ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪৭:১৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তীব্র তাপপ্রবাহ, সতর্ক থাকতে মাইকিং ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপ আজ শুরু জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা

যা বললেন ছাত্রলীগকর্মীর লাথিতে আহত ছন্দা

ডেস্ক রিপোর্ট | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৩২ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন জাবি ছাত্রী মারিয়াম রশিদ ছন্দা। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেখানে ছন্দা তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) আজীবন মনে রাখবার মতো দিন। আন্দোলনে গিয়েছিলাম সাংস্কৃতিক কর্মীর যে দায়বদ্ধতা থাকে সেখান থেকে, বিবেকের তাড়নায়। সবাই বলে দ্রোহের কবিতা আমার কণ্ঠে বেশ ভালো যায়, দ্রোহটা আমার স্বভাবজাত।

অন্যায় দেখলে আমি চুপ করে থাকিনি কোনো দিন সেটি ঘরে বা বাইরে যেখানেই হোক। কিন্তু কাউকে অসম্মান, আঘাত করা, হেয় করা আমার ধাতে নেই, আমি প্রতিবাদটাও ওই ভাষায়ই করি, সব সাংস্কৃতিক কর্মীও তাই করে। আমাদের শিক্ষা এই।

অথচ সেই আমাকেও বলা হলো শিবির এবং এভাবে আমার তলপেটে লাথি দেয়াকে জাস্টিফাই করা হলো। আমার শিক্ষককে মাটিতে ফেলে পেটানো হলো আমার বন্ধুকে পেটানো হলো এবং সেখানে আমরা মেয়েরা ব্যারিকেড দিলাম যেন স্যারের গায়ের আগে আমাদের গায়ে মার লাগে।

ঠিক তখন কুমিরের কান্না দেখাতে ছাত্রলীগ এলো এবং স্যারকে উদ্ধারের নাম করে পা ধরে টেনে নিয়ে গেল এবং সেখান থেকে বিকাল পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে নিতে দেয়নি।

এতদিন শুনেছি, অল্প-বিস্তর দেখেছি এদের তাণ্ডব; কিন্তু এই পরিস্থিতিতে না পড়লে কখনই জানতাম না এরা আসলে কী! আমি কিছুই বলব না, কাউকে অভিশাপ দেব না, রাগ করব না, আমি সব ভুলে যাব সত্যি বলছি কেবল এইটুকু স্মৃতি ছাড়া।

যারা এই হামলা নেতৃত্ব দিলেন, নীরব সমর্থন দিলেন এবং এত কিছুর পরও প্রতিবাদ করলেন না আজকের পর থেকে আপনাদের চোখের দিকে তাকাতে আমার ইচ্ছা করবে না, যে সকল মহান শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র, বন্ধু, জুনিয়ররা ন্যায়ের পেটে লাথি মারলেন, সত্যের পেটে লাথি মারলেন, পাজর ভাঙলেন আমি তাদের সবিনয়ে অনুরোধ করছি- আপনাদের সঙ্গে আমার হৃদয়ের বন্ধন কেটে গেছে, ক্যাম্পাসে হয়তো আর এক বছর দেখব বড়জোর, আমাকে ফেসবুক থেকে এখনই রিমুভ করে দিন।
 আপনাদের প্রত্যেককেই আমি চিনি, এ ঘটনার পর আপনাদের ফেসবুক বন্ধু হয়ে থাকার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।

দুপুর ১২.৩০ মিনিট থেকে এ পর্যন্ত ৩ বার পেইনকিলার দেয়া হলো, ব্যথাটা কমছে না, আমার পাশের ওয়ার্ডে আমার বন্ধু, জুনিয়র কাতরাচ্ছে। এই ব্যথা নিয়েও তাই লিখলাম। সত্যি বলছি- আপনাদের আমার প্রয়োজন নেই। আমি আমার প্রিয়জনদের চিনে গেছি, আমি আমার মানুষ চিনে গেছি। শুনে রাখুন এ ব্যথাই এদের শক্তি, এই ব্যথাই এদের বহুদূর নিয়ে যাবে। আর মনে রাখুন যে আগুন মিটমিট করে জ্বলছিল একজনের মনে, সে আগুন একসময় দপদপিয়ে উঠল সবার মাঝে। একবার সবার মাঝে আগুন জ্বলে উঠলে মূল মিটমিটে আগুন না থাকলেও সমস্যা নেই।

এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। হামলায় পাঁচ নারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩৫ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

-জেডসি