেলার কিসমত রাজাপুর গ্রামের পাটালি উৎপাদনকারী বশির আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করেন গুড়ের। এই ব্যবসা করে তিনি লাভবান হচ্ছেন। অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বাড়তি উপার্জনের জন্য তিনি এ কাজ করতে পারছেন। এ কারণে প্রতি শীত মৌসুমে গ্রামে খেজুর গাছ কিনে নিজেই গাছ কেটে রস আহরণ করেন।
বশির আহমেদের স্ত্রী রস জ্বালিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু নলেন গুড় ও পাটালি। এবারও ৪০টি গাছ শীত মৌসুমের জন্য কেনেন বশির। গুড়-পাটালি বিক্রি করে আয় করেছেন বাড়তি টাকা।
তিনি বলেন, দুই ভাঁড় রসে পাটালি হয় এক কেজি। কোন রকম ভেজাল ছাড়া এই পাটালি। দাম ৩শ থেকে ৪শ টাকা। প্রতিদিন তার রস হয় ২৫ থেকে ৩০ ভাড়। এ হিসেবে তার আয় কম নয়। বাড়তি জ্বালানী খরচ নেই। খেজুরের ডাল পাতা আর আশপাশের বাঁশ পাতা ও পরিত্যক্ত খড়ি দিয়ে চলে রস জ্বালানোর কাজ।
শুধু কিসমত রাজাপুর গ্রামেই যে গুড় উৎপাদন হচ্ছে তা নয়। জেলার সব এলাকায় রয়েছে খেজুর গাছের আধিক্য। প্রতিটি গ্রামে দেখা যায় শীত মৌসুমে খেজুর গাছ কেটে রস আহরণের দৃশ্য। এসব খেজুর গাছ থেকে অনেকটা খরচহীনভাবে উৎপাদন হয় পাটালি গুড়।
তবে খাজুরা অঞ্চলের তৈরি গুড়ের রয়েছে বাড়তি কদর। এখানকার গুড়ের দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। খাজুরা এলাকার বামনডাঙ্গা, তেজরোল, রাজাপুর গ্রামে গুড় উৎপাদন হয় বেশি।
এসব গ্রামের অধিকাংশ কৃষক খেজুর গাছ কাটার সাথে জড়িত। চাহিদার কারণে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী গুড়ের সাথে মিশিয়ে থাকে চিনি। কিন্ত এবার প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে অসৎ ব্যবসায়ীদের ভেজাল দেয়া কমে গেছে।
কৃষক রহমত আলী বলেন, গুড়ের সাথে একটু চিনি না দিলে গুড় শক্ত থাকে না। তাছাড়া রং উজ্জল করতে চিনির প্রয়োজন হয়। নইলে কালচে ভাব থেকে যায়।
আশেপাশের গ্রামগুলোতে খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনকে ঘিরে খাজুরা বাজারে গড়ে উঠেছে স্থায়ী কয়েকটি দোকান। তাছাড়া রাস্তার পাশে গুড়ের ভাঁড় আর পাটালির ডালি নিয়ে বসেন অসংখ্য বিক্রেতা।
ব্যবসায়ী মুনির হোসেন বলেন, খাজুরা বাজার থেকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মণ গুড় বা পাটালি বিক্রি হয়। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা আসেন এই বাজারে। শখের বশেও অনেকে কিনে নিয়ে যান গুড় বা পাটালি। অনেক প্রবাসী এখানে আসেন মিষ্টি গুড়ের স্বাদ নিতে।
নতুন মেয়ে জামাই বাড়িতে পাঠাতে অনেকে নলেন গুড়ের খোঁজে আসেন এ বাজারে। নলেন গুড় আসে এক বিশেষ ধরণের খেজুর রস থেকে। নলেন গুড় থেকে তৈরি হয় সন্দেশ, ক্ষির-পায়েস।
গাছি আবদুর রহিম জানান, আশ্বিনের শেষের দিকে খেজুরগাছকে প্রস্তুত করতে হয় রস আহরণের জন্যে। গাছের বাকল কেটে ‘গাছ তোলা’ হয়। গাছ তোলা শেষে গাছ কাটার পালা। কোমরে মোটা দড়ি বেঁধে ধারালো গাছিদা দিয়ে সপ্তাহে নির্দ্দিষ্ট দিনে গাছ কেটে রস আহরণ করা হয়।
রস পেতে হলে কিছু কাজ করতে হয়। গাছের উপবিভাগের নরম অংশকে কেটে সেখানে বসিয়ে দেয়া হয় বাঁশের তৈরি নালা। গাছের কাটা অংশ থেকে চুইয়ে-চুইয়ে রস এসে নল দিয়ে ফোটায় ফোটায় জমা হয় ভাঁড়ে। প্রথম রস একটু নোনা। গাছি এক কাটের পর বিরতি দেন। কিছুদিন বিরতির পর আবারও কাটেন। এবারের রস হয় সুমিষ্ট। তখন রসের সুগন্ধে মৌ-মৌ সারাদিক। এর সুবাস আর স্বাদ দিতে ভিড় জমায় পিঁপড়া, মৌমাছি, পাখি, কাঠবিড়ালী। এই রসের নামই নলেন রস। আর এটি কেবল যশোরের এই উপজেলাতেই সম্ভব।
এ অঞ্চলের মানুষ রস দিয়ে তৈরি করেন নানা ধরণের পিঠা। গুড় দিয়েও তৈরি হয় নানা পদ। পিঠার পাশাপাশি বানানো হয় নানা ধরণের পাটালি। আকৃতি, রং ও স্বাদের দিক থেকেও থাকে ভিন্নতা।
এই এলাকার মানুষ নারিকেলের পাটালি বিশেষ পছন্দ করেন। যে পাটালি পাঠানো হয় তাদের স্বজন-আত্মীয় পরিজনকে। এই বিশেষ ধরণের পাটালি কেবল এখানকার কারিগররাই বানাতে পারেন। এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বাইরে এই পাটালির আবরণ থাকে শক্ত। কিন্তু ভেতরটা গলে যাওয়া মোমের মত। এখানকার মানুষ বংশানুক্রমে এ পাটালি তৈরি করে আসছেন। সেসব বিক্রি হচ্ছে এ অঞ্চলে। খেজুর গাছের স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে ইটের ভাটায় অবাধে গাছ পোড়ানোর কারণে।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাউসার উদ্দীন আমেদ বলেন, এই অঞ্চলের মাটি সাধারণত বেলে দোঁ-আশ। আর পানিতে লবনাক্ততা নেই। ফলে গাছের শিকড় অনেক নিচে পর্যন্ত যেতে পারে। সবমিলিয়ে জলবায়ু উপযোগী যশোরের খাজুরা, বাঘাপাড়া, মাগুরার শালিখায় খেজুরের রস সুগন্ধি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে।
যশোর প্রেস ক্লাব সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান তোতা বলেন, ১৮৬১ সালে ইংল্যান্ডের নিউ হাউজ যশোরের চৌগাছার তাহেরপুরে খেজুরের গুড় থেকে ব্রাউন সুুগার তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। প্রকৃতিগতভাবে এই অঞ্চলের পানি মিঠা। একারণেই এই অঞ্চলের খেজুরের রস তুলনামূলক বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু।
সূত্র : বাসস
- ‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
- কেউ হিট স্ট্রোক করলে কী করবেন?
- সালমান আমার জীবন: ঐশ্বরিয়া
- দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
- গোপালগঞ্জে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন
- দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন
- জয়পুরহাটে পাকিস্তানী হানাদাররা প্রথম গণহত্যা শুরু করে ২৫ এপ্রিল
- কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই
- বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড
- কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির
- কেএনএফের আরও ৩ নারী সহযোগী গ্রেপ্তার
- ঢাকায় কাতারের আমির, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক আজ
- ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল
- মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- জাপার সভায় গান গাইলেন রওশন এরশাদ
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- রোমান্টিক যুগের অন্যতম কবি জন কিটস
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য