ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ০:০৮:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

হামরা কিছুই চাহি না, স্বামী হত্যার বিচার চাই

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০৭:১২ পিএম, ২৩ মে ২০১৮ বুধবার

অসোমনি। বয়স ষাটের বেশি। মুক্তিযুদ্ধে স্বামীকে হারিয়েছেন। দারিদ্রতার সাথে লড়াই করতে করতে আজ যেন ক্লান্ত। ঘোলা চোখে তাকিয়ে থাকেন খোলা আকাশের দিকে। তার কোনো দাবি নেই। তিনি বলেন, হামরা কিছুই চাহি না। শুধু স্বামী হত্যার বিচার চাই। ৪৭ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকসেনাদের গুলিতে অসোমনির স্বামী-দেবর, ভাইসহ পরিবারের পাঁচ জন নিহত হন।

 

তার আক্ষেপ স্বাধীন বাংলাদেশে গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলেও তিনি কেন বিচার পাচ্ছেন না। অসোমনির মত টুলটুলী, ঝলমলি ও শুখানীসহ ওই এলাকার তিন শতাধিক নারী স্বামীসহ স্বজন হারিয়েছেন পাক হানাদের গুলিতে।

 

অসোমনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথ পুর সরকার গ্রামে থাকেন। অন্যের জমিতে ঘর তুলে। তার মত এ গ্রামে নিদারুন কষ্টে আছেন টুলটুলী, ঝলমলি ও শুখানীসহ আরো অনেকে।

 


একাত্তরের ২৩ এপ্রিল। সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা এলাকায় এক গণহত্যা সংঘটিত হয়। দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় পাক-হানাদাররা দুই হাজারের বেশি নিরিহ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ উপজেলাসহ আশপাশে এলাকার তিন-চারটি গ্রামের মানুষ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন হানাদারদের গুলিতে।

 

৬০ উর্ধ্ব তিপানন রায়। সেই গণহত্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু জীবন কাটছেন। হাত পায়ের শক্তি নেই তার। হারিয়েছেন বাক শক্তিও। টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিপানন রায়। গণহত্যার আজ ৪৭ বছর। কিন্তু এই অসহায় মানুষগুলোর খোঁজ নেয়নি কেউ।

 


করুণ দশা শুধু অসোমনি আর তিপানন রায়েরই নয়। গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবারের তিন শতাধিক স্বামীহারা নারী বেঁচে আছে খেয়ে না খেয়ে। আর চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে ওপারের ডাকের প্রহর গুনছে যেন তারা। যাদের স্বামী-স্বজনদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ, তাদের খবর কেউ নেয় না।

 


জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর এই সব নারীদের পুনর্বাসন ও শহীদ পরিবার ঘোষণার দাবি করেন।

 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আখতারুজ্জামান ওই পরিবারগুলোর সহযোগিতা ও চিকিৎসা সেবার আশ্বাস দিয়েছেন।