ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০৯, মে ২০২৪ ২৩:২৮:০৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ফেব্রুয়ারি মাস ঘিরে ব্যস্ত ফুলচাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার

উইমেননিউজ২৪

উইমেননিউজ২৪

এবার পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদযাপন হতে যাচ্ছে। এজন্য ফুলচাষিদের মধ্যে বাড়তি তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এর কয়েকদিন পরেই আসছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির এ তিন দিবস উদযাপনে ফুলের বিকল্প কিছু নেই। তাই ব্যাপক হারে থাকে ফুলের চাহিদা। ফুলকেন্দ্রিক এই দিবসগুলো সামনে রেখে সারাদেশে ফুলের চাহিদা মেটাতে রাত-দিন এক করে কাজ করছেন সাভারের ‘গোলাপের গ্রাম’ বিরুলিয়ার ফুল চাষিরা। প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসবে দেশের এক তৃতীয়াংশ ফুলের চাহিদা পূরণ করে আসছে এই গ্রামটি।

বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামের মাঠে মাঠে এখন শুধু ফুল আর ফুল। গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাসসহ বিভিন্ন ফুলের সমাহার ক্ষেতে ক্ষেতে। এই তিন দিবসকে সামনে রেখে এবারে এই গ্রামের প্রায় ৩০০ ফুল চাষি মোট আড়াই কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন।

ফুল উৎপাদন ও ফুল বিক্রি দেখতে সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে গিয়ে ফুল চাষিদের চরম ব্যস্ততার চিত্র দেখা গেছে। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি ও সাদুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে চাষিদের অনেকেই ফুল বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত আবার কেউ কেউ বিক্রির জন্য ফুল তুলছেন। সেইসঙ্গে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও অন্য সব দিনের তুলনায় বেশি।

চাষিরা বলেন, সারাবছর ফুল বিক্রি করে যা রোজগার হয়। তার চেয়ে তিনগুণ বেশি বিক্রি হয় এই ফেব্রুয়ারি মাসে। এ মাসে ভালোবাসা দিবস থাকায় ফুল বিক্রি বেশি হয়। বিশেষ করে গোলাপ। এছাড়াও ২১শে ফেব্রুয়ারিতেও ফুল বিক্রি করে তারা ভালো আয় করে থাকেন।

দুই বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন আলমগীর নামে এক ফুল চাষি। একদিকে গোলাপ চাষি অন্যদিকে ফুল ব্যবসায়ীও। তার বাগানের ফুল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হয়। তিনি বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে ফুল চাষ করি। সারাবছর তেমন ফুল বিক্রি না হলেও ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের জন্য বাণিজ্যিক মাস। এ মাসের শুরু থেকেই আমরা গোলাপ গাছের পরিচর্যা করতে থাকি। ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আগে আমরা ফুলগুলো বিক্রির চেষ্টা করি। এ সময় ফুলের ভাল দাম পাওয়া যায়।

আরেক চাষি দিল মোহাম্মদ বলেন, আগের দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা আরও বেশি ছিল আর আমরাও ট্রাকে ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় ফুল পাঠাতাম। কিন্তু গত দুই বছর ধরে চাহিদা একটু কম। প্লাস্টিকের ফুল বাজারে আসাতে প্রাকৃতিক ফুল বিক্রি কম হচ্ছে। ফলে চাষিদের কম দামেই ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ফুল চাষিরাও ধীরে ধীরে অন্য পেশামুখি হচ্ছেন। এই ফেব্রুয়ারি মাসেই ফুল বিক্রি হয় বেশি।

স্থানীয় ক্ষুদ্র পাইকারি ব্যবসায়ী রফিক বলেন, সামনে ভ্যালেনটাইন ডে, এদিন সবচেয়ে বেশি ফুল বিক্রি হবে। বাজারে জারবেরা ও গোলাপ ফুলের চাহিদাই বেশি। কৃষকরাও দাম ভাল পাবেন। তাদের ফুল শাহবাগ, আগারগাঁওসহ চট্টগ্রামে যায়। এখন পর্যন্ত বাজারে ফুলের দাম ঠিক আছে বলে মনে করছেন পাইকাররা। তবে তারা জানান, ১২, ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ফুলের দাম অনেকটাই বেড়ে যাবে।

বর্তমানে স্যামপুর ও মোস্তাপাড়া বাজারে ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস গোলাপ ফুল ১০ থেকে ১৫ টাকা, প্রতি পিস মাম ফুল ৫ টাকা, জিপসি ফুল বান্ডেল ৫০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রঙভেদে ১০০ ফুল ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা, ক্যালেন্ডার এক বান্ডেল ৭শ’ টাকা, জারবেরা ফুল ২০ থেকে ২৫ টাকা।

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহম্মেদ বলেন, এবার সাভারের বিরুলিয়া ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে ফুল চাষিরা প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। ভালো ফুল উৎপাদন ও তা বাজারজাতকরণে চাষিদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা হচ্ছে।

-জেডসি