রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুনী
(ভূমিকা: পিটার হুদিস এবং কেভিন বি. এন্ডারসন) | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৯:১০ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২২ শনিবার
রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুনী
পর্ব- ১৬: এভাবেই পেরুর পুরণো মার্ক সম্প্রদায় তার যাবতীয় চারিত্র্য লক্ষণেই হুবহু জার্মান মার্ক সম্প্রদায়ের এক প্রতিলিপি বলে যেন অনুমিত হয়। তবে, পুরণো ইনকা সাম্রাজ্যের যা বড় বিষয় ছিল তা হচ্ছে বিজিত ভূমির উপরে বিদেশী শাসন স্থাপিত হয়েছিল। মনে রাখতে হবে যে পেরুর এই প্রাচীন ভূমিতে ইনকারাও ছিল বহিরাগত। মূলত: তারা রেড ইন্ডিয়ান আদিবাসী গোষ্ঠিগুলোরই একটি শাখা ছিল।
ইনকারা এই ভূমিতে পা রাখার পরে শান্তিকামী ক্যুয়েচুয়া রেড ইন্ডিয়ান গোষ্ঠি বহিরাগত ইনকাদের কাছে আত্ম-সমর্পণ করে। ক্যুয়েচুয়াদের গ্রামগুলো একটি আর একটির থেকে বেশ দূরে দূরে অবস্থিত। আর এজন্য তারা একতাবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করতে পারেনি। তারা যে যার নিজের গ্রামের সম্প্রদায়ের ভেতরেই বাস করতো এবং বাইরের বৃহত্তর পৃথিবীর সাথে তাদের কোন যোগাযোগ ছিল না। যে যার গ্রামীণ জনসমাজ বা সম্প্রদায়ের গন্ডির বাইরের কোন বিষয়ে আগ্রহী ছিল না।
ক্যুয়েচ্যুয়া রেড ইন্ডিয়ানদের এই যে বিশেষ গড়নের সমাজব্যবস্থা যার ফলে কিনা ইনকাদের অভিযান এত মসৃণভাবে সম্পন্ন হলো- মজার বিষয় হচ্ছে ইনকারাও ক্যুয়েচ্যুয়াদের এই সামাজিক সংগঠনে কোন হাত দিল না বা এর কোন পরিবর্তন তারা করলো না। তবে অর্থনৈতিক শোষণ ও সামাজিক আধিপত্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে উপরি ভাসা সামান্য কিছু বদল অবশ্য ইনকারা এনেছিল।
প্রতিটি বিজিত মার্ক সম্প্রদায়ের মানুষকে তার ভূমি থেকে কিছু অংশ ‘ইনকা ভূমি‘ অথবা ‘সূর্যের ভূমি‘-র জন্য দিতে হতো। যদিও এই জমিগুলো ক্যুয়েচ্যুয়াদের হাতেই থাকতো, এর ফসল ইনকা বা ইনকাদের পুরোহিত শ্রেণিকে দিতে হতো। এমনকি পাহাড়ি এলাকায় ক্যুয়েচ্যুয়াদের তাদের পশুপালের ভেতর থেকেও একটি অংশ ‘প্রভু/মালিকদের পশু‘ হিসেবে সংরক্ষণ এবং পৃথক করে রাখতে হতো।
ইনকা এবং তাদের পুরোহিতদের জন্য সংরক্ষিত এসব জমির চাষ-বাস এবং পশুপালের রক্ষনাবেক্ষণ মার্ক সম্প্রদায়ের সবার বাধ্যতামূলক শ্রমের উপর নির্ভরশীল ছিল। এর সাথে বাড়তি আরো ছিল খনির শ্রম; বিভিন্ন গণপূর্ত কাজ যেমন সড়ক ও সেতু নির্মাণ এবং এসব সড়ক ও সেতু কোন দিকে মুখ করে নির্মিত হবে সেসব বিষয়ে নেতাদের নিদের্শনা।
একটি কঠোর শৃঙ্খলায় আবদ্ধ সামরিক সেবা ছাড়াও ক্যুয়েচ্যুয়াদের তরফ থেকে ইনকাদের আরো দিতে হতো তাদের তরুণী মেয়েদের, যাদের কিনা ইনকারা তাদের নানা পূজায় বলিদানের কাজে অথবা রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করতো।
যা হোক, শোষণের এই কঠোর ব্যবস্থা অবশ্য মার্ক সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরীণ জীবন এবং মার্ক সম্প্রদায়ের সংগঠনকে একাকী করে রেখেছে; ইনকাদের প্রদেয় বাধ্যতামূলক শ্রম এবং ফসল বা অন্যান্য সব কিছু দেবার জন্য খাটা-খাটুনির কাজটি ক্যুয়েচ্যুয়ারা দল বা গোত্র বেঁধেই করতো।
এ যেন ছিল গোটা সম্প্রদায়ের সম্মিলিত বোঝা। তবু যা অস্বাভাবিক ছিল সেটা হলো এই গোত্রভিত্তিক গ্রাম সংগঠন একটি শোষিত ও দাস হিসেবে ব্যবহৃত হবার জন্য একটি নিরেট ও নমনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়নি, যেমনটা ইতিহাসে প্রায়ই হয়ে থাকে। বরঞ্চ এই ব্যবস্থা নিজেই একটি গোত্রীয় ব্যবস্থার উপর দাঁড়ানো ছিল।
ইনকারা, সত্যি বলতে, পেরুর এই অধিকৃত বা বিজিত গোত্রগুলোর পিঠের উপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল, তবে তারা নিজেরাও ছোট ছোট উপজাতীয় গোত্রে ভাগ হয়ে বাস করতো এবং মার্ক সম্প্রদায়ের আন্ত:সম্পর্কই ছিল তাদেরও (ইনকাদের) বেঁচে থাকার সূত্র। ইনকাদের রাজধানী, কুজকো, আঠারোটি সমষ্টিগত থাকার জায়গার এক কেন্দ্রীয় এলাকা ব্যতীত আর কিছুই ছিল না।
এই আঠারোটি বাসস্থানের প্রতিটিই ছিল সঙ্ঘবদ্ধ, গোত্রীয় বাড়ি আর এই বাড়ির ভেতরেই থাকতো গোত্রীয় কবরস্থান, গোটা সম্প্রদায়ের জীবনচর্যার মূর্ত প্রতীক ছিল এই এক/একটি বাড়ি। এই গোত্রীয় বাড়িগুলোর চারপাশে ইনকা সম্প্রদায়গুলোর চারিত্র্য লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়। অ-পৃথকীকৃত অরণ্য এবং ভাগ-জোক হওয়া চাষের জমি।
আদিম জনগোষ্ঠি হিসেবে, ক্যুয়েচ্যুয়াদের শোষক ও শাসক হয়েও ইনকারা নিজেরাও যে কায়িক শ্রম পুরোপুরি ত্যাগ করেছিল তা‘ নয়; তারা তাদের অবস্থানকে ব্যবহার করতো শুধুই অধীনস্থ বা পরাজিতদের চেয়ে শ্রেয়তর থাকার জন্য এবং ইনকা দেবতাদের কাছে আরো মহার্ঘতর সব বলিদানের জন্য।
বর্তমান সময়ের সভ্যতায় বিদেশী শ্রমের ভিত্তিতে খাবারের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং আধিপত্যশালী শক্তি বা জাতি হিসেবে নিজেরা কাজ করার বিষয়টি অস্বীকার করার মত পরিস্থিতি তখনো দক্ষিণ আমেরিকার এসব সামাজিক সংগঠনে দেখা দেয়নি; সমাজের সম্মিলিত সম্পত্তি এবং কাজ করার সামগ্রিক দায়িত্ব তখনো অবধি ছিল সমাজ মানসে প্রোথিত গভীর মূল্যবোধ।
ক্যুয়েচ্যুয়াদের উপরে রাজনৈতিক আধিপত্যের এই অনুশীলনও ছিল ইনকা গোত্রগুলোর সম্মিলিত কাজের সংগঠিত রূপ। পেরুর প্রদেশগুলোয় যে ইনকা শাসকেরা বাস করতেন, তারা যেন মালয়েশীয় দ্বীপপুঞ্জে থাকা ডাচ কর্মকর্তাদেরই কোন প্রাচীনতর রূপ হিসেবে কুজকোয় তাদের সম্প্রদায়ের মানুষের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতেন।
তারা বাস করতেন ইনকা গোত্রীয় বাসস্থানেই এবং গোত্রীয় সব কাজেই অংশ নিতেন। প্রতি বছর, কুজকোয় সূর্য উতসবের সময় এই প্রতিনিধিরা তাদের দাপ্তরিক নানা কাজ-কর্মের বিবরণ প্রদান করতে এবং সম্প্রদায়ের সবার সাথে মিলে অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য বাড়ি ফিরতেন।
(চলবে)
- বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের
- টাইটানিকের সেই দরজা নিলামে, ৮ কোটিতে বিক্রি
- ইফতারে রাখতে পারেন চিয়া দিয়ে তৈরি ৩ খাবার
- আজও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর
- শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি
- বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া
- ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল যেভাবে জানবেন
- চাকরির সুযোগ দেবে ইবনে সিনা
- ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০
- অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
- ওয়াশিং মেশিনে মিলল কোটি কোটি টাকা!
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- রোজা রেখে মুখে দুর্গন্ধ? দূর করতে করণীয়
- ব্যাটিং ভরাডুবি বাংলাদেশের, সহজ লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ার
- ‘অণুছড়া’ এবং ‘আমার ছড়া কথা বলে’ চলে এসেছে
- বইমেলায় আইরীন নিয়াজী মান্নার ৭টি বই
- বইমেলায় কানিজ কাদীরের কবিতার বই ‘মন’
- আজ জমবে বইমেলা
- টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াশে ক্যান্সারের ঝুঁকি!
- আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি যেভাবে কাজ করে
- সংরক্ষিত নারী আসনে আ. লীগের ৪৮ প্রার্থীর নাম ঘোষণা
- সেলাই প্রশিক্ষণে ভাগ্য বদল কুষ্টিয়ার নারীদের
- জিমন্যাস্টিক্স বিশ্বকাপ: ব্রোঞ্জ জিতলেন প্রণতি
- ২৬৩ সাংবাদিকের জন্য ২ কোটি টাকা অনুমোদন
- এসএসসি পরীক্ষা: এক মাস সব কোচিং সেন্টার বন্ধ
- জাপার সভায় গান গাইলেন রওশন এরশাদ
- যুদ্ধশিশু ও এতিম দেখিয়ে শিশু পাচার: পুরনো ঘটনার তদন্ত দেশে
- মাছ চাষে স্বাবলম্বী দিনাজপুরের গৃহবধূ সাদেকা বানু
- জেনে নিন চিয়া সিডস খাওয়ার সঠিক নিয়ম