ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ৬:৪২:০১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

শরৎ সন্ধ্যায় শুভ্র শিউলি ফুলের সুবাস

অনন্যা কবীর | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১১:৩৫ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার

শিউলি ফুল

শিউলি ফুল

শুভ্র শিউলি ফুলের গন্ধে/মন ভরে যায় মহানন্দে/আকাশ বুকে মেঘের ভেলা/ফুলের বুকে রঙের খেলা/শরতের ওই নীল আকাশে/তুলোর মত মেঘ ভাসে/পূজোর গন্ধ বাতাসজুড়ে/শিউলিতলায় ফুল যে ঝরে...।

 

আষাঢ় শ্রাবণের টানা বর্ষণের পর মেঘমুক্ত আকাশের অবারিত নীলে ঝিলমিল শরতের দিনলিপি। যার সৌরভ ছাড়া অপূর্ণ থাকে শরতের আলপনা আঁকা সে আর কিছুই নয়, শুভ্র শিউলি।


শিউলি আমাদের প্রকৃতিতে শরৎ ঋতুর অনন্য উপহার হয়ে আসে। এদের আরেক নাম শেফালি। পারিজাত নামেও এরা পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম Nyctanthes arbor-tristis./Night-flowering Jasmine (নাইট ফ্লাওয়ার জেসমিন)/Harsingar (হারসিঙ্গার)/কোরাল জেসমিন।

 

শিউলি ছাড়া শরৎ যেমন নিষ্প্রাণ, তেমনি শারদীয় উৎসবও অনেকটাই অসম্পূর্ণ। মিষ্টি শিশিরের পরশ, ঢাকের শব্দ আর ভোরের শিউলি তলা-এসবই একে অন্যের পরিপূরক।

 

গ্রাম কিংবা শহরে শিউলি এখনো দুর্লভ হয়ে ওঠেনি। ঢাকার বিভিন্ন পার্ক-উদ্যান এবং বাড়ির আঙিনায় সহজেই এ গাছের দেখা মেলে। তবে ফুলের আয়ু সীমিত সময়ের। রাতে ফুটে সুগন্ধ ছড়িয়ে সকালেই ঝরে যায়।

 

শিউলি ফুল শরতকালের অন্যতম অনুষঙ্গ। শরতের শিশিরভেজা ঘাসে কমলা রঙের নলাকার বোঁটায় সাদা পাপড়ির অজস্র ফুল পড়ে থাকার দৃশ্য লোভনীয়। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পা মাড়িয়ে শিউলি ফুল কুড়ানোর একটা আলাদা সুখ আছে। রাতে ফুটে সকাল না হতেই ঝরে পড়ে বলে এই ফুলকে বলে ‘নাইট জেসমিন’। শিউলি ছাড়াও এর আরো অনেক নাম আছে। যেমন- শিউলি, শেফালি, শেফালিকা (বাংলা), শেওয়ালি (মণিপুরী), পারিজাত (মারাঠি), পারিজাতম (তেলেগু), গঙ্গা শিউলি (উড়িষ্যা), হরসিংগার, রাগাপুষ্পী, মালিকা ইত্যাদি।

 

দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। শেফালি নামেও পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গ ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল। শিউলি গাছ নরম ধূসর ছাল বা বাকলবিশিষ্ট হয় এবং ১০ মিটারের মতো লম্বা হয়ে থাকে। গাছের পাতাগুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে। সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মতো বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামি হৃৎপিণ্ডাকৃতির। ফলের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে। শরত ও হেমন্তকালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা করে।

 

পারিজাত শিউলির আরেকটি বিশেষ নাম। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে অনেকবার এসেছে শিউলি ফুল বা পারিজাতের কথা। পূজোয় শিউলিই এমন ফুল যেটি মাটিতে ঝরে পড়লেও তাকে দেবতার উদ্দেশে নিবেদন করা যায়। প্রাচীনকালে এ ফুলের বোঁটার রঙ পায়েস ও বিভিন্ন মিষ্টান্নে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়া শিউলির মালা খোঁপার সৌন্দর্য বাড়াতেও অনন্য। ফুল চ্যাপ্টা ধরনের। শিউলির পাতা ও বাকল বিভিন্ন রোগের মহৌষধ। ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয় শিউলির বীজ, পাতা ও ফুল। এই ফুল বোঁটা শুকিয়ে গুঁড়ো করে পাউডার বানিয়ে হালকা গরম পানিতে মেশালে চমৎকার রঙ হয়।

 

মহাকবি কালিদাস থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং বিভূতিভূষণসহ অনেক কবি-সাহিত্যিক শিউলি ফুল নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ অন্তত আটটি গান ও ২১টি কবিতায় শিউলির প্রসঙ্গ এনেছেন নানাভাবে। শিউলির ভেতরেই যেন তিনি শরতের সব সৌন্দর্য খুঁজে পেয়েছেন। 


শিউলি ফুল (বৈজ্ঞানিক নাম : Nyctanthes arbor-tristis) হচ্ছে নিক্টান্থেস (Nyctanthes) প্রজাতির একটি ফুল। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল, ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকাজুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। 


শিউলি বা শেফালী ফুল পশ্চিমবঙ্গ ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল। শিউলি গাছ নরম ধূসর ছাল বা বাকল বিশিষ্ট হয় এবং ১০ মিটারের মত লম্বা হয়। গাছের পাতা গুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে। সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মত বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামী হৃদপিণ্ডাকৃতির। ফলের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে। এই ফুল শরৎকালে ফোটে। এর ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। শরৎ ও হেমন্ত কালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে।

 

পুরাণের কথা : আগেই বলঅ হয়েছে শিউলির আরেক নাম পারিজাত। পৌরাণিক কাহিনীতে বার বার এসেছে শিউলি ফুল বা পারিজাত ফুলের কথা। কৃষ্ণের দুই স্ত্রী-সত্যভামা ও রুক্মিণীর খুব ইচ্ছে তাদের বাগানও পারিজাতের ঘ্রাণে আমোদিত হোক। কিন্তু পারিজাত তো স্বর্গের শোভা! কৃষ্ণ স্ত্রীদের খুশি করতে চান। তাই লুকিয়ে স্বর্গের পারিজাত বৃক্ষ থেকে একটি ডাল ভেঙ্গে এনে সত্যভামার বাগানে রোপণ করেন। যার ফুল রুক্মিণীর বাগানেও ঝরে পরে সুগন্ধ ছড়ায়। এদিকে স্বর্গের রাজা ইন্দ্রতো ঘটনাটা জেনে খুব রেগে যান! তিনি বিষ্ণু অবতারের উপর গোপনে ক্রুদ্ধ ছিলেন। এই কারণে তিনি কৃষ্ণকে শাপ দেন কৃষ্ণের বাগানের পারিজাত বৃক্ষ ফুল দেবে ঠিকই কিন্তু ফল কোনদিন আসবে না, তার বীজে কখনও নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে না।

 

শিউলিই এমন এক ফুল যেটি মাটিতে ঝড়ে পড়লেও পূজোয় দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদন করা যায় এই ঝরা ফুল।