ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৫:৩৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

দুই বছরের ভাতিজিকে হত্যার বর্ণনা দিলেন চাচা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৩ পিএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে দুই বছর বয়সী আপন ভাতিজি স্মৃতিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন কিশোরগঞ্জের ইটনা এলাকার মোহন মিয়া ও দুলাল মিয়া। শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক বর্ণনা দেন ছোট চাচা মোহন মিয়া। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মোহন মিয়া ইটনা উপজেলার মৃগা ইউপির জয়সিদ্ধি হাটি গ্রামের মর্তুজা আলীর ছেলে। নিহত শিশু স্মৃতি আক্তার তার বড় ভাই জালাল মিয়ার মেয়ে।

জবানবন্দিতে মোহন জানান, নান্নু মিয়া, দুলাল মিয়া, জালাল মিয়া ও মোহন মিয়া- একই পরিবারের চার ভাই। তাদের সঙ্গে বাড়ির সড়ক নিয়ে প্রতিবেশী আব্দুর রহিমের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জালাল মিয়া নিজের পুরোনো ঘর ভেঙে নতুন ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ঘরের কাজ শুরু করার পর বুধবার দুপুরে আব্দুর রহিম ও তার পক্ষের লোকজন ঘর নির্মাণে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। ওই সময় স্থানীয়রা বিষয়টি সালিশে মীমাংসা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কাজে চলে যান জালাল মিয়া ও নান্নু মিয়া। এদিকে বাড়িতে বসে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার ফন্দি আঁটেন দুলাল মিয়া ও মোহন মিয়া। একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন বাড়ির শিশুদের মধ্য থেকে কাউকে খুন করে প্রতিপক্ষ আব্দুর রহিমের ওপর দায় চাপানো হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওইদিনই সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির একটি ঘরে ঘুমিয়ে থাকা দুই বছর বয়সী ভাতিজি স্মৃতি আক্তারকে তুলে এনে মাটিতে সজোরে আছড়ে ফেলেন মোহন মিয়া। এতে শিশুটি চিৎকার দিলে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন দুলাল মিয়া। মৃত্যু নিশ্চিত করতে শিশুটির বুকের ডান পাশে টেঁটা ঢুকিয়ে দেন মোহন। এরপর প্রতিপক্ষের লোকজন স্মৃতিকে মেরে ফেলেছে বলে চিৎকার শুরু করেন দুই ভাই। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে টেঁটাবিদ্ধ শিশুটির মরদেহ দেখে হতবাক হয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

ইটনা থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসান হাবীব জানান, দুই ভাই মিলে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতিও নেন দুলাল-মোহনরা। কিন্তু পুলিশের কৌশলী তদন্তে বেরিয়ে আসে প্রকৃত ঘটনা। শুক্রবার রাতে মোহন মিয়াকে আটক করে পুলিশ। জেরার মুখে সত্য প্রকাশ করেন মোহন। পরে তার জবানবন্দি নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

ইটনা থানার ওসি মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান জানান, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিষ্পাপ শিশুটিকে হত্যা করেছে দুই চাচা। এ ঘটনায় নিহতের মা ডলি আক্তার শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন।

-জেডসি