রোহিঙ্গা নিপীড়নে আর্জেন্টিনায় সু চি’র বিরুদ্ধে মামলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫৯ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
আং সান সু চি
এবার মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আর্জেন্টিনায়। রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের কারণে এ মামলা করা হয়েছে। বুধবার আর্জেন্টিনায় এই মামলা দায়ের করে রোহিঙ্গা ও লাতিন আমেরিকান কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন।
মামলায় সু চি’র পাশাপাশি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
সিএনএন, চ্যানেল নিউজ এশিয়া, এনডিটিভিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, মামলার আসামি হিসেবে সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংও রয়েছেন। এর আগে সিনিয়র জেনারেল হ্লাইংসহ তার কয়েকজন কর্মকর্তা একই অভিযোগে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন।
‘ইউনিভার্স জুরিসডিকশন’ বা ‘বৈশ্বিক বিচার দায়বদ্ধতার’ আওতায় মামলাটি করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মাত্রা যদি ভয়াবহ হয় তবে যেকোনো দেশেই তার বিচার হতে পারে এমন ধারণা থেকে এ আইন করা হয়েছিল। এর আগে আর্জেন্টিনার আদালতে স্প্যানিশ স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর এ আইনের আওতায় বিচার হয়েছিল।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী টমাস ওজিয়া বলেন, ‘অভিযোগে অপরাধী, সহযোগী ও তথ্য গোপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আমরা আর্জেন্টিনার মাধ্যমে এটা করছি, কারণ অন্য কোথাও এ অভিযোগ করার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
এ মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওই আইনজীবী।
এদিকে বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকের প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, ‘দিনের পর দিন মিয়ানমার সরকার আমাদের উৎখাতে চেষ্টা করে গেছে। আমাদের হত্যা করা হয়েছে কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
এর আগে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে বিচার চায় আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। নিধনযজ্ঞ পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো দেশ এমন পদক্ষেপ নেয়। ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণ ও উচ্ছেদের অভিযোগ আনে গাম্বিয়া।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গা ‘নির্মূলে’ এক অভিযান চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এ অভিযানে তারা রোহিঙ্গা হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন নিপীড়ন চালায়। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আটকে রেখে পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
আগামী ডিসেম্বরে এ অভিযোগের প্রাথমিক শুনানি শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।