ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৬:৩৩:৩২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

৫টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদান

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

৫টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদান

৫টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদান

দেশে খাবারে ভেজাল নিয়ে উদ্বেগ বহু দিনের। সম্প্রতি যে ৫২ টি খাদ্য পণ্য বিএসটিআই কর্তৃক মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে সেই তালিকায় নির্দিষ্ট পাঁচ ধরনের খাবারের প্রাধান্য দেখা গেছে।

সেগুলো হল প্যাকেটজাত লবণ, তেল, হলুদ, লাচ্ছা সেমাই ও বোতলজাত পানি। বাজারের খুব নামকরা সব কোম্পানির খাদ্যপণ্য রয়েছে এর মধ্যে। আর এই বিষয়টি অনেককেই অবাক করেছে।

দেশের বাজারের নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্যের উপর বহুদিন ধরে গবেষণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন।

তিনি বলেন, বিএসটিআই যা পেয়েছে তা অনেক ধরেই এসব খাদ্য পণ্যে রয়েছে।

জেনে নিন উল্লিখিত পাঁচটি পণ্যে যা পাওয়া গেছে।

১. লবণে আয়োডিনের মাত্রায় হেরফের : অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী প্যাকেটজাত লবণে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় আয়োডিন মেশানো বাধ্যতামূলক। কারণ বাংলাদেশে আয়োডিনের স্বল্পতার শিকার মানুষের সংখ্যা মারাত্মক হারে বেশি।

বিএসটিআইয়ের তালিকায় থাকা প্যাকেটজাত লবণগুলো হয় আয়োডিন দেয়নি, অথবা তার পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে।

অধ্যাপক শাহীন বলেন, যখন আয়োডিন সম্পর্কিত আইন করা হয়েছিলো তখন বাংলাদেশে আড়াইশ’র বেশি ফ্যাক্টরিকে লবণে আয়োডিন মেশানোর মেশিন দেয়া হয়েছিলো।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে মনিটর করেছি। আমাদের অভিজ্ঞতা হল বেশিরভাগই এই মেশিনগুলো ব্যবহার করে না। তারা লবণ পরিষ্কার করার ট্যাংকের ভেতরে পানির সাথে গুলিয়ে আয়োডিন দিয়ে দেয়। তাতে এর মাত্রা ঠিক থাকে না, কম বেশি হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, তার মানে তারা যে শুধু বিএসটিআই-এর পরীক্ষায় ব্যর্থ হল তা নয়। তারা দেশের আইনও লঙ্ঘন করলো।

২. মশলায় পাওয়া গেছে কৃত্রিম রং : বাজারের বেশিরভাগ গুঁড়ো মশলায় কৃত্রিম রং মেশানো হয়। অন্যান্য ভেজালও রয়েছে।

নাজমা শাহীন বলেন, এমন কৃত্রিম রং মেশানোর কারণে হলুদ বা মরিচের গুঁড়ো মশলা দেখতে সুন্দর মনে হচ্ছে। কিন্তু এতে মিশে যাচ্ছে সীসা ও আর্সেনিক।

তিনি হলুদের গুঁড়ো সম্পর্কে বলেন, স্থানীয় অনেক হলুদ আছে যা আস্ত অবস্থায় একটু চিকন ও কালচে ধরনের। যেটা ভাঙানো হলে উজ্জ্বল হলুদ দেখায় না।

তিনি বলেন, সেগুলোকে গুঁড়ো করে যখন পাউডার মশলা বানানো হয় তখন তাতে রঙ মেশানো হয়। যার ফলে এতে হেভি মেটাল মিশে যায়। এটি নতুন কিছু না।

তিনি একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির কথা উল্লেখ করে বলেন, বছর দুয়েক আগে ওই কোম্পানির গুঁড়ো হলুদে সীসা পাওয়া গিয়েছিলো বলে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশে সেটির আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। সেখানে প্রচুর বাংলাদেশি দোকানে এটি বিক্রি হতো।

৩. লাচ্ছা সেমাইতে রয়েছে বাড়তি তেল অথবা চর্বি-জাতীয় পদার্থ : এই জাতীয় সেমাই খুব জনপ্রিয়। খেতে মজার পাশাপাশি এটি খুব দ্রুত রান্না করা যায়। ময়দা দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। অন্যান্য উপকরণের মধ্যে এতে থাকে ফ্যাট জাতীয় পদার্থ।

এতে কতটুকু ফ্যাট থাকবে তার অনুমোদিত মাত্রা ঠিক করে দেয়া আছে। কিন্তু বাজারের নাম করা লাচ্ছা সেমাইতে তার পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে।

অর্থাৎ মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া লাচ্ছা সেমাইগুলো হয়ত ঘি, ডালডা বা তেল বেশি দিয়েছে।

৪. বোতলজাত পানিতে জীবাণু : বেশ কিছু বোতলজাত পানিতে দূষণ পাওয়া গেছে। পানির দূষণ বোঝা যায় এর পিএইচ মাত্রা দিয়ে।

অধ্যাপক শাহীন বলেন, বিশুদ্ধ পানিতে একটি নির্ধারিত পিএইচ মাত্রা রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট পিএইচ না থাকা মানে পানিটি বিশুদ্ধ নয়।

তিনি আরও বলেন, এই পানিতে অণুজীব পাওয়া গেছে, বিশুদ্ধ পানিতে যা থাকার কথা নয়।

৫. সরিষার তেলে আয়রন থাকার কথা নয় : অধ্যাপক নাজমা শাহীন জানান সরিষার তেলে কোন আয়রন বা লৌহ জাতীয় পদার্থ থাকার কথা নয়।

কিন্তু সেটি পাওয়া গেছে, আর সেজন্যেই এটি বিএসটিআই এর মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি মনে করেন, সরিষা ভাঙিয়ে যখন প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে তখন মেশিন থেকে হয়ত মিশে থাকতে পারে। বাংলাদেশে সরিষার তেলে আরেকটি উপায়ে ভেজাল মেশানো হয় বলে জানালেন তিনি।

তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরিষার তেলের যে ঝাঁঝালো ব্যাপারটা আছে, অন্যধরনের তেলের মধ্যে এক ধরনের কেমিক্যাল মিশিয়ে সেই ঝাঁঝটা বানানো হয়। তার পর সেটিকে সরিষার তেল বলে বিক্রি করা হয়।

সূত্র : বিবিসি বাংলা