ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫৯:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পিএম, ৬ জুন ২০২০ শনিবার

এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান শুরু

এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান শুরু

এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) আজ থেকে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। আজ শনিবার একযোগে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে এই অভিযান পরিচালিত হয়। ১০ দিনব্যাপী এ অভিযান শুক্রবার ব্যতিত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচালিত হবে। চিরুনি অভিযান নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম।

তিনি আজ গণমাধ্যমকে জানান, অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থ্যাৎ ১০টি সাব-সেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আজ অভিযান প্রথম দিনেই ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ১১ হাজার ৯৬৯টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ১৩১টিতে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছে ডিএনসিসি টিম।এছাড়া ৮ হাজার ৩৮০টি বাড়ি, স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে ডিএনসিসি সুত্রে জানা যায়, এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৮টি বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের কাছ থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মোট ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ডিএনসিসি। অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।প্রতিটি সাব-সেক্টরে ডিএনসিসির ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১ জন মশক নিধন কর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশক কর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কোথাও ৩ দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করছে।

আজ থেকে চলমান এই চিরুনি অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৯ জন কিটতত্ত্ববিদ, ডিএনসিসির ৩ জন কিটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ডিএনসিসির চিরুনি অভিযানসহ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে।

অপর দিকে, এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে ডিএনসিসির অভিযান চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদেরকে মনিটর করবে ডিএনসিসি।

চিরুনি অভিযানে উত্তরা অঞ্চলে মোট ৫৯২টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৯টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। মিরপুর-২ অঞ্চলে মোট ২ হাজার ৩৯৮টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ৯টির মালিককে মোট ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মহাখালী অঞ্চলে মোট ১ হাজার ৫৭৪টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়।

এদিকে, অভিযান চলাকালে আজ ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ৫টি মামলায় মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। মিরপুর-১০ অঞ্চলে মোট ১ হাজার ১৪৭টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। কারওয়ান বাজার অঞ্চলে মোট ২ হাজার ৯৯টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। হরিরামপুর অঞ্চলে মোট ১ হাজার ৬৮৩টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। দক্ষিণখান অঞ্চলে মোট ১ হাজার ২৩৬টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। উত্তরখান অঞ্চলে ৯০০টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ভাটারা অঞ্চলে মোট ৩২২টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়।

অভিযান চলাকালে ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ, ডিএনসিসির বর্জ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান আগামীকালও অব্যাহত থাকবে।