ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৭:০৬:২৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নারী ও শিশুদের উন্নয়নে সফল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:১৪ পিএম, ২১ জুন ২০২০ রবিবার

নারী ও শিশুদের উন্নয়নে সফল বাংলাদেশ

নারী ও শিশুদের উন্নয়নে সফল বাংলাদেশ

নারী ও শিশুদের উন্নয়নে বাংলাদেশে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। তাদের জীবনযাত্রার মানেও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। হাতের কাছে স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানীর সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং সার্বজনীন শিক্ষার কারণেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, গত সাড়ে ১১ বছরে দেশে নারী ও শিশুদের জীবনের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। মূলত, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কারণেই এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শিশু এবং নারী উন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

করোনা মহামারীর এই দুর্যোগের সময়ে ৪৯৩ টি উপজেলার ৪,৫৬৯ টি ইউনিয়নের প্রায় ১০,৪০,০০০ জন দুস্থ এবং অসহায় নারীকে ভিজিডি প্রকল্পের আওয়তায় মাসিক ত্রিশ কেজি চাল সহায়তা দেয়া হচ্ছে ।

তিনি বলেন, আমরা তিন বছর মেয়াদী একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসেবে ৭,৭০,০০০ নারীকে প্রতি মাসে আটশত টাকা করে ভাতা দিচ্ছি। এটি সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের একটি উদ্যোগ। এবং এ উদ্যোগ দেশের গ্রামীণ নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে এসব ভাতা ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আরো বাড়িয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমাজ এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২০) নারীদের রাজনীতিতে ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। এবং এটি একটি ক্রস-কাটিং ইস্যু ও রুপান্তরের অন্যতম চালিকা শক্তি।

জানা যায়, ২০০১-২০০২ অর্থবছর হতে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর পর্যন্ত ভিজিডি প্রকল্পের আওতায় ৭১,৪০,০০০ ব্যক্তি সহায়তা পেয়েছেন। এছাড়া ২০০৭-২০০৮ অর্থবছর হতে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ২,৬৭,৫৬০ জন নারীকে প্রায় ১,৫৯১ কোটি টাকা মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া সরকার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মাসিক ছয়শত টাকা আর্থিক সহায়তা হিসেবে ২,৫০,০০০ জন মাতৃদুগ্ধ প্রদানকারী মায়েদের সহায়তা দিয়েছে। একজন উপকারভোগী তিন বছর পর্যন্ত এই সহায়তা এবং সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন।

বর্তমান সরকার ৬৪ টি জেলার ৪৮৮টি উপজেলায় নারীদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পও চালিয়ে আসছে। ২০০৩-২০০৪ অর্থবছর থেকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ১,২৯,৯৩৭ জন নারীকে এই ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে এবং এই সময়ে বরাদ্দ দেয়া হয় ৪৫ কোটি টাকা। ঋণ আদায়ের হার এখন পর্যন্ত ৭৭.৬০ শতাংশ।

সূত্র জানায়, বর্তমানে এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারী ও শিশুদের উন্নয়নে সারা দেশে ২৪টি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পগুলো হল- নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪র্থ পর্ব), এক্সিলারিটিং প্রোটেকশন ফর চিলড্রেন, স্ট্রেনদেনিং জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেটিং ইন বাংলাদেশ, ২১টি জেলার সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা প্রদান, ইনকাম জেনারেটিং এ্যাক্টিভিটিস অব ওমেন অ্যাট উপজেলা লেভেল, কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন, সোনাইমুড়ী, কালিগঞ্জ, আড়াই হাজার ও মঠবাড়িয়া উপজেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, সারাদেশে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, মিরপুর ও খিলগাঁও মহিলা হোস্টেল উর্দ্ধমূখী সম্প্রসারণ, এক্সিলারিটিং এ্যাকশন টু এন্ড চাইল্ড ম্যারেজ ইন বাংলাদেশ, এডভান্সম্যান্ট অব ওমেন্স অব রাইটস, নীলক্ষেত কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল সংলগ্ন নতুন দশ তলা ভবন নির্মাণ এবং বিদ্যমান হোস্টেল সমূহের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার, ন্যাশনাল রেজিলেন্স প্রোগ্রাম, নার্সিং বিষয়ে মহিলাদের জন্য ঢাকায় কমিউনিটি নার্সিং ডিগ্রী কলেজ হাসপাতাল স্থাপন, জেলা ভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা), অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যাক্তাদের বিকাশ সাধন (৩য় পর্যায়), নগর ভিত্তিক প্রান্তিক মহিলা উন্নয়ন (২য় পর্যায়), তথ্য আপা: ডিজটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়), শিশুর বিকাশে প্রারম্ভিক শিক্ষা (৩য় পর্যায়), জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ, জয়িতা ফাউন্ডেশেনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্প, ইনভেষ্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালরানেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এবং উপকূলীয় জনগোষ্টীর বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্প।

এদিকে আস্তেলা হাসান নামের এক নারী উদ্যোক্তা বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে এবং নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে এবং এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। ধারাবাহিক উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমডিজির অধিকাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আস্তেলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নারীদের আর্থ-সামাজিকসহ সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেই আজ নারীরা অনেকখানি এগিয়ে গেছে।

সূত্র : বাসস