ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ২০:৩৪:০২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

আজ ড. নীলিমা ইব্রাহিমের প্রয়াণ দিবস

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৪৮ পিএম, ১৮ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার

ড. নীলিমা ইব্রাহিম

ড. নীলিমা ইব্রাহিম

দেশের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী ড. নীলিমা ইব্রাহিমের প্রয়াণ দিবস আজ ১৮ জুন। ২০০২ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নীলিমা ইব্রাহিম ১৯২১ সালের ১১ জানুয়ারি খুলনার বাগেরহাটে জমিদার প্রফুল্ল রায় চৌধুরী ও কুসুম কুমারী দেবীর কোলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩৭ সালে খুলনা করনেশন গার্লস স্কুল থেকে ১৯৩৯ সালে কলকাতায় ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন থেকে যথাক্রমে স্কুল লেভেল ও ইন্টার লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে কলা ও শিক্ষার উপরে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যের এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা সাহিত্যে ডক্টরেট অর্জন করবেন।

তিনি ছিলেন একজন পেশাগত কর্মী। ১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৭২ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৭৪-৭৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমির অবৈতনিক মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমির চেয়ারপারসন ছঅড়াও বিশ্ব নারী ফেডারেশনের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন।

নীলিমা লেখক হিসেবেও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ ও নারী-উন্নয়সংস্থা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনের সঙ্গে যু্ক্ত ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমির ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি, বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতি ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির জীবন সদস্য ছিলেন।

 এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভানেত্রী এবং কনসার্নড উইমেন ফর ফ্যামিলি প্ল্যানিং-এর বোর্ড অব গবর্নরসের চেয়ারপার্সন হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব উইমেন-এর সভানেত্রী এবং অ্যাসোসিয়েটেড কান্ট্রি উইমেন অব দি ওয়ার্ল্ড-এর সাউথ ও সেন্ট্রাল এশিয়ার এরিয়া প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি বার্লিন, মিউনিক ও ফ্রাংফুর্টে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক বিশ্বসমবায় সম্মেলন’-এ পূর্বপাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং ১৯৭৩-এ নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক ওয়ান এশীয় সম্মেলন’-এ অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৪-এ তিনি মস্কোয় অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বশান্তি কংগ্রেস’, হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বনারী বর্ষ’ এবং ১৯৭৫-এ মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বনারী সম্মেলন’-এ যোগ দেন।

তার লেখা উপন্যাসগুলো পাঠক সমাজে ব্যাপক সাড়া জাগায়। তার উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম বিশ শতকের মেয়ে ১৯৫৮, এক পথ দুই বাক ১৯৫৮, কেয়াবন সঞ্চারিনী ১৯৫৮ এবং বহ্নিবলয় ১৯৮৫।

তার লেখা নাটকগুলো হলো : দুইয়ে দুইয়ে চার ১৯৬৪, যে অরণ্যে আলো নেই ১৯৭৪, রোদজ্বলা বিকেল ১৯৭৪, সূর্যাস্তের পর ও নব মেঘদূত।

প্রবন্ধগুলো হলো : আমি বীরাঙ্গনা বলছি, শরৎ প্রতিভা।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো,  বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), জয় বাংলা পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার (১৯৮৭), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৮৯), বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী স্মৃতি পদক (১৯৯০), অনন্য সাহিত্য পদক (১৯৯৬), বেগম রোকেয়া পদক (১৯৯৬), বঙ্গবন্ধু পুরস্কার (১৯৯৭), শেরে বাংলা পুরস্কার (১৯৯৭), থিয়েটার সম্মাননা পদক (১৯৯৮), একুশে পদক (২০০০)।