ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ২৩:০৬:৩২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

সারাদেশে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১১:৩৪ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার

রাজধানীসহ সারাদেশে গরমে জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। দেশজুড়ে গত ক’দিন ধরে বইছে মাঝারি থেকে বড় ধরনের তাপপ্রবাহ। এছাড়া গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা লোডশেডিং ভোগান্তির মাত্রা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। তাপদাহে অতিষ্ঠ এই জনজীবনকে বৃষ্টির শীতল ছোঁয়ায় সিক্ত করতে মিলছে না প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের দেখা।

 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে আজ বুধবার রাজধানীর তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারা বলছে, আরো দুয়েকদিন দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

 

এদিকে দিনের প্রথমভাগে মানুষ কাজ শুরু করলেও তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎপরতা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে তেমন একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে রাস্তাঘাটে মানুষ চলাচলে গেছে কমে। দিনের সূর্যের তাপ রাতে না থাকলেও সূর্যতাপের রেশ থাকছে মধ্যরাত পর্যন্ত। এই গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের।

 

প্রচন্ড গরমের সাথে যোগ হয়েছে লোডশেডিং, পানি সংকট। অধিক তাপমাত্রা আর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। গরমে বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাড়ছে ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস এর মত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। গত তিনদিনেই রাজধানীর ডায়রিয়া চিকিৎসা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবিতে রোগীর সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া ডেঙ্গু, হাপানি, সর্দি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। হিটস্ট্রোকের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিকে আগামী ৩ থেকে ৪ দিন একই অবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 


প্রচন্ড তাপদাহে ডায়ারিয়া ও সর্দিজ্বর, কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার  ডা. আমজাদ আলী। প্রচন্ড গরমের কারণে মানুষ ডায়ারিয়া আর জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

 

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের ডায়রিয়াল ডিজিজ ইউনিটের প্রধান ডা. আজহারুল ইসলাম খান বলেন, দেশে বর্তমানে ডায়রিয়ার পিক মওসুম (বছরে দুই বার মার্চ-এপ্রিল-মে ও আগস্ট-সেপ্টেম্বরকে ডায়রিয়ার পিক সিজন ধরা হয়) চলছে। তিনি জানান, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। অন্যান্যবারের মতো এবারো যাত্রাবাড়ী, তেজগাঁও ও বাড্ডা এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছে। বিশেষ কোনো কারণে ওই সব এলাকা থেকে বেশি সংখ্যক রোগী আসছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই সব এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ। বিপুল সংখ্যক নিম্ন আয়ের লোক এসব এলাকায় বসবাস করে। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ এবং মূলত বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণেই ওই সব মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

 

এছাড়া অতিরিক্ত গরমের কারণে খাবারে দ্রুত পচন ধরছে। সেই খাবার খেয়েও অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে অস্বাস্থ্যকর শরবত পান করেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন। নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। খোলা বা বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। রাস্তা বা ফুটপাতের শরবত ও এ ধরনের পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সবার ঘরে খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে। তবে রোগী বাড়লেও এখনো ডায়রিয়া জনিত কারণে কোন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 


ডা. আজহারুল ইসলাম খান বলেন, ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি চলে যায় এবং গরমের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা গেলে শুধু ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। বারবার পাতলা পায়খানা হলে সঙ্গে সঙ্গে খাবার স্যালাইন খাওয়া শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বর্তমান সময়ে স্কুলগামী শিশুদের বাড়তি পরিচর্যা নিতে বাবা-মাকে অনুরোধ করেন।

 

এদিকে ঢাকা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনিভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশে কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় বিরাজমান রয়েছে।

 


আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আজ বুধবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আজ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানতঃ শুষ্ক থাকবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। এ সময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাঙ্গামাটিতে ২৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত যাবে সন্ধ্যা ৫টা ৫৮ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৪৬ মিনিটে।