বাজেট: সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ আরও সীমিত হলো
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৫৮ পিএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার
বাজেট: সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ আরও সীমিত হলো
আগামী অর্থবছরের জন্য বড় অঙ্কের ঘাটতি বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর চাপ দ্বিগুণ বাড়ালেও কমানো হয়েছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা। ঘাটতি পূরণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করা হবে ২০ হাজার কোটি টাকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা ছিল ২৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ জনগণ আগের তুলনায় সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ কম পাবেন।
একশ্রেণির মানুষকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে সঞ্চয়পত্র চালু রেখেছে সরকার। এর সুদহার ব্যাংকের তুলনায় বেশি। কিন্তু কালোটাকার মালিকরা সঞ্চয়পত্র ব্যাপকহারে কিনছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। কালোটাকার বিনিয়োগ ঠেকাতে অনলাইন সিস্টেম চালু করা হয়। ক্রয়সীমা কমানোসহ নানা কড়াকড়ির ফলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে ব্যাপকভাবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ২৭ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে সেভাবে বিক্রি না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। তবে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকারের আয় হয় ৫০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে অর্থ বিভাগের উদ্যোগে ‘জাতীয় সঞ্চয়স্কিম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালুর মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, মুনাফা, নগদায়ন ডিজিটাল করা হয়েছে। এ ছাড়া পোস্টাল সঞ্চয়পত্র ও পোস্টাল ব্যাংকিং ডিজিটাল করা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের সাত মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সাত হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে সরকার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে ৩০ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল। সব মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রে জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ঋণের বিপরীতে সরকারকে ১১ শতাংশের বেশি সুদ গুনতে হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রে বিপুল অঙ্কের এ দায়ের বিপরীতে চলতি অর্থবছরে সব মিলিয়ে সরকারকে ৬৯ লাখ টাকার সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হবে। সুদ ব্যয় কমাতে গিয়ে সরকার সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের একক সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এ ছাড়া এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক, সঞ্চয়পত্রের সব ধরনের লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে করাসহ নানা বিধান করা হয়েছে। পেনশনার, পরিবার, তিন মাস অন্তর মুনাফা ও পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র- বিদ্যমান এই চার ধরনের সঞ্চয়পত্রে আগে আলাদা আলাদা সীমা নির্ধারিত ছিল। প্রতি ক্ষেত্রে গ্রাহক ঊর্ধ্বসীমা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে পারতেন। তাতে একক নামে সর্বোচ্চ এক কোটি ৫৫ লাখ এবং যৌথ নামে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করার সুযোগ ছিল।
তবে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র মিলে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ এবং যৌথ নামে এক কোটি টাকা সীমা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সঞ্চয় অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় গত ১ জুলাই থেকে সারাদেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা যেখান থেকেই কিনুক সব তথ্য নির্দিষ্ট ডাটাবেজে জমা হওয়ায় এখন আর কেউ সীমার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারে না।