ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ৯:৫৩:৪২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হবে কবে: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৯ সোমবার

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাল তদন্ত শেষ হবে কবে? দীর্ঘ সাত বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এই তদন্ত কাজ আর কতদিন লাগবে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন হাইকোর্ট।

এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার শফিকুল আলমকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, দীর্ঘ সাত বছরে মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?

আজ সোমবার আদালতের তলবে হাজির হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এসব প্রশ্ন তোলেন। পরে আদালত এ মামলায়  সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের মামলা বাতিলের আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৪  নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে আসামি তানভীরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

আদালতের তলব আদেশে হাজির হয়ে মামলার তদন্তের বিষয়ে খন্দকার শফিকুল আলম হাইকোর্টকে জানান, এ মামলায় এখনো কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিএনএ টেস্টের চারটি নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নমুনা এসেছে। এসব নমুনার সঙ্গে আসামিদের কারো সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপর দুটি নমুনা পরীক্ষার জন্য এফবিআইতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই।

এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনারা আলামত হিসেবে কী পেয়েছেন?’

জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কয়েকটি ছোরা, দা, বটি পেয়েছি।  তবে রিপোর্ট না আসায় কারো সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি।‘

আসামি তানভীরের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আদালতকে বলেন, ‘এ মামলায় এখন পর্যন্ত সাত জন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে।  কিন্তু মামলার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।’

এর এক পর্যায়ে আদালত হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘দীর্ঘ সাত বছর মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?

তখন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন আদালতকে বলেন, ‘আপনারা (হাইকোর্ট) এ মামলার দ্রুত প্রতিবেদন দিতে একমাস সময় দিয়ে আদেশ দিতে পারেন।’

জবাবে আদালত বলেন, ‘সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে কিছুই হয়নি।  এখন সেটির আদেশ দেব।’ পরে আদালত এ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তানভীর রহমানের মামলা বাতিলের আবেদেনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেন। 

এর আগে গত ৬ নভেম্বর বহুল আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। মামলাটি বাতিল চেয়ে সন্দেহভাজন আসামি মো. তানভীর রহমানের করা আবেদনের শুনানিকালে আদালত রুলসহ ওই আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। পরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার হস্তান্তর করা হয়।  কিন্তু গত সাত বছরেও মামলার তদন্তে অগ্রগতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আট জন। অন্য আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ।  আসামিদের প্রত্যেককে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হলেও তাদের কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি।