যশোরে শীতের সঙ্গে বাড়ছে শিশু রোগী
অধরা শ্রেয়সী অথই
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:২৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার
যশোরে শীতের সঙ্গে বাড়ছে শিশু রোগী। ছবি : সংগৃহীত
সফুরা বেগম তার আট মাসের নাতিকে নিয়ে এসেছেন যশোর শিশু হাসপাতালে। তিন দিন ধরে নাতি অসুস্থ। ডাক্তার বলেছেন, ডায়রিয়া। ডাক্তারের নির্দেশেই তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে বাচ্চাটিকে। যশোর শিশু হাসপাতালের এরকম ডায়রিয়ার রোগী দেখা গেল আরো অনেক।
রোববার যশোরে দেশের সর্বনিম্ন নয় ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতার সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যাও।
যশোর শিশু হাসপাতালের সুপারভাইজার হাদিউজ্জামান নয়ন জানান, শীতে বাচ্চাদের ডায়রিয়া বেশি হয়। বর্তমানে এ হাসপাতালে যত রোগী আছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি ডায়রিয়াতে আক্রান্ত। এই রোগকে কোল্ড ডায়রিয়া বলে।
এ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ নূর-ই-হামিম জানান, শিশু হাসপাতালের মোট ৯৬টি সিটের ৫২টিতেই বর্তমানে শীতজনিত রোগী ভর্তি আছে। এরা ডায়রিয়া এবং ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত।
শীতে কেন শিশুদের অসুস্থ হবার প্রবণতা বাড়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অনেক সময় দেখা যায়, তিন-চার দিন এক নাগারে সূর্য না উঠলে কাপড় ঠিকমতো শুকায় না। সেই কাপড় ব্যবহার করলে ডায়রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।'
সামনে আবারো মাঝারি বা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিলে এই রোগের প্রকোপ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
নূর-ই-হামিম আরো বলেন, 'ঘরে থাকা আগের বছরের শীতের পোশাক বের করে আমরা অনেক সময় সেটা না ধুয়েই আবার ব্যবহার করি। এইসব পোশাকে ‘মাইস’ নামক এক ধরনের জীবাণু থাকে। এগুলো শ্বাসনালীতে গেলে শিশুদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।'
এদিকে জানা গেছে, শুধুমাত্র শিশু হাসপাতাল নয়, যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালেও শিশুরোগীর সংখ্যা বেড়েছে এই শীতে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হাসান মুনশি জানান, মোটামুটি সহনীয় শীতের পর হঠাৎ করেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে যাবার কারণে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে বেশি। আবহাওয়ার পরিবর্তনই শিশুদের বেশি কাবু করে ফেলে।
এই হাসপাতালেও ডায়রিয়া এবং ব্রঙ্কাইটিসের রোগীই বেশি বলে জানান তিনি।
শিশুদের শীতকালে সুস্থ রাখতে অভিভাবকদের করণীয় কী জানতে চাইলে শিশু হাসপাতালের সহপরিচালক ডা. সৈয়দ নূর-ই-হামিম বলেন, 'আমি সবসময় বলি, ডায়রিয়ার শিশুদের মুখ দিয়ে খাবার খাওয়াতে হবে৷ ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে লিকুইড দিলে শিশু সুস্থ হবে না। মুখ দিয়ে তরল খাবার দিতে হবে যত বেশি সম্ভব।'
তিনি আরো বলেন, 'ভেজা কাপড়চোপড় অবশ্যই ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। রোদ না থাকলে আয়রন করে নিতে হবে। আর আগের বছরের শীতের কাপড় অবশ্যই ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে।'