ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২১:৩১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

আজ বিশ্ব এইডস দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার

আজ বিশ্ব এইডস দিবস

আজ বিশ্ব এইডস দিবস

আজ ১ ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবস। ‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজনঃ জনগণের অংশগ্রহণ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশে দিবসটি পালন করা হবে।

১৯৮৮ সাল থেকে এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্বে এ দিবসটি পালন করে থাকে। বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

ইউএনএইডস-এর তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডসে আক্রান্ত এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এ মরণঘাতী রোগে মৃত্য্যুবরণ করেছে।

এইচআইভি`র সংক্রমণে মানবদেহে এইডস রোগের সৃষ্টি হয়। তবে এইডস আলাদাভাবে কোনো রোগের নাম নয়, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাবজনিত নানা রোগের সমাহার। এইডস এক আতঙ্কের নাম। এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধক কোষ যেমন হেলপার টি সেল, মনোসাইট, ম্যাক্রফেজ, ডেনড্রাইটিক সেল, চর্মের ল্যাঙ্গারহেন্স সেল, মস্তিষ্কে ও গায়াল সেল ইত্যাদিকে আক্রমণ করে এবং সেগুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়। ফলে মানবদেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তখন যেকোনো জীবাণু সহজেই এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে পারে। এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার এই অবস্থাটাই এইডস।

বেশিরভাগ এইডস রোগীই কোনো লক্ষণ ছাড়াই এই রোগ বহন করে থাকেন। তবে কখনো কখনো এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরে কিছু অনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এইডস হলে সাধারণত জ্বর, র‍্যাশ ওঠা, গলা ব্যথা, লসিকাগ্রন্থী ফুলে যাওয়া, শরীর ব্যথা, গিরায় গিরা ব্যথা, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথা, মুখে ঘা হওয়া, জননাঙ্গে ঘা, মস্তিষ্কে এবং মস্তিষ্কের পর্দায় প্রদাহ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।

বাতাস, পানি, খাদ্য অথবা সাধারণ ছোঁয়ায় বা স্পর্শে এইচআইভি ছড়ায় না। মানবদেহের কয়েকটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থে (রক্ত, বীর্য, বুকের দুধ) ইত্যাদির মাধ্যমে এইচআইভি ছড়াতে পারে। আক্রান্ত রোগীর রক্ত সুস্থ ব্যক্তির দেহে পরিসঞ্চালন করলে, তার ব্যবহৃত সূঁচ বা সিরিঞ্জ অন্য কোনো সুস্থ ব্যক্তি ব্যবহার করলে, তার অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে, আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে (গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা সন্তানের মায়ের দুধ পানকালে, অনৈতিক ও অনিরাপদ দৈহিক মিলন করা ইত্যাদির প্রভাবে সুনির্দিষ্টভাবে এইডস ছড়ায়।

১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম এইচআইভি কেস সনাক্ত হয়। ২০১২ সালে বাংলাদেশে ৩৩৮ জন এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়। আর ১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এ রোগ প্রকাশ পায় এবং একই বছরে দেশটির লস অ্যাঞ্জেলস রাজ্যের পাঁচ সমকামী এই রোগে আক্রান্ত হন। এক গবেষণায় জানা গেছে, সমকামীদের মধ্যে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।


রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, বাংলাদেশে অদ্যাবধি এইচআইভি সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডস এর ঝুঁকি বিদ্যমান। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও মানুষের আচরণ পরিবর্তনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এইডস নির্মূল করতে হলে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, প্রতিটি এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে ১০টি সরকারি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে এইডসের চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এটি আরো সম্প্রসারিত হবে।