ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৯:৫৭:০১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

শান্তা তানজিলা

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ১২ জুন ২০২০ শুক্রবার

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ

আজ ১২ জুন, শুক্রবার বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। প্রতি বছর ১২জুন বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয় বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এই দিবসটি উপলক্ষে সরকারি বেসরকারিভাবে আয়োজনের কর্মসূচি থাকে। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির ফলে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালনের কর্মসূচি ছিলনা বলে জানায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

তবে ১১ জুন বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সাথে আলোচনা সভায় অংশ নেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ কলকারখানা অধিদপ্তর ও শিশুশ্রম নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাসমূহ।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- 'COVID-19: Protect children from child labour, now more than'। এই দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমগ্র বিশ্বে শিশুশ্রম বিষয়ক সচেতনতা গড়ে তোলা এবং শিশুশ্রম প্রতিরোধে সম্ভাব্য করণীয় স্থির করা।

এক বিবৃতিতে শিশু অধিকার ফোরাম বাংলাদেশের সামগ্রিক শিশুশ্রম পরিস্থিতি এবং শিশুশ্রম নিরসনেও করণীয় শীর্ষক সুপারিশ উপস্থাপন করা করেছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকার বাসাবাড়িতে প্রায় দেড় লাখ শিশু কাজ করে। এই শিশুরা সাধারণত গ্রাম থেকে আসে। শহরে গৃহকর্মে নিয়োজিত হওয়ায় তাদের নেই দুরন্ত শৈশব। পড়াশোনা দূরের কথা, অসুস্থ হলে চিকিৎসাও হয় না। সংস্থাটির হিসাবে বিশ্বে প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিশু নানাভাবে শ্রম দিচ্ছে। এদের মধ্যে প্রায় সাড়ে আট কোটি শিশু নানা ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত।

এদিকে, শিশুশ্রম হ্রাসের ক্ষেত্রে ২০ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও কোভিড-১৯ সংকট আরও লাখ লাখ শিশুর জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে তাদের শিশুশ্রমের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং ইউনিসেফের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

২০০০ সাল থেকে ৯৪ মিলিয়ন শিশুশ্রম কমেছে, কিন্তু কোভিড-১৯ সংকটের কারণে এখন এ অগ্রগতি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অবস্থায় শিশুদের আরও দীর্ঘ সময় বা খারাপ অবস্থার মধ্যে কাজ করতে হতে পারে। তাদের মধ্যে অনেককে কাজের জন্য বাধ্য করা হতে পারে, যা তাদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

আইএলওর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, ‘বর্তমান সংকট মোকাবিলার আগ পর্যন্ত শিশুশ্রম হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছিল।’

পোটিআইনেন বলেন, চলমান মহামারির প্রভাবে শিশুশ্রমের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিগুলোতে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সে দিকে লক্ষ্য রেখে এখন আগের চেয়ে আরও বেশি সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।

‘এ সময়োপযোগী প্রতিবেদনটি কোভিড-১৯ এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেছে এবং আইএলও, সরকার, কর্মকর্তা, শ্রমিক সংগঠন ও অন্য অংশীজনরা বর্তমান সংকটে কীভাবে সর্বোত্তম সাড়া দিতে পারে তার উপায় জানিয়ে দিচ্ছে,’ বলেন তিনি।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোজুমি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের জীবন, প্রত্যাশা এবং ভবিষ্যতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তোমো হোজুমি বলেন, ‘স্কুল বন্ধ এবং পারিবারিক উপার্জন হ্রাস অনেক শিশুকে শিশুশ্রম এবং বাণিজ্যিক যৌন নির্যাতনের ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু দীর্ঘসময় স্কুলের বাইরে থাকে, পরে তাদের স্কুলে ফিরে আসার সম্ভাবনা কম থাকে। আমাদের এখন মহামারির সময়কালে শিক্ষা এবং শিশুদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া দরকার।’

আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, ‘করোনা মহামারিতে যেহেতু পারিবারিক আয়ের ওপর প্রভাব পড়েছে, ফলে অনেকে শিশুশ্রমের আশ্রয় নিতে পারে।’

তিনি বলেন, সংকট চলাকালে সামাজিক সুরক্ষা জরুরি, কারণ এটি ঝুঁকিপূর্ণদের সহায়তা দেয়।