ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৬:৩৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
চট্টগ্রামে আজ শুরু উইম্যান এসএমই এক্সপো হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি

৬ মাসে ধর্ষণের শিকার ৪১ শতাংশ শিশু

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:০৬ এএম, ৭ অক্টোবর ২০১৯ সোমবার

শিশু হত্যা, ধর্ষণ ও গৃহকর্মী শিশুর ওপর অত্যাচার বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ধর্ষণের ঘটনা অনেকাংশেই বেড়ে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৪৯৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত বছর এ হার ছিল ৫৭১ জন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে দেশে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৪১ শতাংশ হারে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রবিবার জাতীয় প্রেক্লাবে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) ও বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত 'শিশু অধিকার ও বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক সংবাদ সন্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এএসডির ডিসিএইচআর প্রজেক্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউকেএম ফারহানা সুলতানা। সংবাদ সন্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এএসডি নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরী ও বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহিদ মাহমুদ, এএসডি’র মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন ম্যানেজার লুৎফুন নাহার কান্তা।

মূল বক্তব্যে বলা হয়, শিশু ধর্ষণের ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণ মূলত, নির্যাতন করার পরও আইনের আওতায় আসছে না অপরাধী। ফলে একের পর এক শিশু ধর্ষণের মত পৈশাচিক ঘটনা ঘটছে। আইন থাকলেও তা উপেক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া মামলা হলে যে চার্জশিট দেওয়া হয় তাতে আইনের ফাঁক-ফোকর থাকে। এতে আরো বলা হয়, আইনের ধীরগতির কারণেও দেখা যায়, যে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়, অপরাধীরা জামিন নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। আর আসামীরা প্রভাবশালী হলেই তো কথাই নেই। বিচার প্রক্রিয়া আরও সংকটে উপনীত হয়। কখনও কখনও প্রভাবশালীদের চাপে নির্যাতিতরা সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়।

মূল বক্তব্যে ফারহানা সুলতানা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনা যখন ঘটে তখন শিশুর অভিভাবকরা সম্মান হারানোর ভয়ে এবং প্রভাবশালীদের চাপে পড়ে মামলা করে না। কোন কোন ক্ষেত্রে দরিদ্র অভিভাবকের পক্ষে দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে নেওয়াও সম্ভব হয় না। সামগ্রিক কারণে সমাজে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, দেশে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ১.২৮ মিলিয়ন। বিভিন্ন গবেষণা হতে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে মোট গৃহকর্মীর সংখ্যা ২ মিলিয়ন। এর মধ্যে চার লক্ষ বিশ হাজার শিশু গৃহকাজে জড়িত যার ৮৩ শতাংশই মেয়ে শিশু।

এএসডি ও বিএসএএফ এর ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এএসডি ১৯৮৮ সন থেকে দেশের হতদরিদ্র, অবহেলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্যোগ মোকাবেলা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সুরক্ষা জন্য কাজ করে যাচ্ছে এসএসডি।

উন্নয়ন সংস্থাটি শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে প্রত্যাহার করে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মূল ধারার প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বয়সভেদে ঝুঁকিমুক্ত কাজে শিশুদের নিয়োগ দেয়া, শিশুদের জন্য বিশ্রাম, বিনোদন ও আনন্দদায়ক খেলাধুলার আয়োজন করা এবং রাত্রিকালীন আবাসনের ব্যবস্থা করা।

এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প এলাকায় ছয়টি বিদ্যালয়, তিনটি ড্রপ-ইন-সেন্টার ও রাত্রিকালীন আবাসিক ব্যবস্থা (আনন্দ নিবাস) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গাবতলী এবং কমলাপুরে শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের জন্য দুটি লার্নিং এন্ড রিক্রিয়েশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যার মাধ্যমে শ্রমে নিয়োজিত শিশুরা পড়াশুনা, খেলা ধুলা, বিশ্রাম, বিনোদনসহ আরও অনেক সেবা পেয়ে থাকে।

এই কার্যক্রমের আওতাভুক্ত অধিকার ও সুবিধা বঞ্চিত ও মারাত্নক ঝুঁকিতে থাকা শিশুরা সুরক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি সমাজে ভালোভাবে বেড়ে ওঠার লক্ষ্যে ন্যূনতম সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

এসএসডির পাশাপাশি সরকারের আরো বহুমুখী কার্যক্রম হাতে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ফারহানা সুলতানা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই কম পরিলক্ষিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।