ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৭:২৫:৩৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস আজ

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩৯ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার

আজ ১৫ অক্টোবর। আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারো জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশও দিবসটি পালন করছে। আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নিজেদের অর্থায়নে দেশের ৬০টি জেলা এবং ১১টি উপজেলায় নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকার প্রতি স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার রেজুলেশন নম্বর ৬২/১৩৬-এর মাধ্যমে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০০৮ সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন করে আসছে। এর আগে ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ নারীদের খাদ্য উৎপাদনসহ বহুমুখী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতির জন্য বেইজিং সম্মেলনেই প্রতি বছরের ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস বিশ্বের গ্রামীণ নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সংগঠিতভাবে পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদনের ২০ ধরনের কাজে নারীরা জড়িত। অনেকসময় তারা ফসল উৎপদানে মাঠে যেমন কাজ করেন, তেমনি মাঠের বাইরে উৎপাদন কাজেও তারা প্রধান ভূমিকা রাখেন।

উন্নয়ন কর্মীরা বলছেন, প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি নারী বিভিন্ন ধরনের কৃষি উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক অবদানের মূল্যায়ন বা স্বীকৃতি তারা পাচ্ছেন না। এমনই প্রেক্ষাপটে আজ উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস।

বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় অংশ বাস করেন গ্রামে। কৃষিকাজে তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবিনীগের প্রধান ফরিদা আখতার বলেন, কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ নারীদের হাতে সরাসরি করেন নারীরা।

তিনি বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে মাঠে ফসল ফলানো, মাঠ থেকে ফসল আনার পরে সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে ঘরে তোলার ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ায় নারীর ভূমিকা অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আমরা কেবলমাত্র আবাদি ফসলকেই কৃষি বলি। কিন্তু কৃষিতে অনাবাদী অংশও থাকে। হাঁস-মুরগী, গরু, ছাগল সব মিলিয়ে কৃষি। আর এসব কাজে নারীদের ভূমিকাই প্রধান। কৃষিকাজে নারীর অবদানের স্বীকৃিতি দিতে হবে। কিন্তু নারীদের এই অবদানের কতটা মূল্যায়ন হচ্ছে?

ফরিদা আখতার বলেন, নারীকে মোটেও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাদের অবমাননা করা হয়েছে। পরিসংখ্যানে তাদের তুলে ধরা হয়নি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। এমনকি যারা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন তারা কিন্তু মানদণ্ডটা ভুলভাবে করেন বলে নারীদের অবদানটা তারা দেখেন না।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে আসা এইসব নারীদের পরিবারে কতটা ক্ষমতায়ন ঘটছে?

এ প্রসঙ্গে এই উন্নয়নকর্মী জানান তিনি তার অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, গ্রামে কৃষক পরিবারগুলোতে নারীদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। পরিবারে যেসব নারী সক্রিয় তারা সেখানে সম্মান পাচ্ছে। কারণ তাদের অবদানের কারণে পরিবারগুলো লাভবান হচ্ছে। কিন্তু আধুনিক কৃষি আসার পরে যখন গরু, ছাগল হারিয়ে যাচ্ছে, তখন নারীও ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, জাতীয়ভাবে কৃষি নীতি হলে নারীদের কৃষক হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। তাদের অবদানকে অর্থনৈতিক মানদণ্ডে ফেলে জাতীয় আয়ে তাদের অবদান তুলে ধরলে আমরা একধাপ এগোতে পারবো।