ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় সেরেনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৫:২৬ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৫ সোমবার
ইতিহাস গড়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন সেরেনা। আজ থেকে শুরু হওয়া ইউএস ওপেন জিততে পারলে এক পঞ্জিকাবর্ষে চারটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের রেকর্ড গড়বেন তিনি। ১৯৮৮ সালে সর্বশেষ এক পঞ্জিকাবর্ষে চারটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন স্টেফি গ্রাফ। ক্যারিয়ারে যার গ্র্যান্ডস্লাম সংখ্যা ২২। সেরেনা উইলিয়ামস ২১টি গ্র্যান্ডস্লাম নিয়ে স্টেফির ঘারেই নিশ্বাস ফেলছেন। এবার ইউএস ওপেন জিততে পারলে স্টেফির সমকক্ষ হবেন সেরেনা। একসঙ্গে দুই ইতিহাস প্রত্যক্ষ করবে ফ্লাশিংমিডো।
চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ক্যালেন্ডার ইয়ার গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের পথে প্রথম পদক্ষেপ নেন সেরেনা। এরপর একে একে তিনি ফরাসি ওপেন ও উইম্বলডন জিতেছেন। আজ থেকে শুরু হওয়া ইউএস ওপেন জিততে পারলে বৃত্ত পূরণ হবে তার। সে সঙ্গে টানা চতুর্থবারের মতো ইউএস ওপেন জিতবেন সেরেনা। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ইউএস ওপেন শিরোপা জিতেছেন তিনি। সেরেনার সাফল্যের তুলনায় তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা অকিঞ্চিৎকর। একমাত্র মারিয়া শারাপোভা বাদে আর কারও ইউএস ওপেন জয়ের গৌরব নেই। সিমন হালেপ ইউএস ওপেনের ফাইনাল দূরের কথা, সেমিফাইনালেও উঠতে পারেননি। ক্যারোলিন ওজনিয়াকি এবং পেত্রা কিভিতোভার ঝুলিতেও ইউএস ওপেন শিরোপা নেই। এমনিতে মারিয়া শারাপোভা ও কিভিতোভা ছাড়া গ্র্যান্ডস্লামই জিততে পারেননি অন্য দু`জন। সে তুলনায় ২১টি গ্র্যান্ডস্লাম জেতা সেরেনার কৃতিত্ব আকাশচুম্বী। এ বছরের প্রথম তিন গ্র্যান্ডস্লাম চ্যাম্পিয়ন সেরেনার যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ড্রতে কঠিন সূচি পেয়েছেন। তৃতীয় রাউন্ডেই সেরেনার সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ স্বদেশী স্লোয়ান স্টিফেন্স, যার কাছে দুই বছর আগেই অস্ট্রেলীয় ওপেনে হেরেছিলেন সেরেনা। চতুর্থ রাউন্ডে সেরেনার লড়াই হবে দেশি উদীয়মান তারকা ম্যাডিসন কিসের সঙ্গে। এ বছরই অস্ট্রেলীয় ওপেনে সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়ে যার দৌড় থেমেছিল। সেরেনার কোয়ার্টার ফাইনাল হবে ভেনাসের সঙ্গে। যতই দুর্বল ভাবা হোক, ভে?নাস কিন্তু সাতটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।
সেমিফাইনালে সেরেনার প্রতিপক্ষ হবেন রুশ তারকা শারাপোভা। এসব বাধা টপকাতে পারলেই সেরেনার সামনে স্টেফির জোড়া ইতিহাস ছোঁয়ার হাতছানি। মেয়েদের এককের চেয়ে পুরুষ এককে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেশি। এখানে নোভাক জকোভিচ শীর্ষ বাছাই হলেও আছেন রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও এন্ডি মারের মতো তারকা। তবে গতবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন মারিয়ান চিলিস বলেছেন, `ড্রয়ের ওপরের হাফে নোভাক আমার বাজি। আর ফেদেরার এমন একজন, যে যেখানেই টুর্নামেন্ট খেলে সেখানেই ফেভারিট।` ফ্লাশিংমিডোয় আগে কোনো মহাঅঘটন ঘটে না গেলে কোয়ার্টার ফাইনালেই মুখোমুখি হবেন শীর্ষ বাছাই জকোভিচ ও নাদাল। ইনজুরি এবং খারাপ ফর্মের কারণে নাদাল এবার ফ্লাশিংমিডোর অষ্টম বাছাই। পুরুষ সিঙ্গলসে অন্যতম ফেভারিট অ্যান্ডি মারের প্রথম রাউন্ডে খেলবেন টেনিসের ব্যাডবয় নিক কির্গিওসের বিপক্ষে, যে ম্যাচকে মার্কিন মিডিয়া নাম দিয়েছে `পপকর্ন ম্যাচ`। মুখ খারাপ করায় সিদ্ধহস্ত অস্ট্রেলীয় এ তরুণ। এ মাসেই মন্ট্রিলে ওয়ারিঙ্কার সঙ্গে ঝামেলা করে টেনিস সার্কিট থেকে এক মাসের নির্বাসন আর মোটা ডলারের জরিমানা গুনেছেন তিনি। এই ম্যাচ নিয়ে ফ্লাশিংমিডোয় আচমকাই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ম্যাচের তিন দিন আগেই সব টিকিট নিঃশেষিত। ফেদেরার, জকোভিচ কিংবা নাদালের প্রথম ম্যাচ নিয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। সময় যত গড়াবে ততই আসল টেনিসে মন ফিরবে দর্শকদের। তখন সেরেনা, ফেদেরার, নাদাল কিংবা জকোভিচের টেনিস দেখতেই কোর্টে ছুটে আসবেন তারা।
